Advertisement
Advertisement
অপুষ্টি

ভারতে প্রতি বছর অপুষ্টির বলি ৬৯% শিশু, চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট ইউনিসেফের

পুষ্টির অভাবে অধিকাংশ শিশুই নানা ধরনের জটিল রোগে ভোগে।

UNICEF Report says malnutrition causes 69% of children’s death in India
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:October 19, 2019 11:43 am
  • Updated:October 19, 2019 1:02 pm  

কোয়েল মুখোপাধ্যায়: ভারতে প্রতি বছর অপুষ্টির কারণে অন্তত ৬৯ শতাংশ শিশুর (বয়স পাঁচ বছরের নিচে) মৃত্যু হয়। ইউনিসেফের রিপোর্ট অন্তত সেটাই দাবি করছে। দাঁড়ান। শিউরে ওঠার মতো তথ‌্য এখনও শেষ হয়নি।

‘দ‌্য স্টেট অফ দ‌্য ওয়ার্ল্ডস চিলড্রেন, ২০১৯’ শীর্ষক রিপোর্টটি আরও জানাচ্ছে যে, দেশের মাত্র ২১ শতাংশ শিশুর খাদ‌্যতালিকায় বিবিধ এবং সুষম আহারের যথাযথ সমন্বয় মেলে। পুষ্টির অভাবে অধিকাংশ শিশুই নানা ধরনের জটিল রোগে ভোগে। আর সেই তালিকায় ‘বড়দের রোগ’ও রয়েছে। যেমন হাইপারটেনশন, কিডনির জটিল রোগ, মধুমেহ প্রভৃতি। তবে সেই নিরিখে বিচার করলে ভারতীয় মহিলাদের স্বাস্থ্যের ছবিটা আরও আরও খারাপ। কারণ, ইউনিসেফের রিপোর্ট বলছে, ভারতে প্রতি দু’জন মহিলার মধ্যে একজন রক্তাল্পতায় ভোগেন।

Advertisement

রিপোর্ট অনুযায়ী, পাঁচ বছরের কম বয়স যে শিশুদের, তাদের প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে একজনের শরীরে ভিটামিন এ’র ঘাটতি দেখা যায়। প্রতি তিনজন শিশুর মধ্যে একজনের শরীরে ভিটামিন বি১২-এর অভাব লক্ষিত হয়। প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে দু’জন ভোগে রক্তাল্পতায়। ‘মাইক্রো নিউট্রিয়েন্টস’-এর অভাবে রিকেট, রাতকানা, অন্ধত্বও থাবা বসায় শিশুদের শরীরে।

[আরও পড়ুন: বিধানসভা নির্বাচনে দুই রাজ্যেই গেরুয়া ঝড়! ইঙ্গিত নয়া সমীক্ষায়]

কিন্তু ঠিক কী কারণে হয় এই অপুষ্টি? বিশেষজ্ঞের মত কী বলছে?
বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের রামানন্দ কলেজের পুষ্টিবিদ‌্যার অধ‌্যাপিকা গার্গী বোসের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ‘‘এর নেপথ্যে এক নয়। রয়েছে একাধিক কারণ। প্রধানত যেটা দেখা যায়, তা হল ছয় থেকে আট মাস বয়সের পর শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির সমস‌্যা বাড়ে। এর থেকে মৃত্যুও হয়। এর প্রধান কারণ, ওই বয়সে মাতৃদুগ্ধ পান করার অভ‌্যাস ছাড়িয়ে শিশুকে তোলা খাবার দেওয়া হয়। কিন্তু বহুক্ষেত্রেই এই খাবার পরিমাণেও যথেষ্ট হয় না, আবার পুষ্টির নিরিখেও যথাযথ হয় না। কারণটা মূলত দারিদ্র‌্য ও অশিক্ষা ছাড়াও পুষ্টি এবং স্বাস্থ‌্য সংক্রান্ত সচেতনতার অভাব।

তবে এর পাশাপাশি অস্বাস্থ‌্যকর পরিবেশ, পরিষ্কার জলের অভাব, টীকাকরণ না করানো এবং তার জেরে সংক্রমণের শিকার হওয়াও সমান দায়ী। অর্থাৎ সব মিলিয়ে বলতে গেলে অপুষ্টি-অশিক্ষা-দারিদ্রের একটি দুষ্টচক্র কাজ করছে শিশুমৃত‌্যুর পিছনে। লক্ষ‌্য করলে দেখা যাবে, সমাজের যে অংশে দারিদ্র‌্য এবং অশিক্ষার হার বেশি, সেখানেই মহিলাদের বেশি অপুষ্টিতে ভুগতে দেখা যায়। এর কারণ কম বয়সে বিয়ে, কৈশোরকালীন মাতৃত্ব, একাধিকবার গর্ভবতী হওয়া প্রভৃতি। আর মা অপুষ্টিতে ভুগলে সন্তানের অপুষ্টিতে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা তো থেকেই যায়।’’

তাহলে উপায়?
গার্গীদেবীর মতে, ‘‘সবার আগে যেটা জরুরি, সেটা হল সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাস্থ‌্য এবং পুষ্টি সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। শিশুদের তোলা খাবার কেমন হতে পারে, তার সম‌্যক ধারণা দিতে হবে। বোঝাতে হবে যে, দামি কৌটোজাত খাবার না দিয়ে বাড়িতেই কীভাবে পুষ্টিকর খাবারের ব‌্যবস্থা করা যেতে পারে। যেমন চাল, গম, বাদাম, অঙ্কুরিত ডাল হালকা ‘রোস্ট’ করে গুঁড়িয়ে রাখার পর, সেটাকেই ‘পরিজ’-এর মতো খাওয়ানো যেতে পারে। এছাড়াও পরিষ্কার জলের ব‌্যবস্থা করা, হাত ধোওয়া, খাবার ঢেকে রাখা, টিকাকরণ করানো–প্রভৃতি সু-অভ‌্যাসও গড়ে তুলতে হবে। বহু চেষ্টার পর আমাদের দেশে আয়োডাইজড নুন খাওয়ার প্রয়োজনীয়তার বার্তা দেওয়া গিয়েছে। তার সুফলও দেখা যাচ্ছে। সেভাবেই আরও উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। আর দেখতে হবে, সমাজের সব স্তরের মানুষ যেন এসবের সুবিধা পায়। খাদ্যের অপচয় যেন বন্ধ হয়। তবেই অপুষ্টি রোধে কিছুটা হলেও সাফল‌্য আসবে।’’

[আরও পড়ুন: ‘ওঁর তত্ত্ব মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে’, নোবেলজয়ী অভিজিৎকে তোপ রেলমন্ত্রীর]

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement