সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “কাঁটা দিয়ে আঁটা ঘর – আঠা দিয়ে সেঁটে, সুতো দিয়ে বেঁধে রাখে থুতু দিয়ে চেটে।” বিহার রাজ্যে নীতীশ কুমারের সেতুর হালও অনেকটা সুকুমার রায়ের লেখা সেই ‘বুড়ির বাড়ির’ মতো। একদিকে গড়ছে তো অন্যদিকে ভাঙছে। এক প্রান্ত জোড়া-তালি দিয়ে সারানো হলেও ভেঙে পড়ছে অন্য প্রান্ত। এভাবেই গত ২ বছরে বিহারে ৩ বার ভেঙে পড়ল একই সেতু। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
কোটি কোটি টাকা খরচ করে গত ৯ বছর ধরে চলছিল বিহারের দুই জেলা ভাগলপুর ও খাগারিয়ার সংযোগকারী সেতু। প্রশাসনের তরফে জানা যাচ্ছে, খাগাড়িয়া থেকে সুলতানগঞ্জে যেতে অনেকখানি পথ ঘুরে যেতে হয়। সেই দূরত্ব কমিয়ে আনতে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সেতুর শিলান্যাস ও ২০১৫ সালে নির্মাণকাজ শুরু হয়। ৩.১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু নির্মাণে ১,৭১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করে সরকার। তবে ৯ বছর পার হয়ে গেলেও সেতুর কাজ অর্ধেকও এগোয়নি। এরইমাঝে শনিবার হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে সেতুটির একাংশ। এই নিয়ে গত ২ বছরে ৩ বার ভেঙে পড়ল সেতুটি।
अगुवानी सुल्तानगंज में गंगा पे निर्माणाधीन पुल फिर तीसरी बार गिरा ।पूरा system भ्रष्टाचार में लिप्त हैं ।मैं लगातार बोल रहा था कि फिर गिरेगा लेकिन आज तक किसी पे कोई कार्यवाही नहीं हुईं।ना अधिकारी पे ,ना एस.पी सिंघला कंपनी पे ,ना रोडिक कन्सल्टेंसी पे। @narendramodi @nitin_gadkari pic.twitter.com/HLnA3EkaXB
— Dr.Sanjeev Kumar MLA Parbatta,Bihar (@DrSanjeev0121) August 17, 2024
জানা গিয়েছে, ২০২২ সালে নির্মীয়মাণ অবস্থায় ভেঙে পড়েছিল সেতুটি। সেবার ভাগলপুরের দিকে সেটি ভেঙে পড়ে। জোর কদমে সরকার সেতু মেরামতের কাজ শুরু করলে ২০২৩ সালের জুন মাসে ফের একই ঘটনা ঘটে। এবার সেটি ভেঙে যায় খাগারিয়ার দিকে। পর পর দুইবার সেতু ভেঙে যাওয়ায় নির্মাণকারী সংস্থাকে জরিমানা করে বিহার সরকার। শুধু তাই-ই নয়, পুনর্নিমাণের খরচ ওই সংস্থাকেই বহন করতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে তাতে অবশ্য খুব বিশেষ কাজ হয়নি। শনিবার সেতুর এক বিরাট অংশ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল গঙ্গায়। স্বভাবিকভাবেই এই ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়ে বিহার সরকার। অভিযোগ উঠছে এই সেতু তৈরির নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে।
অবশ্য বিহারে রাজ্য ও সেতু বিপর্যয়, নীতীশ সরকারের আমলে কার্যত সমার্থক শব্দ হয়ে উঠেছে। গত কয়েক বছরে বিহারের একাধিক জায়গায় সেতু ভাঙার খবর প্রকাশ্যে এসেছে। প্রতিবারই অভিযোগ উঠেছে, সেতু নির্মাণে অত্যন্ত নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের। তবে শুধু ভাঙা নয়, সম্প্রতি বিহারের আরারিয়া জেলার রানিগঞ্জের একটি গ্রামে দেখা যায় মাঝ মাঠে হঠাৎ গজিয়ে উঠেছে একটি সেতু। প্রায় ৩৫ ফুটের এই সেতুটির কোনও রাস্তার সঙ্গেও যুক্ত নয়। একটি সরু খালের উপর গড়ে উঠেছে সেটি। দেখলে মনে হবে হঠাৎ যেন মাঠের মাঝখানে কিছু একটা নির্মাণ করা হয়েছে। প্রায় ৩ কোটির প্রকল্পে এমন ভুতুড়ে সেতু ব্যাপক বিতর্ক তৈরি করে। তারই এবার বিহারে ২ বছরে একই সেতু ৩ বার ভেঙে পড়ায় প্রশ্নের মুখে নীতীশ সরকার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.