সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মারা গিয়েছে অসমের উমানন্দ দ্বীপের একমাত্র সোনালি হনুমানটি। বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ থাকার পর শনিবার শেষবারের মতো চোখ বুজে প্রাণীটি। শিবরাত্রীর দিন এই ঘটনায় মন খারাপ দ্বীপের পূজারী, ভক্ত থেকে শুরু করে নৌকাচলকদের।
বনদপ্তর সূত্রে খবর, দ্বীপটিতে ভক্ত ও পর্যটকদের কাছে প্রধান আকর্ষণ ছিল ওই সোনালি হনুমানটি। আর সেটাই হয়ে দাঁড়ায় প্রাণীটির জন্য প্রাণঘাতী। ভালবেসে হনুমানটিকে প্রচুর কেক, বিস্কুট দিতেন পর্যটকরা। সে সব খেয়ে প্রাণীটির পরিপাক ক্রিয়ায় জটিলতা দেখা দেয়। মূলত, গাছের পাতা খেয়ে বেঁচে থাকে ‘গোল্ডেন লঙ্গুর’ বা সোনালি হনুমান। কিন্তু মানুষের দেওয়া খাবার দীর্ঘদিন হাতের কাছে পেয়ে গাছের পাতা খাওয়া প্রায় ছেড়েই দিয়েছিল উমানন্দের সোনালি হনুমানটি।
গুয়াহাটির কামাখ্যা মন্দিরে পুজোর পর উমানন্দে ভৈরবকেও পুজো করতে হয়। বহু বছর আগে উমানন্দে এক নেপালি দম্পতি এক জোড়া সোনালি হনুমান দান করেছিলেন। সেই থেকেই বংশবিস্তার করে তারা। অতি বিপন্ন প্রজাতির এই প্রাণীগুলির অন্যতম প্রধান আবাস হয়ে উঠেছিল উমানন্দ। তবে ব্রহ্মপুত্র নদের এই দ্বীপে সীমিত পরিসরে আবদ্ধ থাকা সোনালি হনুমানদের ঘিরে উদয় হয় বিভিন্ন সমস্যা। দ্রুত কমতে থাকে তাদের সংখ্যা। ২০১১ সালে দ্বীপ থেকে তিনটি হনুমানকে ধরে চিড়িয়াখানায় আনা হয়। কিন্তু দ্বীপে থাকা একটি সোনালি হনুমান কিছুতেই ধরা দেয়নি। দ্বীপের পুজারি ও অন্যরাও হনুমান ধরা নিয়ে আপত্তি জানান। ফলে সে থেকে যায় উমানন্দে।
পশু বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, একা থাকার ফলে রীতিমতো অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে উমানন্দের হনুমানটি। সঙ্গিনী না মেলায় ক্রমে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে সেটি। এর উপর দর্শনার্থীদের দেওয়া নানা ভাজাভুজি খাবার খেত সেটি। সব মিলিয়ে দ্রুত প্রাণীটির শরীর ভেঙে পড়েছিল। এদিকে, সোনালি হনুমানটির মৃত্যুতে রীতিমতো শোকের ছায়া পড়েছে দ্বীপটির বাসিন্দাদের মধ্যে। বন্য হলেও দর্শনার্থীদের সঙ্গে বন্ধুর মতোই সম্পর্ক ছিল সেটির। বহুবার পর্যটকদের ক্যামেরার জন্য রীতিমতো কায়দা করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল হনুমানটিকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.