ছবি: প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশের সমৃদ্ধ রাজ্যগুলির মধ্যে অন্যতম গুজরাট (Gujarat)। আর সেই রাজ্যের সুরাট শহরেই সোনাদানার খোঁজে নর্দমায় নেমে প্রাণ হারালেন দুই ব্যক্তি। এ যেন ‘ইন্ডিয়া’ ও ‘ভারতে’র সেই চিরাচরিত বিভাজন।
হীরক ব্যবসায়ীদের শহর হিসেবে খ্যাত সুরাট। বিশ্বের ‘ডায়মন্ড ক্যাপিট্যাল’ হিসেবে পরিচিত শহরটিতে প্রাচুর্যের বহর চোখ ধাঁধানো। কিন্তু একইসঙ্গে, প্রদীপের তলায় অন্ধকারের মতো শহরটির বস্তিতে দারিদ্রের নগ্ন নাচও দেখা যায়। এহেন শহরে এবার সোনার গুঁড়ো ও হীরের টুকরোর সন্ধানে মুখ ঢাকা নর্দমায় নেমে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে দুই ব্যক্তির। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার। নর্দমা থেকে ওই দুই ব্যক্তিকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
সুরাট দমকল বিভাগের চিফ ফায়ার অফিসার দীপক মাখিজানি বলেন, “এই ঘটনার বিষয়ে আমাদের স্থানীয়রা খবর দেন। তারপরই বৃহস্পতিবার ভোর ৩.৪৫ নাগাদ আমরা ঘটনাস্থলে যাই। নর্দমার প্রায় ১০ থেকে ১৫ ফুট ভিতরে দুই ব্যক্তির অচৈতন্য দেহ পাওয়া যায়।” তিনি আরও জানান, “তাঁদের শরীরে কোনও ধরনের প্রোটেকটিভ স্যুট ছিল না। ফলে শ্বাস নেওয়ার সময় তাঁদের ফুসফুসে বিষাক্ত মিথেন ও কার্বন মনোঅক্সাইড গ্যাস চলে যায়।” তিনি আরও জানান, এখনও পর্যন্ত দুই ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি।
স্থানীয়দের দাবি, তাঁরা সোনার গুঁড়ো ও হীরের টুকরোর খোঁজে মুখবন্ধ নর্দমায় নেমেছিল। বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, অভাব ও খিদের জ্বালা মেটাতে এই কাজ অনেকেই করে থাকে। সুরাটে বহু অলঙ্কারের দোকান আছে। সেখান থেকে সোনার গুঁড়ো জলের সঙ্গে নর্দমায় ভেসে যায় বলে ধারণা। সেই লোভেই অনেকে প্রাণ হাতে নিয়ে এহেন কাজ করে অনেকে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে তওৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের গুজরাট সফরকালে বিতর্ক দেখা দেয়। অভিযোগ ওঠে দারিদ্র ঢাকতে আহমেদাবাদের ঝুপড়ির পাশে চার ফুট উঁচু পাঁচিল তৈরি করে গুজরাট প্রশাসন। সেবার ট্রাম্পের সফরের কথা মাথায় রেখে শহরের মাঝ বরাবর আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে সর্দার প্যাটেল মোটেরা স্টেডিয়াম পর্যন্ত রাস্তা মেরামত করা হয়। সেই সঙ্গেই এই রাস্তার ধারে যে বিস্তির্ণ অঞ্চলজুড়ে থাকা বসতিটি ঢাকতে আধ কিলোমিটার রাস্তায় তৈরি করা হয় চার ফুট উঁচু কংক্রিটের দেওয়াল। এতে বেজায় চটে যান বসতিবাসী। গরিবি লুকোনার এমন কায়দার বিরুদ্ধে সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন নেটিজেনরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.