ফাইল ছিল
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিহারে ক্ষমতাসীন জোটের দুই শরিক জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ) এবং রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)-এর সম্পর্কে ক্রমেই জট বাঁধছে। বিশেষ করে, দিনদুয়েক আগে রাজীবরঞ্জন সিং ওরফে লালন সিংকে দলের সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার যেভাবে নিজে দলের রাশ নিজের হাতে নিয়েছেন, তার অন্তরালে লালনের সঙ্গে আরজেডির বাড়তে থাকা সখ্য একটি কারণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
তাদের মতে, বিহারে ফের রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। এই পরিস্থিতিতে আরজেডি নেতা তথা উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব তাঁর প্রস্তাবিত অস্ট্রেলিয়া সফর বাতিল করেছেন। তাঁর দল চাইছে না যে, রাজ্য-রাজনীতির এই অস্থির সময়ে দলের কোনও বড় নেতা দেশের বাইরে থাকুন।
গত শুক্রবারই জেডিইউ-র কার্যকর সমিতির বৈঠকে লালন সিং সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে, ওই পদে নীতীশ কুমারের নাম প্রস্তাব করেন। কমিটি লালনের ইস্তফা গ্রহণ করে নীতীশকে সভাপতি করার প্রস্তাব পাশ করে। বস্তুত, বিজেপি বিরোধী ইন্ডিয়া জোটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় নিজেকে রাখতে চাইছেন নীতীশ। সেই কারণে, তাঁর নিজের দলে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থাকুক, তা তিনি চান না। এই কারণে, দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতেই নীতীশ দলের শীর্ষপদটি নিজের হাতে নিয়েছেন বলে খবর। কারণ, এর পর ইন্ডিয়া জোটের শরিকদের বৈঠকে ’২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে আসন রফা নিয়ে আলোচনা শুরু হলে দলের হয়ে দরাদরির কাজটি তিনিই করবেন। এই ব্যাপারে তিনিই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
এই পরিস্থিতিতে পূর্বনির্ধারিত অস্ট্রেলিয়া সফর বাতিল করেছেন তেজস্বী। গত সপ্তাহে জমির বিনিময়ে চাকরি দুর্নীতি মামলায় তেজস্বীকে তলব করে সমন পাঠিয়েছে ইডি। তার আগের দিনই তেজস্বীর অস্ট্রেলিয়া সফরের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। আগামী ৬ জানুয়ারি তাঁর অস্ট্রেলিয়া রওনা হওয়ার কথা ছিল। আরজেডির এক নেতা জানিয়েছেন, দল চাইছে না যে, রাজ্য-রাজনীতিতে এই দোলাচলের সময় তাঁর মতো শীর্ষনেতা দেশের বাইরে থাকুন। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, ডিসেম্বরে অন্তত ছটি অনুষ্ঠানে নীতীশের সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করেননি তেজস্বী। এটা দুই শরিকদলের সম্পর্কের টানাটানির ইঙ্গিত। নীতীশ কুমার প্রায়ই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তেজস্বী যাদবের সমালোচনা করেছেন। তিনি বারবার তেজস্বীকে লক্ষ্য করে বলেছেন যে, তিনি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে রাজ্যে অপশাসন চলেছে। অরেক আরজেডি নেতার কথায়, জেডিইউ-র সভাপতি পদ থেকে লালন সিংকে সরিয়ে দেওয়া জেডিইউ এবং আরজেডির মধ্যে অবিশ্বাসের বাতাবরণ সৃষ্টি করেছে। যদিও দুই দলের নেতারা কেউই এটা প্রকাশ্যে আনতে চাইছেন না।
এক আরজেডি নেতা বলেন, “জানুয়ারি মাস দুই দলের জন্যই ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হতে চলেছে। আমরা চাই মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ (চারটি মন্ত্রক ফাঁকা রয়েছে) শিগগিরই হোক। আর পরে আমরা আশ্বস্ত হতে পারব যে, মহাগঠবন্ধন অক্ষত রয়েছে এবং আমরা এখনও সঠিক এবং ইতিবাচক মানসিকতার সঙ্গে লোকসভা নির্বাচনে যেতে পারি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.