সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যতক্ষণ না শশীকলা এবং তাঁর পরিবারকে দল থেকে বহিস্কার করা হবে না। ততক্ষণ এক হওয়া অসম্ভব। তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও পন্নিরসেলভমের এই দাবির ফলে ফের একবার দুই শিবিরের এক হওয়া নিয়ে উঠে গেল প্রশ্ন। শেষপর্যন্ত কী তাহলে দূরত্ব মিটিয়ে হাত মেলাতে চলেছে পন্নিরসেলভম এবং শশীকলা নটরাজন শিবির? সোমবার রাত থেকেই তামিলনাড়ু-সহ গোটা দেশে এই জল্পনা শুরু হয়েছিল। এআইএডিএমকের অন্দরেও এই নিয়েই আলোচনা চলছিল। বেশিরভাগেরই মত ছিল বিতর্ক এবং বিভেদ ভুলে ফের যেন এক হয়ে যায় এডিআইএমকে। কিন্তু পন্নিরসেলভমের এই দাবিতে সেই আশা আবারও বিশ বাঁও জলে।
এর আগে সোমবার তামিলনাড়ুর অর্থমন্ত্রী ডি জয়কুমারও দুই শিবিরের এক হয়ে যাওয়ার সংকেত দিয়েছিলেন। জানা গিয়েছিল, দুই শিবিরকে মেলানোর জন্য ১০ জনের একটি দল পন্নিরসেলভম শিবিরের সঙ্গে আলোচনায় বসবে। দলটিকে নেতৃত্ব দেবেন মুখ্যমন্ত্রী ই পালানিস্বামী। জয়কুমার বলেন, ‘দলের ১২৩ জন বিধায়ক এবং মন্ত্রীরা চাইছেন দু’টি শিবিরই ফের মিশে যাক। একসঙ্গে থাকলে দলের নির্বাচনী প্রতীক ফিরে পেতেও অসুবিধা হবে না।’ কিন্তু শেষপর্যন্ত বেঁকে বসেন পন্নিরসেলভম। তাঁর সাফ বক্তব্য, ‘দল কখনও কোনও পরিবারের হাতে থাকতে পারেনা। রামচন্দ্রণ এবং জয়ললিতা কখনই এটা করতে দিতেন না। তাই শশীকলা এবং তাঁর পরিবারকে সরতেই হবে। আম্মা যাঁদের বহিষ্কার করেছিলেন, শশীকলা তাঁদেরই ফিরিয়ে এনেছে। এদের দলে থাকার কোনও যোগ্যতাই নেই।’ এছাড়া ফের এদিন আম্মার মৃত্যুর সঠিক তদন্তেরও দাবি জানিয়েছেন তিনি। সেইসঙ্গে আম্মার চিকিৎসার যাবতীয় তথ্য সাধারণের সামনে প্রকাশ করার কথাও বলেন।
সূত্রের খবর, পালানিস্বামী শিবির চাইছে সমঝোতা হলে মুখ্যমন্ত্রী হবেন ই পালানিস্বামী এবং পন্নিরসেলভম এআইএডিএমকে প্রধান পদে বসবেন। পাশাপাশি শশীকলা এবং তাঁর বাড়ির লোকজনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। অপরদিকে, ‘ওপিএস’ শিবির চাইছে, মুখ্যমন্ত্রী এবং দলের প্রধান পদে বসতে দেওয়া হোক পন্নিরসেলভমকেই। ই পালানিস্বামীকে করা হোক উপ-মুখ্যমন্ত্রী। এখন দেখার শেষপর্যন্ত কার শিকেয় ছেঁড়ে?
জয়ললিতার মৃত্যুর পর থেকেই একের পর এক ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ছিল তামিলনাড়ুর ক্ষমতাসীন দল এআইএডিএমকে। ইতিমধ্যে দল থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পন্নিরসেলভম। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে দুর্নীতির জেরে জেলে যেতে হয়েছে শশীকলাকে। জেল থেকেই নিজের পছন্দের প্রার্থীকে মুখ্যমন্ত্রী পদে নিয়োগ করেন শশীকলা।এদিকে, জয়ললিতার কেন্দ্র আর কে নগরে উপনির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকদের ঘুষ দিয়ে পার্টির চিহ্ন কেনার অভিযোগ রয়েছে দলের ডেপুটি সাধারণ সম্পাদক টিটিভি দীনাকরণের বিরুদ্ধে। এছাড়া টাকা দিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগও রয়েছে তাঁর ওপর। ফলে নষ্ট হয় দলের ভাবমূর্তিও। এরপরেই দুই শিবিরই মীমাংসার কথা বলে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, দুই শিবিরে মিলিত হতে গেলে এখনও অনেকটাই কাঠখড় পোড়াতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.