তরুণকান্তি দাস: কালাপানির দেশে বেড়াতে গিয়ে বিপাকে বাঙালি। পুজোর আনন্দের আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা। একের পর এক দ্বীপে আটকে পর্যটকরা। মূল শহর পোর্টব্লেয়ার থেকেও কোনও দ্বীপে যাওয়া যাচ্ছে না। সরকারি এবং বেসরকারি প্রায় সমস্ত ভেসেল ও ক্রুজ পরিষেবা বন্ধে করুণ দশা পর্যটকদের। এর উপর আবার রবিবারের ভূমিকম্প ফিরিয়ে এনেছে সুনামির আতঙ্ক।
[শ্রীরামপুরে ফুটবলারের রহস্যমৃত্যু, ছড়াল চাঞ্চল্য]
নানা টালবাহানার পর, রবিবার চারটি ক্রুজ চললেও তার টিকিট ব্ল্যাক হয়েছে চারগুণ দামে। তাও সব টিকিট স্থানীয় এজেন্টদের পকেটে। এরই মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হাজার দু’য়েক পর্যটকের সঙ্গে, যাঁরা দিগলিপুর, নেইল ও হ্যাভলকে কোনওরকমে পা রেখেছিলেন। কিন্তু পরিবহণ সংকটে আর ফিরতে পারছেন না। এদিকে পোর্টব্লেয়ারে হোটেলগুলিতে এক একটি ঘরে ১০-১৫ জন রয়েছেন। কয়েকটি জায়গায় মোবাইল পরিষেবা বিচ্ছিন্ন। প্রতিদিনই স্থানীয় টুর অপারেটরদের সঙ্গে পর্যটকদের গন্ডগোল বাধছে। কয়েকজন পর্যটক প্রহৃত হয়েছেন। আবার নিগৃহীত টুর অপারেটররাও। পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি দিয়েছে দ্বীপপুঞ্জের পর্যটকদের সংগঠন। রবিবার আবার সেখানে ভূমিকম্প হয়েছে। যা ঘিরে আতঙ্কিত পর্যটকরা। তবে রিখটার স্কেলে তীব্রতা ছিল ৪.৭। ফলে সুনামির আশঙ্কা নেই। এতকিছুর পর এখানকার সাংসদ বিষ্ণুপদ মণ্ডল বলেছেন, “কোনও সমস্যা নেই।”
এরই মধ্যে পোর্টব্লেয়ারে দেখা দিয়েছে অন্য সমস্যা। সেখানে হোটেলে তিল ধারণের জায়গা নেই। বেশ কিছু হোটেলের লবি, কমন রুমে কোনওক্রমে রাত কাটছে অনেকের। একটি পর্যটন সংস্থার কর্তা সোমনাথ দে, যিনি এখন আন্দামানে রয়েছেন, তাঁকে রাতে ফোনে ধরা হলে বলেন, “আমার ৮০ জনকে রেখেছি ৮টি ঘরে। কী অবস্থা বোঝাতে পারব না।” আর একটি সংস্থার কর্তা রাত সাড়ে ৯টাতেও ঘর খুঁজে চলেছেন। বলেন, “আগাম বুকিং ছিল। কিন্তু যাঁরা আগে থেকে রয়েছেন, নির্ধারিত ভ্রমণ সূচি বানচাল হয়ে গিয়েছে, তাঁরা তো ঘর ছাড়ছেন না। ফলে আপাতত কোনওমতে মেঝেতে পাতিনু শয্যা।”
[সম্প্রীতির নজির, দশমী মেলার জন্য পিছিয়ে গেল মহরমের লাঠিখেলা]
দমদমের জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় রেলকর্মী স্ত্রী-সহ পরিবার নিয়ে গিয়েছেন বেড়াতে। তিনদিন কোনও যোগাযোগ নেই। অনেকের ফেরার বিমানের টিকিট ছিল রবিবার। কিন্তু অনেকেই তা ধরতে পারেননি। পর্যটকদের সংকট কাটাতে এয়ার ইন্ডিয়া বাড়তি বিমান চালানোর বিষয়ে বিবেচনা করছে। আজ সোমবার দিল্লিতে এ নিয়ে বৈঠক হতে পারে বলে খবর। গত সাতদিন পোর্টব্লেয়ারগামী কোনও বিমানের আসন ফাঁকা ছিল না। সেখানে পৌঁছে সবাই যখন সাদা বালি ও নীল জলের মায়ায় আচ্ছন্ন, বিদেশিরা যখন সানবাথ নেওয়ায় মগ্ন তখনই বিপদ এসেছে। যার সূত্রপাত জলপথ পরিবহণের লাইসেন্স নবীকরণ নিয়ে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.