সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই একদিকে উচ্ছ্বাস অন্যদিকে সমালোচনা। হিন্দুত্বের প্রচারক কোনও ব্যক্তি উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যের মসনদে বসছেন দেখে খুশি হয়েছেন বিজেপি ও সংঘ পরিবারের সমর্থকরা। কিন্তু পাশাপাশি চলছে নানা সমালোচনাও। কেননা অতীতে বেশ কিছু বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন যোগী আদিত্যনাথ।
[ শপথ যোগী আদিত্যনাথের, মন্ত্রিসভায় থাকছেন মুসলিম প্রতিনিধিও ]
কী কী সেই বিতর্কিত মন্তব্য?
১) দেশে বাড়তে থাকা অসহিষ্ণুতা নিয়ে মুখ খুলে যোগীর কোপে পড়েছিলেন শাহরুখ খান। আদিত্যনাথ সাফ জানিয়েছিলেন, মানুষ যদি শাহরুখের সিনেমা প্রত্যাখান করে, তাহলে কী হবে? শাহরুখ সন্ত্রাসীদের ভাষায় কথা বলেন। হাফিজ সইদ ও শাহরুখের বলা কথার মধ্যে কোনও ফারাক পাননি তিনি।
২) মাদার টেরেসা প্রসঙ্গে যোগীর বক্তব্য ছিল, হিন্দুদের খ্রিস্টান ধর্মে রূপান্তরিত করার চক্রান্তে শামিল ছিলেন মাদার। সেবার অছিলায় এই ধর্মান্তকরণ করা হত বলে অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি।
[ “একজনই মোদিকে হারাতে পারেন ২০১৯-এ” ]
৩) সংখ্যালঘু প্রসঙ্গে বলেছিলেন, উত্তরপ্রদেশের যেখানে ১০-২০ শতাংশ সংখ্যালঘু আছেন সেখানে অল্প সাম্প্রদায়িক গণ্ডগোল থাকে। ২০-৩৫ শতাংশ সংখ্যালঘু থাকলে অশান্তির মাত্রা বাড়ে। আর ৩৫ শতাংশের বেশি সংখ্যালঘু কোথাও থাকলে তো তারা ছাড়া আর কারওর জায়গাই হবে না। তাঁর মতে, কায়রানা বা কাশ্মীর সমস্যা কি বড় ব্যাপার নয়? দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের উপর অত্যাচার নামলে কোথাও কিছু বলা হয় না। শুধু সংখ্যালঘুদের ব্যাপারে পান থেকে চুন খসলেই ধুন্ধুমার লেগে যায়। তাঁর মোদ্দা বক্তব্য, যেখানেই ১০ শতাংশের বেশি মুসলিম বাস করে সেখানেই দাঙ্গা বাধে।
৪) যোগ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, সবথেকে বড় যোগী হলেন ভগবান শংকর। দেশের প্রতিটি বিন্দুতে মহাদেবের অস্তিত্ব রয়েছে। আর তাই যাঁরা যোগ মানতে চান না, মহাদেবকে অস্বীকার করেন, তাঁদের এ দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া উচিত।
[ শপথ যোগী আদিত্যনাথের, মন্ত্রিসভায় থাকছেন মুসলিম প্রতিনিধিও ]
৫) যোগী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, যদি একটি হিন্দু মেয়েকেও ইসলামে ধর্মান্তরিত করা হয়, তাহলে একশোটি মুসলিম মেয়েকে হিন্দু ধর্মে রূপান্তরিত করা হবে। তাঁর মতে, হিন্দু রমণীদের উপর যেরকম অত্যাচার হচ্ছে, তা কোনও সভ্য সমাজ মেনে নিতে পারে না।
৬) ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে তাঁর সাফ যুক্তি, দেশে কয়েক লক্ষ হিন্দু সন্ন্যাসী আছেন। কিন্তু ভাতা দেওয়ার কথা বলা হয় শুধু ইমামদের। তাঁর প্রশ্ন, এর নামই কি ধর্ম নিরপেক্ষতা?
৭) “আমরা কোনও সংখ্যালঘুকে মারতে চাই না। শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করতে চাই,” বলেছিলেন যোগী। কিন্তু তারপরই সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, সংখ্যালঘুরা যদি শান্তি না থাকতে চান, তাহলে হিন্দুরা সেই ভাষাতেই জবাব দেবে, যে ভাষা অশান্তি সৃষ্টিকারী সংখ্যালঘুরা বোঝে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.