সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিল্লির বুরারি কাণ্ডের ছায়া কর্ণাটকে। একই পরিবারের পাঁচজনের পচাগলা দেহ উদ্ধার হল সে রাজ্যের বাইয়াদারাহাল্লি এলাকায়। মৃতদের মধ্যে রয়েছে এক ন’মাসের শিশু। আড়াই বছরের এক শিশুকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে এই ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বাড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল চার সদস্যের দেহ। ন’মাসের শিশুর দেহ বিছানায় পড়ে ছিল বলে জানা গিয়েছে। মৃত ভারতীদেবী (৫১), তাঁর দুই মেয়ে সিঞ্চনা (৩৪), সিন্দুরানি (৩১) ও ছেলে মধুসাগর (২৫)। প্রত্যেকের দেহ আলাদা আলাদা ঘরে পাওয়া গিয়েছে। মধুসাগরের ঘরে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে ছিল আড়াই মাসের শিশু। তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শিশুটির শারীরিক অবস্থা উদ্বেগজনক বলে জানা গিয়েছে।
বাড়ির মালিকের নাম শংকর। গত কয়েকদিন ধরে তিনি বাড়িতে ছিলেন না বলে জানান। শুক্রবার রাতে ফেরেন শংকর। অনেক ডাকাডাকির পরও কারও সাড়া না পেয়ে প্রতিবেশীদের সাহায্যে দরজা ভেঙে বাড়িতে ঢোকেন। তারপরই স্ত্রী, ছেলে ও মেয়েদের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। এক দৃশ্য দেখার পর বাক্যহারা হয়ে যান শংকর। প্রতিবেশীরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। পাশাপাশি আড়াই বছরের শিশুকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে।
এখনও স্বাভাবিক মনস্থিতিতে নেই শংকর। তবে তিনি জানিয়েছেন, আড়াই বছরের শিশুর মা সিঞ্চনা। তাঁর দুই মেয়েই বিবাহিত। ছেলে ইঞ্জিনিয়ার। কিন্তু স্বামীর সঙ্গে অশান্তি করে দুই মেয়েই বাড়িতে এসে উঠেছিলেন। শংকর তাঁদের বাড়িতে ফেরাতে চেয়েছিলেন। তবে তাঁর স্ত্রী ভারতী তাতে রাজি ছিলেন না। সংসারে কোনও আর্থিক অনটন ছিল না বলেই দাবি করেন শংকর। জানান, তিনদিন আগে তিনি বাড়িতে ফোন করেছিলেন। কেইউ ফোন তোলেনি।
পুলিশের অনুমান, অন্তত পাঁচ দিন আগে প্রত্যেকের মৃত্যু হয়েছে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, ছেলে মধুসাগরের সঙ্গে শংকরের বচসা হয়েছিল। তার জেরেই তিনি বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। ইতিমধ্যেই শংকরকে এক প্রস্থ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। আবারও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে কর্ণাটকের এই ঘটনায় অনেকে দিল্লির বুরারি কাণ্ডের ছায়া দেখতে পাচ্ছেন। ২০১৮ সালের সেই ঘটনায় একই পরিবারের ১১ জন সদস্যের দেহ উদ্ধার হয়েছিল। সেই ঘটনাকে গণআত্মহত্যা হিসেবে ব্যাখ্যা করে তদন্ত চালিয়েছিল দিল্লি পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.