সাংবাদিক বৈঠকে হিমন্ত বিশ্বশর্মা
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংশোধিত নাগরিক আইন পাশ হওয়ার পর সর্বপ্রথম বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল অসমে। আস্তে আস্তে তা ছড়িয়ে পড়েছিল উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতেও। অসমে বিক্ষোভকারীরা এতটাই উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলেন যে তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে গুলি চালায় পুলিশ। এর ফলে তিনজনের মৃত্যু ঘটে। এছাড়া CAA বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে মৃত্যু হয় আরও দু’জনের। পরে বিক্ষোভের উত্তাপ আস্তে আস্তে কমে গেলেও নিজেদের দাবি থেকে একচুলও সরেনি অসমবাসী। গতকাল গুয়াহাটি-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে বিক্ষোভ দেখায় তারা। এতে অংশ নেওয়া মানুষের হাতে পোস্টারে লেখা ছিল, ‘পরিযায়ী নয় আমরা শান্তি চাই।’ এই পরিস্থিতিতে অসমের জমি আইনে ব্যাপক রদবদল করার পরিকল্পনা নিয়েছে সর্বানন্দ সোনোয়ালের সরকার। এর ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মালিকানাধীন জমি এবার থেকে একমাত্র ভূমিপুত্ররাই কিনতে পারবেন বলে জানিয়েছেন অসমের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। শনিবার এই বিষয়ে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
এপ্রসঙ্গে হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, ‘ইতিমধ্যেই নতুন জমি আইন তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এই আইন চালু হলে অসমের ভূমিপুত্ররাই একমাত্র স্থানীয় বাসিন্দাদের জমি কিনতে পারবেন। ১৯৪১, ৫১ বা ১৯৭১ সালের পরে এখানে এসেছেন এমন কোনও মানুষের পক্ষে তা সম্ভব হবে না। খোঁজখবর করে জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের নিকবর্তী বরপেটা ও ধুবুরি-সহ বেশ কয়েকটি জায়গার বাসিন্দারা জীবনধারণের জন্য অন্য জায়গা কাজ করতে যান। এদের মধ্যে কেউ কেউ অনেক সময় কর্মস্থলের কাছেই নতুন বাড়ি তৈরি করেন। আর পুরনো বাড়িটি অন্য কাউকে বিক্রি করে দেন। এর ফলে রাজ্যে বাইরের মানুষের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছিল। কিন্তু, নতুন আইন কার্যকর হলে সেই কাজ আর করা যাবে না। জমি বিক্রি করতে গেলে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছেই করতে হবে। বিধানসভার আগামী অধিবেশনেই এই বিলটি পাশ করানোর চেষ্টা চলছে।’
গতকালের বৈঠকে জমি আইন ছাড়াও রাজ্যের প্রধান ভাষা হিসেবে অসমিয়াকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। পরে এপ্রসঙ্গে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী জানান, বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের কাছ দরবার করা হবে। তাদের কাছে আবেদন করা হবে সংবিধানের ৩৪৫ ধারা সংশোধন করে বরাক উপত্যকা, বোড়োল্যান্ড ও রাজ্যের পার্বত্য জেলাগুলি বাদে অন্য অংশে অসমিয়াকে রাজ্যের সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার। বিধানসভার আগামী অধিবেশনে রাজ্যের সরকারি ও বেসরকারি সমস্ত স্কুলগুলিতে অসমিয়াকে বাধ্যতামূলক করার জন্যও বিল পেশ হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.