ফাইল ফটো
অর্ণব আইচ: পাখির নজর শত্রুর দিকে। পাকিস্তান বা চিনের সীমান্তে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে ‘ধনুষ’ ও ‘ষড়ঙ্গ’। ভারতের মাটিতে দাঁড়িয়ে শত্রু শিবিরের দিকে তাক করা থাকবে নল। ৪৭ কিলোমিটার দূরে ছুটে যাবে গোলা। ধ্বংস করে দেবে শত্রু শিবির। একই সঙ্গে তৈরি হচ্ছে যন্ত্রচালিত ‘যুদ্ধ গাড়ি’, যা সহজেই ঢুকে পড়বে শত্রুদের চক্রব্যূহে।
কিন্তু, ৪৫ থেকে ৪৭ কিলোমিটার দূরের ‘টার্গেট’ ধ্বংস করা সেনাবাহিনীর পক্ষে নেহাত মুখের কথা নয়। কামানের নলের দৈর্ঘ্য যত বেশি, ততটা দূরে ছিটকে পড়বে কামানের গোলা। তাই এবার ‘ষড়ঙ্গ’-এর ৫২ ক্যালিবারের কামান থেকে ১৫৫ মিলিমিটার গোলা ছুটে যাবে শত্রুর দিকে। একেবারে আধুনিক এই ৫২ ক্যালিবারের কামান তৈরির উপরই এবার নজর দিয়েছে দেশের অস্ত্র কারখানা। মঙ্গলবার অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডের (OFB) চেয়ারম্যান হরি মোহন জানান, এই ৫২ ক্যালিবারের কামানের নল বিশেষ পছন্দ বিদেশি সেনাবাহিনীরও। বফর্স সংস্থা এই নলটি কেনার বরাত দিয়েছে। একই সঙ্গে বরাত দিয়েছে ‘মাজল ব্রেক’-সহ অন্য যন্ত্রেরও। এ ছাড়াও রপ্তানি হচ্ছে গোলাও। গত বছরেই ৪৫০ কোটি টাকার গোলা বিক্রি হয়েছিল। আগামী দু’বছরে এই পরিমাণ গিয়ে দাঁড়াতে পারে ৫০০ কোটি টাকা।
OFB সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারতীয় সেনাবাহিনীকে মোট ১১৪টি ধনুষ ও ৩০০টি ষড়ঙ্গ কামান সরবরাহ করা হবে। এর মধ্যে ধনুষের গোলা ৩৮ কিলোমিটার দূরে গিয়ে ‘টার্গেট’কে আঘাত করতে পারে। এই কামান ইতিমধ্যেই ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া শুরু হয়েছে। আগামী ৬ মাসে আরও ৬টি ধনুষ তুলে দেওয়া হবে। এই কামান পাকিস্তান ও চিনের সীমান্তেই রাখা হচ্ছে। তবে ৫২ ক্যালিবারের ১১৫ মিমি কামান আরও আধুনিক। এর নল বড় হওয়ার কারণে ৪৫ থেকে ৪৭ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত ছুটে যেতে পারে গোলা। গত আট বছর ধরে ধীরে ধীরে তৈরি হচ্ছে এই কামান। এই কামানটি একটি বিশেষ ট্রাকের উপর তোলা হবে। সেই গাড়িও তৈরি হয়েছে। এখনও পর্যন্ত পরীক্ষামূলভাবে এই কামান থেকে ১৫ রাউন্ড গোলা ছোঁড়া হয়েছে। এবং সেই পরীক্ষা সফলও হয়েছে। তবে আরও কিছু কাজ বাকি রয়ে গিয়েছে। তা শেষ হলেই এটি তুলে দেওয়া শুরু হবে সেনাবাহিনীর হাতে।
এদিকে, একই সঙ্গে ওএফবি তৈরি করতে শুরু করেছে ‘ফিউচাররিস্টিক ইনফ্যানট্রি কমব্যাট ভেহিক্যাল(FICB)’। সেনাবাহিনীর এই ‘যুদ্ধ গাড়ি’ সুসজ্জিত হবে মিসাইল দিয়ে। এতে কোনও সেনাকর্মী থাকারও প্রয়োজন হবে না। দূর থেকে চালিত এই গাড়ি সার বেঁধে ঢুকে পড়বে শত্রুব্যূহে। এই গাড়ি যেমন মিসাইল বা গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে এগোতে পারবে, তেমনই শত্রুর আক্রমণে হঠাৎই কিছু হবে না গাড়ির। যন্ত্রচালিত বলে ক্ষতি হবে না বাহিনীরও। এর ‘মার্ক ওয়ান’ দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে তৈরি হয়ে যাবে। ‘মার্ক টু’ তৈরি হতে আরও কয়েক বছর সময় লাগবে। একই সঙ্গে অত্যাধুনিক অ্যাসল্ট রাইফেল তৈরির কাজও চলছে বলে জানিয়েছে অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.