সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রয়াত দেশের প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার তিরুনেল্লাই নারায়ণ শেষন। রবিবার রাত ৯.৪৫ মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চেন্নাইয়ে নিজের বাসভবনে মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। টুইট করে শেষনের মৃত্যুর খবর জানান অপর প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এস ওয়াই কুরেশি।
শেষনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কংগ্রেস নেতা শশী থারুর-সহ আরও অনেকে। প্রধানমন্ত্রী টুইটে লিখেছেন, ‘‘নির্বাচন ব্যবস্থায় যে সংস্কার শ্রী টি এন শেষন এনেছিলেন, তাতে দেশের গণতন্ত্রের ভিত আরও মজবুত হয়েছিল। শেষনের মৃত্যুতে আমি শোকাহত।’’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের টুইটারে লেখেন, ‘‘টি এন শেষনের মৃত্যুতে আমি মর্মাহত। অবাধ এবং সুষ্ঠু ভোট করানোয় আক্ষরিক অর্থেই কিংবদন্তি ছিলেন শেষন। ভারতীয় গণতন্ত্রে তাঁর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁর পরিবারকে সমবেদনা জানাই।’’
দশম মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হিসাবে দেশের ভোট ব্যবস্থায় বিরাট পরিবর্তন এনেছিলেন টি এন শেষন। যাতে দেশবাসী স্বচ্ছভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্র তাঁরই অবদান। কিন্তু ভোট ব্যবস্থাকে নিরপেক্ষ, অবাধ করতে গিয়ে সমস্ত রাজনৈতিক দলের চক্ষুশূল হতে হয়েছিল তাঁকে। শিকার হতে হয়েছিল কটাক্ষের। তবু দমেননি তিনি। দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন নিজের সিদ্ধান্তে, নিজের কাজে। সবচেয়ে বড় কথা, তাঁর সময়ই (১৯৯০-১৯৯৬) মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের পদটির গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিলেন সাধারণ মানুষ।
১৯৩২ সালে কেরলের পালাক্কড়ে জন্ম শেষনের। পদার্থবিদ্যায় স্নাতক শেষন মাদ্রাজ ক্রিশ্চিয়ান কলেজে শিক্ষকতাও করেছেন। ফেলোশিপও করেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে। ১৯৫৫ ব্যাচের তামিলনাড়ু ক্যাডারের আইএএস, শেষন ১৯৮৯ সালে ক্যাবিনেট সচিব হন। ১৯৯০-র ১২ ডিসেম্বর থেকে ১৯৯৬-র ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সরকারি আমলা হিসাবে নিজের কর্তব্যপরায়ণতার জন্য ১৯৯৬ সালে রমন ম্যাগসাইসাই (যা এশিয়ার নোবেল নামে খ্যাত) পুরস্কার পান শেষন। পরে রাজনীতিতেও পা রাখেন। লালকৃষ্ণ আদবানির বিরুদ্ধে গান্ধীনগর কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও প্রার্থী হয়েছিলেন। এহেন শেষনই একবার বির্তকে জড়িয়ে পড়েছিলেন। তাঁর দাবি ছিল, রাজীব গান্ধী হত্যায় ইজরায়েলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের হাত আছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর পদ পেলে প্রমাণ দেবেন। সরকার শর্ত মানেনি। তদন্ত কমিশনের ডাকে গেলেও প্রমাণ দেননি।
Shri TN Seshan was an outstanding civil servant. He served India with utmost diligence and integrity. His efforts towards electoral reforms have made our democracy stronger and more participative. Pained by his demise. Om Shanti.
— Narendra Modi (@narendramodi) November 10, 2019
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.