সন্দীপ চক্রবর্তী: তৃণমূলের ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের (Prashant Kishor) টিমকে ত্রিপুরায় (Tripura) হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে। সে রাজ্যের পুলিশের এহেন আচরণের নিন্দায় সোমবারই সরব হয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার হেনস্তার প্রতিবাদে ত্রিপুরায় বিক্ষোভ শুরু করল স্থানীয় তৃণমূল (TMC) নেতৃত্ব।
এদিন সকালে উত্তর ত্রিপুরায় যুবরাজ নগরে প্রতিবাদ মিছিল করে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন অন্তত শ-তিনেক তৃণমূল কর্মী। তাঁদের অভিযোগ, “ত্রিপুরায় গণতন্ত্রকে হত্যা করা হচ্ছে। কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না।” পাশাপাশি পেট্রল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদও করা হয় এদিন। যুবরাজ নগর বিধানসভার রামনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় মিছিল করেন তৃণমূল কর্মীরা।
গত এক সপ্তাহ ধরে আগরতলা-সহ গোটা রাজ্যে আইপ্যাকের টিম তৃণমূলের হয়ে জনমত সমীক্ষা চালাচ্ছে। অভিযোগ, তাঁদের পরিচয় জানতে রবিবার রাত একটা থেকে হোটেলে আটক করে রাখা হয়েছে। পরিচয় জানার নামে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ প্রসঙ্গে ত্রিপুরার তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি আশিসলাল সিং জানান, “রুটিন জিজ্ঞাসাবাদের নামে পিকের টিমের সদস্যদের আটকে রাখা হয়েছে। ওঁরা শুধু তৃণমূল নয় সমস্ত দলের সঙ্গেই কথা বলছিল। আসলে বিজেপি সবকিছুর মধ্যে ভূত দেখছে।” তাঁর কথায়, “এটা গণতান্ত্রিক কাঠামোয় কুঠারাঘাত। একজন ত্রিপুরাবাসী হিসেবে আমি লজ্জিত।” এর পরই এদিন বিক্ষোভ মিছিল করেন তৃণমূল কর্মীরা।
যদিও ত্রিপুরার পুলিশ সুপার মানিকলাল দাসের সাফাই, “আমরা খবর পাই কোভিড পরিস্থিতিতে শহরের একটি হোটেলে ২০-২২ জন বহিরাগত এসে রয়েছেন। বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাই কোভিডবিধি ও নিরাপত্তার কথা ভেবে ওঁদের ওখানে রাখা হয়েছে। তবে গ্রেপ্তার করা হয়নি কাউকে। কোভিডবিধি মেনে করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে ওঁদের।”
তৃণমূলের (TMC) এবারের পাখির চোখ ত্রিপুরা। সেখানে দলের সংগঠন মজবুত করার চেষ্টা চালাচ্ছে ঘাসফুল শিবির। একুশে জুলাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা শোনানো হয় ত্রিপুরায়। আর এই সংগঠন বৃদ্ধির দায়িত্ব বর্তেছে পিকের টিমের উপর। ত্রিপুরায় ঘাসফুল ফোটাতে ২০২৩ সাল পর্যন্ত পিকের সঙ্গে তৃণমূলের চুক্তি হয়েছে। উল্লেখ্য, ২১ জুলাই কৈলাস নগরে জমায়েত করেছিলেন তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা আশিসলাল সিনহা-সহ অন্যান্য নেতারা। ওই দিন তৃণমূল সুপ্রিমোর বার্তা শোনানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেই সময় বিজেপি কর্মীরা তাঁদের উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। এমনকী, ৮২ জন তৃণমূল নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে ত্রিপুরার পুলিশ। এর পর ফের একবার তৃণমূলের ভোট টিমকে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠল। মাঠে নেমে ২১ জুলাইয়ের হেনস্তার প্রতিবাদ না করা হলেও, এবার আইপ্যাকের টিমকে আটকে রাখার প্রতিবাদে মাঠে নেমে প্রতিবাদ শুরু করলেন ত্রিপুরার তৃণমূল কর্মীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.