মণিশংকর চৌধুরি, শিলচর: অসমে ঢুকতে গিয়েই বাধার মুখে পড়ল তৃণমূলের আট সদস্যের প্রতিনিধি দল। শিলচর বিমানবন্দরের মধ্যেই আটকে দেওয়া হল তাঁদের। নিরাপত্তার কারণেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে।
এনআরসি-র চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশ হওয়ার পরই তার বিরোধিতা করেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লিতে গিয়েও এ নিয়ে ঝড় তুলেছেন তিনি। তাঁর সাফ কথা, অসমে লক্ষ লক্ষ মানুষ গৃহহারা হলে তার প্রভাব পড়বে বাংলাতেও। তাই তাঁর উদ্বেগের কারণ আছে। তিনি জানিয়েছিলেন, তৃণমূলের প্রতিনিধি দল অসমে যাবে, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবে। গৃহহারা মানুষরা যাতে হেনস্তার শিকার না হন, তা নিয়ে কথা বলবেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। কথামতো বৃহস্পতিবার সুখেন্দুশেখর রায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার-সহ আট সদস্যের প্রতিনিধি দল অসমের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। কিন্তু শিলচর বিমানবন্দরেই আটকে দেওয়া হল তাঁদের। জানানো হচ্ছে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা যাতে বিঘ্নিত না হয়, সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত।
[ ছিল ভূমিপুত্র হল বাংলাদেশি, এনআরসি কেবল ভুলে ভরা! ]
এনআরসি নিয়ে মমতা উদ্বেগ প্রকাশ করলেও, তাঁর ভূমিকা মোটেও ভাল চোখে দেখছে না অসম প্রশাসন। তৃণমূলের প্রতিনিধি দল অসম যাচ্ছে শুনেই বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছিল। একাধিক ছাত্র সংগঠন আপত্তি জানিয়েছিল। বিক্ষোভ ও প্রতিবাদের মুথে যে প্রতিনিধি দলকে পড়তে হবে তা একরকম স্পষ্টই ছিল। তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে বহিরাগত হস্তক্ষেপ হিসেবেই দেখছে অসমে সর্বানন্দ সোনওয়ালের সরকার। সূত্রের খবর, অসমে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল যাচ্ছে শুনেই, গতকাল জরুরি বৈঠক ডাকা হয়। রাজ্যের নিরাপত্তার স্বার্থে কী করা হবে তা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আজ শিলচর বিমানবন্দরে কাকলিরা পৌঁছাতেই নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে আটকে দেওয়া হল। যদিও তা মানতে নারাজ তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। অসমে বাঙালি খেদাও চলছে বলে আগেই দলের তরফে অভিযোগ আনা হয়েছিল। সে কারণেই এই গোপনীয়তা ও তাঁদের আটকানোর উদ্যোগ বলে তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ। জানা যাচ্ছে, বিমানবন্দরে অবস্থানে বসেই এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তৃণমূল নেতারা। সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের অভিযোগ, শয়ে শয়ে পুলিশ তাঁদের ঘিরে ধরেছে, অমনকী মারধর পর্যন্তও করা হচ্ছে। নির্মম অত্যাচারের অভিযোগ তুলে সরব নেতা-নেত্রীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.