নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: উত্তরবঙ্গের চা বাগানে শ্রমিকদের মজুরি দিতে বিলম্ব হওয়ার অভিযোগ গত সপ্তাহেই সংসদে স্বীকার করে নিয়েছিল কেন্দ্র। এবার উঠল চা শ্রমিকদের সন্তানদের স্কুল বাস পরিষেবা বন্ধ থাকার অভিযোগ। রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রক কার্যত মেনে নিল পরিষেবা বন্ধ রয়েছে বানারহাট ও কারবালা চা বাগানে। সেই সঙ্গেই কেন্দ্রের দাবি, বাসের পরিবর্তে স্কুল পড়ুয়াদের জন্য ‘লাইট কমার্শিয়াল ভেহিকল’ রয়েছে। কিন্তু তৃণমূলের অভিযোগ, চা পাতা তোলার ট্রাক, লরি, ট্র্যাক্টরে ছোট ছেলেমেয়েরা কার্যতই জীবন হাতে নিয়ে স্কুলে যাতায়াত করে।
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ঋতব্রত বলেন, ”এই উত্তর দেখে আমরা হকচকিত। আজকের প্রশ্ন দু’টো বাগান নিয়ে ছিল। বানারহাট ও কারবালা। এই বাগানগুলিতে দীর্ঘ সময় ধরে কোনও স্কুলবাস নেই। অথচ বাগান যারা চালাবেন, সেই ম্যানেজমেন্টের এটা দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তাই এই বিষয়ে আমরা জানতে চেয়েছিলাম। যার জবাবে বলা হয়েছে লাইট কমার্শিয়াল ভেহিকলের কথা। চা পাতা তোলার ট্রাক, লরি, ট্র্যাক্টর… বাঁশ বাঁধা অনেক জায়গায়… এভাবে ছেলেমেয়েদের স্কুল থেকে দেওয়া নেওয়া করানো হয়। এমন উত্তর পাওয়ার পর তৃণমূল শ্রমিক চা ইউনিয়নের নেতা সঞ্জয় কুজুর সঙ্গে চা বাগানগুলিতে যান। আমরা তাঁকে বলি, স্কুল ছুটির পরের ফুটেজ দরকার। আমরা ভিডিও পেয়েছি কীভাবে ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাওয়া আসা করছে। কোনও বাস নেই!” এই বিষয়ে তৃণমূল যে ইতিমধ্যেই বৈঠক করেছে সেকথা জানিয়ে ঋতব্রত বলেছেন, শনিবার সকাল সাতটার সময় বানারহাট চা বাগানেও বৈঠক হবে।
সেই সঙ্গেই ঋতব্রত জানিয়েছেন, রাজ্যের কোনও চা বাগানই রাজ্য সরকারের মালিকানাধীন নয়। তবু আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ির বাগানগুলিতে বাস দেওয়া হচ্ছে না জানার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে একাধিক রুটে স্কুলবাস দেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জিতিন প্রসাদ স্বীকার করে নেন যে, কেন্দ্রের অধীনস্থ অ্যান্ড্রু ইউল অ্যান্ড কোম্পানির চা বিভাগের আর্থিক সংকটের কারণে মজুরি দেওয়ার ক্ষেত্রে ৫ থেকে ৬ সপ্তাহ বিলম্ব হয়েছে। এবার সামনে এল চা শ্রমিকদের সন্তানদের স্কুল বাস পরিষেবা বন্ধ থাকার বিষয়টি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.