কিংশুক প্রামাণিক, শিলং: তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র সাকেত গোখলের (Saket Gokhale) গ্রেপ্তারি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছিল জাতীয় রাজনীতিতে। গত সপ্তাহে গুজরাট (Gujarat)ভোটের ঠিক পরপর জয়পুর বিমানবন্দর থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে আহমেদাবাদ নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় ফুঁসে উঠেছিল তৃণমূল। পরে অবশ্য তিনি জামিনে মুক্ত হন। এই ইস্য়ু যে ভবিষ্যতে তৃণমূলকে (TMC) লড়াইয়ের একটা অস্ত্র জোগাবে, তা বোঝা গিয়েছিল। মঙ্গলবার শিলংয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মী সম্মেলনে মঞ্চে দেখা গেল সাকেত গোখলেকে। তাঁকে মঞ্চে এনে মমতা বললেন, ”নেতা হতে হলে, এরকমই হতে হবে। ধৈর্য থাকতে হবে, সহ্য করতে হবে।” দলীয় নেতাদের প্রতি তাঁর এই বার্তাতেই স্পষ্ট, জাতীয় স্তরে আরও লড়াকু মানসিকতার কথা বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
গুজরাটের মোরবি সেতু ভাঙা নিয়ে বিতর্কিত টুইটের জেরে ৫ ডিসেম্বর মধ্যরাতে তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র সাকেত গোখলেকে গ্রেপ্তার করেছিল গুজরাট পুলিশ। একটি RTI-এর কপি সম্বলিত টুইট শেয়ার করে সাকেত দাবি করেছিলেন, মোরবির সেতুভঙ্গের পর মোদির গুজরাট সফরে খরচ হয়েছে ৩১ কোটি টাকা। কিন্তু এই তথ্যকে ভুয়ো বলে দাবি করে গুজরাট পুলিশ। বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয় তৃণমূল মুখপাত্রকে। কিন্তু আদালতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জামিন পেয়ে যান সাকেত। ছাড়া পাওয়ার পর ফের তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় অন্য একটি মামলায়। এবারও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জামিন পেয়ে যান সাকেত। এরপরই তাঁকে আদর্শ নেতা হিসেবে সকলের সামনে আনলেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
এদিন শিলংয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরির কর্মী সম্মেলনে বস্তুত ফেব্রুয়ারিতে মেঘালয় বিধানসভা ভোটের (Assembly Election) প্রচার শুরু করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় তৃণমূল সরকারের নানা উন্নয়নমূলক কাজের কথা উল্লেখ করে মেঘালয়কেও উন্নয়নের শিখরে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন। মেঘালয়ের ভোটে জিতলে বাংলার মতো ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ চালু করার কথা বলেছিলেন সোমবারই। আর মঙ্গলবার বললেন ‘স্বাস্থ্যসাথী’র কথা। তৃণমূল নেত্রীর কথায়, ”পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়ন অতুলনীয়। মেঘালয়েও আমরা সব উন্নয়নমূলক প্রকল্প চালু করব। স্বাস্থ্যসাথীতে বাংলার মানুষজনের খুব উপকার হয়েছে। এখানে আমরা ভোটে জিতলে তা চালু হবে। আপনারাও সহজে ভাল চিকিৎসা পরিষেবা পাবেন।” এ প্রসঙ্গে উত্তর-পূর্বের নারীতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করেন তিনি। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, নারীতান্ত্রিক সমাজই এক্ষেত্রে তাঁর হাতিয়ার।
এরপর তিনি বিজেপি বিঁধে বলেন, ”ভোট এলে বিজেপি আসে টাকা ছড়াতে। কেন সারাবছর কোনও কাজ করে না? শুধু ভোটের সময়েই মনে পড়ে? আমি বলছি, বিজেপি ছড়ানো টাকা নেবেন না। বলা হয়, ডবল ইঞ্জিন সরকার। তাহলে মেঘালয়কে কেন অবহেলা করছে কেন্দ্র? এখানে তো বিজেপির সহযোগীরাই সরকারে আছে। আমি বলছি, মেঘালয়ে পরিবর্তন আসন্ন, নতুন সূর্য উঠবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.