ফাইল ছবি।
নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: তৃণমূলের হাতিয়ার নিজেদের শক্তিই। দলের সংগঠন বৃদ্ধিই ঘাসফুল শিবিরের প্রধান লক্ষ্য। সেক্ষেত্রে কংগ্রেসের সঙ্গে তাদের জোট হোক বা না হোক, সেটা কোনও বিষয় নয়। তৃণমূলকে নিজের মতো করে দলীয় সংগঠন বাড়াতে হবে। মঙ্গলবার দিল্লিতে এই বার্তা দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)।
তৃতীয়বার বাংলার ক্ষমতায় ফেরার পরে সর্বভারতীয়স্তরে সংগঠন বৃদ্ধি করছে তৃণমূল (TMC)। তার পর থেকেই কংগ্রেসের সঙ্গে ক্রমশ দূরত্ব বাড়ছে ঘাসফুল শিবিরের। বারবার একাধিক ইস্যুতে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূল। এমনকী, দলীয় মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’তেও রাহুল গান্ধীরও সমালোচনা করা হয়েছে। মুম্বই সফরে গিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, “এখন ইউপিএ বলে কিছু নেই।” সংসদীয় অধিবেশনে সেই দূরত্ব চোখে পড়েছে। স্বাভাবিকভাবে তৃণমূলের সংসদীয় কমিটির বৈঠকেও উঠে এল কংগ্রেস প্রসঙ্গও।
সর্বভারতীয়স্তরে তারা কংগ্রেসের কাছাকাছি আসবে নাকি দূরত্ব বাড়াবে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় বৈঠকে। জানা গিয়েছে, দলীয় বৈঠকে দলের সম্প্রসারণে জোর দেওয়ার বার্তাই দেওয়া হয়েছে। তাঁর কথায়, “আমরা আলাদা দল হিসেবে অস্তিত্ব বজায় রাখব সংসদে। সংসদের বিভিন্ন ইস্যু আছে। ইস্যুভিত্তিক বিরোধিতা চলবে। কংগ্রেসের সঙ্গে যাওয়া, না যাওয়া কোনও ব্যাপার নয়।”
সংগঠন বিস্তারের ক্ষেত্রে তৃণমূল যে এগোচ্ছে, সেই প্রেক্ষিতে ত্রিপুরা থেকে শুরু করে মেঘালয়, গোয়া এবং হরিয়ানার প্রসঙ্গেও বৈঠকে বিশদে আলোচনা করেছেন অভিষেক। ত্রিপুরায় তৃণমূল যেভাবে এগিয়ে এসেছে, তা নিয়ে সন্তোষও প্রকাশ করেছেন তিনি। ভিনরাজ্যে দলের সংগঠন বিস্তারের ক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেসকে যে উল্লেখযোগ্য ভূমিকায় উঠে আসতে হবে, সেই বার্তাও দিয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর, বৈঠকের অন্দরে এ প্রসঙ্গে অভিষেকের সাফ কথা, ‘‘আমরা ২ বা ৫ শতাংশ ভোটের জন্য কোনও রাজ্যে যাব না। যেখান যাব, সেখানে আমাদের সামনে উঠে আসতে হবে।”
তৃণমূলের সংসদীয় কমিটির বৈঠকেও উঠে আসে নাগাল্যান্ড ইস্যু। আগেই সেই মর্মান্তিক ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছিলেন দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সংসদেও বিরোধিতা করেছিল তৃণমূল। এবার এই ইস্যুতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (HM Amit Shah) সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। আফস্পা প্রত্যাহারেরও দাবি জানানো হবে। বৈঠকে এমনই নির্দেশ দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বিকেল পৌনে চারটেয় তাঁদের সময় দিয়েছেন শাহ।
দলের লোকসভার মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যসভার মুখ্য সচেতক সুখেন্দুশেখর রায়ের নেতৃত্বে তৃণমূলের সাত সদস্যের সংসদীয় প্রতিনিধি দল খুব শীঘ্রই শাহের কাছে যাবেন বলে খবর। তৃণমূলের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সময় চাওয়া হয়েছে। তাঁর সঙ্গে দেখা করে আফস্পা প্রত্যাহার করার দাবি সম্বলিত স্মারকলিপিও জমা দেবেন তাঁরা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও দেখা করবে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। সেখানে বিএসএফের ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং রাজ্যের বকেয়া পাওনার কথাও তুলে ধরবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.