সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিরুপতি মন্দিরে প্রসাদী লাড্ডুতে গরুর চর্বি ও মাছের তেল ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর ফুঁসে উঠেছে রক্ষণশীল হিন্দু সমাজ। চরম বিতর্কের মাঝেই এবার ঈশ্বরের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী দক্ষিণী সুপারস্টার তথা অন্ধ্রপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী পবন কল্যাণ। প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ রবিবার গুন্টুরের দশাবতার ভেঙ্কটেশ্বর স্বামী মন্দিরে ১১ দিনের উপবাস শুরু করলেন তিনি। জানিয়েছেন, প্রায়শ্চিত্ত সম্পন্ন করার পর তিরুপতি মন্দির দর্শন করবেন তিনি।
তিরুপতি মন্দিরের লাড্ডুতে পশুর চর্বি মেশানোর ঘটনায় সোশাল মিডিয়ায় দুঃখপ্রকাশ করেন পবন। জানান, যাঁদের কারণেই হোক না কেন তিরুপতির প্রবিত্রতা নষ্ট হয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রায়শ্চিত্তের বার্তা দিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, আমাদের সংস্কৃতি, আস্থা, বিশ্বাস ও শ্রদ্ধার কেন্দ্রস্থল শ্রী তিরুপতি বালাজি মন্দিরের পবিত্রতা নষ্ট হয়েছে। এই ঘটনায় আমি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে আহত হয়েছি। সত্যি বলতে আমি অন্তর থেকে অনুভব করছি আমি প্রতারিত। ভগবান ভেঙ্কটেশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছি এই চরম দুঃখের মুহূর্তে ঈশ্বর যেন আমাদের শক্তি দেন। এই ঘটনায় জন্য আমি প্রায়শ্চিত্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ ১১ দিন আমি উপবাস করব। উপবাস শেষে আমি তিরুপতি মন্দিরে যাব এবং প্রভুর দর্শন করব, তাঁর কাছে ক্ষমা চাইব। সেখানেই আমার প্রায়শ্চিত্ত শেষ হবে।’ নিজে তো বটেই, তিরুপতিকে ভালবাসেন এমন সব সনাতন ধর্মাবলম্বির কাছে প্রায়শ্চিত্তের আবেদন জানান অন্ধ্রের উপমুখ্যমন্ত্রী। যা ঘটেছে তা ভয়াবহ অপরাধ বলেও দাবি করেছেন কল্যাণ।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু দাবি করেন, ওয়াইএসআর কংগ্রেসের শাসনকালে লাড্ডুতে পশুর চর্বি ব্যবহার করা হত। ব্যবহার করা হত মাছের তেল। কিন্তু তিনি ক্ষমতায় আসার পর পরিবর্তন করে খাঁটি ঘি দিয়ে তৈরি হচ্ছে শ্রী ভেঙ্কটেশ্বর মন্দিরের প্রসাদী লাড্ডু। এহেন অভিযোগের পরই শোরগোল পড়ে যায়। পরে ল্যাবরেটারিতে পরীক্ষা করে দেখা যায়, সত্যিই তিরুপতি মন্দিরের প্রসাদী লাড্ডুতে ব্যবহৃত হচ্ছে গরুর চর্বি, মাছের তেল। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেন সনাতনিরা। অন্ধ্রের মন্ত্রী নারা লোকেশ জানান, তিরুপতি মন্দিরে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকেই রেহাত করা হবে না। পরবর্তী সময়ে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে তার জন্য মন্দিরের পরিকাঠামোগত পরিবর্তন করা হবে।
তবে বিতর্ক শুধু তিরুপতি মন্দিরে নয়, বিতর্ক ছড়িয়েছে রামমন্দিরেও। গত জানুয়ারি মাসে অযোধ্যায় রামমন্দিরে প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানে প্রসাদ হিসেবে বিলানো হয়েছিল ৩০০ কেজি লাড্ডু। যা এসেছিল তিরুপতি মন্দির থেকে। এমনটাই জানিয়েছেন খোদ রামমন্দিরের প্রধান পুরোহিত আচার্য সত্যেন্দ্র দাস। রামমন্দিরের প্রধান পুরোহিত বলেন, ‘আমি জানতাম না ঠিক কত কেজি লাড্ডু আনা হয়েছিল তিরুপতি মন্দির থেকে। এটা ট্রাস্ট বলতে পারবে। তবে যত লাড্ডু আনা হয়েছিল সবই ভক্তদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া হয়।’ তবে যে রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে তাতে অনুমান করা হচ্ছে, ‘এর পিছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে।’ তবে যদি এই ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে এ ক্ষমার অযোগ্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.