সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাঘেরা অলস হচ্ছে! নাকি তাদের সাহস বাড়ছে! তা না হলে জঙ্গলের খাদ্য-খাদক সম্পর্কের স্বাভাবিক নিয়ম ভেঙে বাঘেরা হাতি মারছে কী করে?
[আরও পড়ুন: ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ নিয়ে আলোচনার জন্য সর্বদলীয় বৈঠকের ডাক প্রধানমন্ত্রীর]
জিম করবেট জাতীয় অভয়ারণ্যের একটি সাম্প্রতিক তথ্য সেই আশ্চর্য বিষয়ই সামনে এনেছে। যা দেখে রীতিমতো অবাক হয়েছেন পশু বিশেষজ্ঞরা। বাঘেদের খাবার শিকারের এই নতুন ধারায় রীতিমতো চিন্তায়ও পড়েছেন তাঁরা। এমনকী বিষয়টি গবেষণাযোগ্য বলেও মন্তব্য করেছেন। গত পাঁচ বছর ধরে ঘটে চলেছে এমন উলটপুরাণ। যে বাঘেরা হাতির মাংস খায় না। যে হাতিকে রীতিমতো ভয় পায় জঙ্গলের বিপুল প্রাণীকুল, সেই হাতিকে মেরে তার মাংস খাচ্ছে করবেট অভয়ারণ্যের বাঘেরা। যেখানে বাঘের সংখ্যা ২২৫। আর হাতি আছে প্রায় ১১০০। অথচ তথ্য বলছে, সংখ্যার তারতম্যকে বিন্দুমাত্র গুরুত্ব না দিয়েই বাঘেরা শিকার করছে হাতিদের। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ এর মে মাস পর্যন্ত মোট ২১টি হাতি, ন’টি বাঘ এবং ছ’টি লেপার্ডের মৃত্যু হয়েছে করবেট অভয়ারণ্যে। সমীক্ষা বলছে, এই সব ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময়েই মৃত্যুর কারণ বন্যপ্রাণীদের সঙ্গী বাছাই জনিত অন্তর্দ্বন্দ্ব। যদিও ২১ হাতির মৃত্যুর মধ্যে ১৩টি হয়েছে বাঘের আক্রমণে। অবশ্য এই ১৩টি হাতিই ছোট হাতি। অর্থাৎ অল্পবয়সি। যাদের উপর বাঘেদের ঝাঁপিয়ে পড়া সোজা। কারণ, প্রথমত তারা মন্থর গতি। বাঘের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পালানোর ক্ষমতা নেই। দ্বিতীয়ত পাল্টা আক্রমণের ভয়ও নেই এদের থেকে।
তবে কি দৌড়ে, পরিশ্রম করে শিকারের পিছনে ছুটে শিকারকে কাবু করার ক্ষমতা হারাচ্ছে বাঘেরা? সাধারণ ভাবে দেখা যায় ছোট হাতিদের কেউ ক্ষতি করলে হাতিরা জোট বেঁধে ‘শত্রু’কে বিনাশ করে তার শোধ নেয়। করবেট অভয়ারণ্যের ব্যাঘ্রকুলের কি সে-ভয়ও নেই। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য আপাতত বাঘেদের আলিস্যি তত্ত্বেই বিশ্বাসী। তারা মনে করছেন, সম্বর হরিণের পিছনে ছুটে বা আড়াল থেকে ওঁত পেতে তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে শিকার ধরায় বাঘেদের যে কায়িক শ্রম হয়, তার চেয়ে অনেক সহজ ছোট হাতিদের কাবু করা। তবে হাতিরাও সাধারণত দল বেঁধেই থাকে। সেক্ষেত্রে সেই দলের ভিতর থেকে ছোট হাতির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে শিকার করা অসম্ভব। তাই বিশেষজ্ঞদের অনুমান, হয়তো দলছুট ছোট হাতিরাই শিকার হচ্ছে বাঘের হামলার। যদিও বাঘের শিকার ধরার এই নতুন ধারা নিয়ে রীতিমতো চিন্তিত তাঁরাও। বিষয়টি গবেষণাযোগ্য বলে মন্তব্য করে তাঁরা জানিয়েছেন, এতে জঙ্গলের বাস্তুতন্ত্রেও প্রভাব পড়বে।
[আরও পড়ুন: আস্তাকুঁড়ে থেকে উদ্ধার হওয়া শিশুকে দত্তক নিচ্ছেন সাংবাদিক দম্পতি]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.