ছবি: প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঝাড়খণ্ডে ফের মারধর করে তিন মুসলিম যুবককে ‘জয় শ্রীরাম‘ ধ্বনি দিতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠল। শুক্রবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে রাঁচিতে। আক্রান্ত ওই যুবকদের হাসপাতালে চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর দোষীদের গ্রেপ্তারির দাবিতে স্থানীয় চার্চ কমপ্লেক্স এলাকার মহাত্মা গান্ধী মার্গে রাস্তা অবরোধ করেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে ঘণ্টাদুয়েক পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ।
এপ্রসঙ্গে রাঁচির সিনিয়র পুলিশ সুপার অনীশ গুপ্তা বলেন, “মহাত্মা গান্ধী মার্গে উত্তেজনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। বর্তমানে শান্তি ফিরেছে ওই এলাকায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য গোটা এলাকাজুড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আমরাও নজর রাখছি।”
এই ঘটনায় রাঁচির ডোরান্দা পুলিশ স্টেশনে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন আক্রান্ত যুবক আমির ওয়াসিম। শুক্রবারের ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি ও আমার দুই বন্ধু আলতাফ আলি এবং আলি আহমেদ রাঁচি বিমানবন্দরে যাচ্ছিলাম। বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকায় কিছু ছবি তোলার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু, একটি বাইকে করে কুর্তা ও পাজামা পরে যাওয়ার সময় কয়েকজন আমাদের রাস্তা আটকায়। তারপর কোনও প্ররোচনা ছাড়াই চারিদিক থেকে ঘিরে ধরে মারধর শুরু করে। মারতে মারতে আমাদের ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিতে বলে। আস্তে আস্তে লোক বাড়ছে দেখে ওই এলাকা ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করি আমরা। চিৎকার করতেও শুরু করি। সেই চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে এসে আমাদের প্রাণ বাঁচান রাঁচির বিরসা মুণ্ডা বিমানবন্দরের নিরাপত্তারক্ষীরা।”
গত ১৮ জুন দুই সঙ্গীর সঙ্গে জামশেদপুরে যাচ্ছিলেন তবরেজ আনসারি নামে এক যুবক৷ অভিযোগ, ঝাড়খণ্ডের খারসাওয়ান দিয়ে যাওয়ার সময় চোর সন্দেহে বেশ কয়েকজন তাঁকে ঘিরে ধরে৷ সুযোগ বুঝে পালিয়ে যায় তাঁর দুই সঙ্গী৷ এরপরই উন্মত্ত জনতার রোষের শিকার হন তিনি৷ বেধড়ক মারধরের পর তাঁকে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতেও বাধ্য করা হয়। তবে রেহাই মেলেনি তারপরেও। প্রায় ১৮ ঘণ্টা বেঁধে রেখে অকথ্য অত্যাচার করা হয়। পরে হাসপাতালে ভরতি থাকাকালীন মৃত্যু হয় তাঁর। শুক্রবার সংখ্যালঘুদের উপরে এই ধরনের আক্রমণের প্রতিবাদে ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচিতে ‘আক্রোশ র্যালি’ বের করেন মুসলিমরা। আর কাকতালীয় ভাবে তার কিছুটা দূরে প্রায় একই সময়ে আক্রান্ত হতে হল তিন মুসলিম যুবককে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.