সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিন তালাক ইস্যুতে সমাজের বিশিষ্টজনদের একাংশের নীরবতা তাঁকে চমকে দিয়েছে বলে সোমবার মন্তব্য করলেন উত্তরপ্রদেশের নয়া মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ চন্দ্র শেখরের প্রসঙ্গ টেনে এনে তিনি বলেন, “চন্দ্র শেখরও অভিন্ন দেওয়ানি বিধির পক্ষে ছিলেন।” প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চন্দ্র শেখরের উপর একটি বই প্রকাশের অনুষ্ঠানে এসে এই মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। লখনউতে ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে তিনি বলেন, “যাঁরা তিন তালাকের মতো প্রথার বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন না, তাঁরাও সমান দোষী।” এদিন কাশ্মীর প্রসঙ্গেও মুখ খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, “চন্দ্র শেখর বিশ্বাস করতেন, কাশ্মীরকে আলাদা করে দিলে ভারতবাসী বিশ্বাস হারিয়ে ফেলবেন।
Some people who are silent on the issue of #TripleTalaq are equally guilty: UP CM Yogi Adityanath in Lucknow. pic.twitter.com/Vy01soHzbW
— ANI UP (@ANINewsUP) April 17, 2017
উল্লেখ্য, ২০১৬-য় সুপ্রিম কোর্টে মুসলিম সম্প্রদায়ের তিন তালাক এবং পুরুষদের বহু বিবাহ প্রথার বিরুদ্ধে আবেদন করেছিল কেন্দ্র৷ ধর্মনিরপেক্ষতা এবং লিঙ্গ বৈষম্যের উপর জোর দিয়ে কেন্দ্র বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করে সর্বোচ্চ আদালতে৷ কেন্দ্র জানায়, বহু মুসলিম দেশেও তিন তালাক, বহুবিবাহ নিষিদ্ধ হয়েছে৷ যদিও মুসলিম ল’ বোর্ডের কট্টরপন্থী অংশের দাবি, তিন তালাকের মতো প্রথাকে অসাংবিধানিক বলার অর্থ হল, নতুন করে কোরান লেখা৷ যা কখনওই মেনে নেওয়া যায় না৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তিন তালাক প্রথা সম্পর্কে বলেছেন, এই নিয়ম মুসলিম মহিলাদের চরম সমস্যায় ঠেলে দিচ্ছে৷ তাঁদের জন্য সুবিচার নিশ্চিত করতে হবে৷ ভুবনেশ্বরে দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে যোগ দিয়ে তিন তালাক প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মুসলিম মহিলারা ভীষণ কষ্টে রয়েছেন৷ কিন্তু সরকার চায় না তাঁরা কষ্টে পান৷ কোনও অশুভ শক্তি থাকলে সমাজের সকলকে তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে৷ আমাদের মুসলিম বোনেরা যাতে সুবিচার পান সে বিষয়টি আমাদের নিশ্চিত করতে হবে৷ তাঁদের সঙ্গে অবিচার হওয়া কখনওই উচিত নয়৷ আমরা চাই না বিষয়টি নিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব থাকুক৷”
Chandra Shekhar ji ne kaha tha ke agar hamare faujdaari ke maamle aur shaadi vivah samaan hai to Uniform Civil Code kyun nahi?: UP CM pic.twitter.com/3dlA5c5P0N
— ANI UP (@ANINewsUP) April 17, 2017
অন্যদিকে, ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের (এআইএমপিএলবি) সাধারণ সম্পাদক ওয়ালি রেহমানি জানিয়েছেন, শরিয়ত আইন মেনে তালাক দিতে হবে৷ না হলে সামাজিক বয়কট করা হবে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে৷ ব্যক্তিগত আইন মেনে চলা মুসলিমদের সাংবিধানিক অধিকার৷ সেই অধিকারে কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারে না৷ তিনি আরও জানিয়েছেন, আদালতের বাইরে সমাধানের কোনও প্রশ্নই ওঠে না৷ সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনেই বাবরি মসজিদ বিতর্কের সমাধান করতে হবে৷ ররিবার তিন তালাক, বাবরি মসজিদ বিষয়ে মুখ খোলেন ওয়ালি রেহমানি৷ তিন তালাকের বিষয়ে রেহমানি বলেন, “যাঁরা শরিয়ত আইন বা ইসলামি আইন না মেনে তালাক দেবেন তাঁদের সামাজিকভাবে বয়কট করা হবে৷ তিন তালাকের বিষয়ে খুব শীঘ্রই একটি আচরণবিধি চালু করা হবে৷ ওই আচরণবিধি চালু হলেই তালাক সম্পর্কে শরিয়তের প্রকৃত নির্দেশ বোঝা যাবে৷ তবে কোনওভাবেই ইসলামি আইনে বাইরের হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না৷ কারণ এটা আমাদের মৌলিক অধিকার৷ দেশের সংবিধানেই বলা আছে, যে কোনও ব্যক্তি তাঁর নিজের ধর্ম পালন করতে পারেন৷ তাই মুসলিম সম্প্রদায়ের ব্যক্তিগত আইনে কোনও বাধা আসা ঠিক নয়৷” রেহমানি জানান, সব মসজিদের মৌলানা এবং ইমামদের শুক্রবারের নমাজের সময় এই আচরণবিধি পড়ে শোনানো এবং তা বাস্তবায়িত করার জন্য অনুরোধ করা হবে৷ ল বোর্ডের সাধারণ সম্পাদকের দাবি, দেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই তাদের ব্যক্তিগত আইনে কোনও পরিবর্তন চায় না৷ তাই এই ব্যক্তিগত আইন বাস্তবায়িত করার পথে কোনও অন্তরায় মেনে নেওয়া হবে না৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.