সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাসপাতাল মানেই লক্ষ লক্ষ টাকা বিলের আতঙ্ক। রোগীকে ভরতি করানোর পর থেকেই রীতিমতো চিন্তায় থাকে পরিবার। বিশেষ করে করোনা (Corona Virus) কালে বেসরকারি হাসপাতালগুলির মোটা বিল ধরানোর ঘটনা বারবার শিরোনামে উঠে এসেছে। ভীষণরকম সমস্যায় পড়তে হয়েছে গরিব পরিবারগুলিকে। দেশের প্রায় সর্বত্র ছবিটা একইরকম। কিন্তু ডাক্তারির পেশাতেও যে মানবিকতা হারিয়ে যায়নি, সেটাই প্রমাণ করলেন অন্ধ্রপ্রদেশের এক তরুণী।
ডা. নুরি পারভিন। অন্ধ্রের (Andhra Pradesh) কাড়াপা জেলার একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ থেকে ডাক্তারি পাশ করেন। তখন ঠিক করেছিলেন, চিকিৎসক হিসেবে শুধু মোটা টাকা আয় নয়, লক্ষ্য হবে প্রত্যেককে ডাক্তারি সুবিধা পাইয়ে দেওয়া। কাউকে যেন বিনা চিকিৎসায় না থাকতে হয়, এই ব্রত নিয়েই পেশায় এসেছিলেন। আর দুস্থ মানুষদের যাতে সমস্যায় না পড়তে হয়, তাই মাত্র দশ টাকার বিনিময়েই রোগী দেখেন। “কাড়াপার দরিদ্র পরিবারগুলির যেখানে বাস, সেখানেই নিজের ক্লিনিক খুলেছি। যাঁরা অর্থের অভাবে ডাক্তার দেখাতে চান না, তাঁরা যেন আমার কাছে আসেন, এটাই চেয়েছিলাম।” বলছিলেন বিজয়ওয়াড়ার মেয়ে ডা. পারভিন।
বাবা-মাকে না জানিয়েই ওই প্রত্যন্ত এলাকায় ক্লিনিক চালু করেছিলেন। পাছে তাঁরা মেয়ের এমন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন! কিন্তু মেয়ের এমন মানবিক প্রয়াসের কথা জেনে আপ্লুতই হন পারভিনের অভিভাবকরা। তাঁর স্বপ্নপূরণের জন্য আশীর্বাদও করেন। ‘দশ টাকার ডাক্তারে’র কথায়, “আসলে আমি ছোট থেকে এভাবেই বড় হয়েছি। মা-বাবাকে অনেক সমাজসেবামূলক কাজ করতে দেখেছি। এমনকী, তিনজন অনাথকে আশ্রয় দিয়ে তাদের লেখাপড়ার দায়িত্বও নিয়েছিলেন। তাঁদের থেকেই দুস্থ মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর অনুপ্রেরণা পেয়েছি।”
১০ টাকার বিনিময়ে রোগী দেখার পাশাপাশি মাত্র ৫০ টাকাতেই বেড মেলে তাঁর ক্লিনিকে। এখানেই শেষ নয়, ক্লিনিক শুরু করার আগে দুটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানও গড়েন পারভিন। যেখানে যুবপ্রজন্মকে সুস্থ রাখতে নানা বন্দোবস্ত রয়েছে। তাঁর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছে এলাকার বাসিন্দারা। ভবিষ্যতে আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া মানুষগুলির জন্য আরও কিছু করার ইচ্ছে রয়েছে পারভিনের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.