Advertisement
Advertisement
চন্দ্রযান ২

তুঙ্গে চন্দ্রযান-২ অভিযানের প্রস্তুতি, ঢিল ছুঁড়ে জল মাপার পর এবার চাঁদের মাটিতে পা

চাঁদে জলের সন্ধান করবে চন্দ্রযান-২।

This is what makes India’s mission to moon Chandrayaan-2 special
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:July 12, 2019 1:31 pm
  • Updated:July 12, 2019 1:31 pm  

ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: বিশ্বকাপ ক্রিকেট থেকে ছিটকে যাওয়ার শোক এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি ভারত। তার মধ্যেই নতুন উত্তেজনায় ফুটতে শুরু করল দেশ। চাঁদের মাটিতে এবার ‘পা’ রাখবে ভারত। মানবহীন সেই চন্দ্রযান ২ অভিযান শুরু হবে আগামী রবিবার মাঝরাতে। হাজির থাকার কথা রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের। শুরু হয়ে গেল তারই কাউন্টডাউন।

[আরও পড়ুন: চাঁদের অগম্য মাটিতে ঘাঁটি গাড়বে চন্দ্রযান ২, জেনে নিন খুঁটিনাটি]

Advertisement

রবিবার বিকেল গড়াতেই তুঙ্গে উঠবে সেই উত্তেজনা। প্রথমবার সফল হওয়ার পর চাঁদের পৃষ্ঠে দ্বিতীয়বারের জন্য যান পাঠাচ্ছে ভারত। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে বিদেশের চেয়ে বহু কম খরচে তৈরি হয়েছে দ্বিতীয় চন্দ্রযান। চাঁদে জলের সন্ধান চালানোর পাশাপাশি সৃষ্টির প্রথমে পৃথিবী-সহ সৌরজগতের পরিস্থিতি কেমন ছিল তার রহস্য সন্ধানই হবে এর প্রধান উদ্দেশ্য।

দ্বিতীয় চন্দ্রযানের প্রধান আকর্ষণ হল, এই প্রথম চাঁদের সাউথ পোল বা দক্ষিণ মেরুতে আলতো করে লাফিয়ে নামবে ভারতীয় কোনও যান। আর নামবে এমন এক জায়গায় যেখানে এখনও পর্যন্ত কোনও যান পৌঁছায়নি। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে দু’টি বিরাট গহ্বরের মাঝখানে একটি সমতলভূমিতে নামবে এই যান। তবে সে প্রথম ‘পা’ রাখা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ তা পরীক্ষাসাপেক্ষ। ভাল করে এলাকা পরীক্ষা করে তবেই দক্ষিণ মেরুতে নামবে ‘চাঁদের গাড়ি’।

মূল উদ্দেশ্য দু’টি। এক, চন্দ্রযান ১ পাঠিয়ে চাঁদে জলের প্রমাণ পেয়েছিল ইসরো। সেটা ২০০৮ সাল। এক দশক পর এবার সেখানে জলের সন্ধান করবে দ্বিতীয় যান। দুই, সৃষ্টির আদিলগ্ন থেকে চাঁদের এই দক্ষিণ মেরুতে এমন অনেক জায়গা আছে যেখানে এখনও পর্যন্ত সূর্যের আলো পৌঁছায়নি। ফলে ওই এলাকাগুলিতে সূর্যের আলোর প্রভাবে স্বাভাবিক বিকিরণ হয়নি। প্রথম দিনের বহু নিদর্শন একই অবস্থায় রয়ে গিয়েছে। মিলতে পারে জীবাশ্মও। সেই কারণেই এই এলাকার রাসায়নিক বিশ্লেষণ করবে চন্দ্রযান। বিশ্লেষণ চলবে খনিজ, বায়ুমণ্ডল, ভূমিকম্পন, রেডিও তরঙ্গেরও। এই নিয়ে ইতিমধ্যে টুইটে বেশ কিছু তথ্যও তুলে ধরেছে ইসরো।

যানটির ভর ৩৮৭৭ কেজি। উচ্চতায় ১৫ তলা একটি বাড়ির সমান। ৬৪০ টন ওজনের জিএসএলভি মার্ক থ্রি রকেটে ১৫ জুলাই মাঝরাতে এর উৎক্ষেপণ হবে। পৃথিবীর কক্ষপথে পৌঁছে সেটি বিচ্ছিন্ন করে দেবে অরবিটরকে। সেখান থেকে সেটি ক্রমে চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছাবে। তার পর একসময় অরবিটর বিচ্ছিন্ন করবে ল্যান্ডারকে। অরবিটর চাঁদকে প্রদক্ষিণ করবে। ল্যান্ডার তার গর্ভে ছয় চাকার রোভার নিয়ে অবতীর্ণ হবে চাঁদে। ৬ অথবা ৭ সেপ্টেম্বর সেটির পৌঁছানোর কথা।

তিনটি ভাগে এই যানকে ভাগ করা হয়েছে। অরবিটর, ল্যান্ডার ও রোভার। ল্যান্ডারের নাম রাখা হয়েছে ইসরোর প্রতিষ্ঠাতা বিক্রম সারাভাইয়ের নামে বিক্রম। রোভারের নাম দেওয়া হয়েছে প্রজ্ঞান। এই দু’টি অংশের বয়স ১৫ দিন। ১৫ দিন ধরে রোভার চাঁদের পিঠের প্রায় ৪০০ মিটার পর্যন্ত ভ্রমণ করবে। ল্যান্ডার নিজের অবস্থানেই স্থির থেকে রাসায়নিক বিশ্লেষণ করবে। অরবিটর চাঁদকে প্রদক্ষিণ করবে ১ বছর ধরে। ল্যান্ডার ও রোভার থেকে তথ্য সরাসরি পৌঁছাবে অরবিটরে। সেখান থেকে পৃথিবীতে সেই তথ্য পৌঁছাবে ১৫ মিনিটে।

এই পর্বে প্রথম চন্দ্রযানের এক দুঃসাহসী পদক্ষেপের গল্প না বললেই নয়। সে বেলা কেবলমাত্র অরবিটরের গর্ভে মুন ইমপ্যাক্ট প্রোব (মিপ) নামে একটি অংশ রেখে চাঁদের কক্ষপথে পাঠিয়েছিল ভারত। জলের প্রমাণ পেতে কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতেই গর্ভজাত সেই মিপকে আছড়ে ফেলা হয় চাঁদের দক্ষিণ মেরুর গোপন শীতল জায়গায়। সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে কঠিন বরফের সঙ্গে অসংখ্য জলকণা ছিটকে উঠেছিল। কক্ষপথে দক্ষিণ মেরুর সামনে থেকে অরবিটরটি যাওয়ার সময়েই তা পর্যবেক্ষণ করে জলের প্রমাণ পায়।

দেখুন ভিডিও: 

 

[আরও পড়ুন: মহাকাশ গবেষণায় নয়া বিপ্লব, প্রথম স্পেস স্টেশন তৈরি করতে চলেছে ভারত]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement