সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বর্ষা নিয়ে যত রোম্যান্টিকতাই থাক না কেন, খিচুড়ি-ইলিশে যতই জমে উঠুক বর্ষামঙ্গল, এক শ্রেণির মানুষের কাছে মেঘদূত কিন্তু সত্যিই আহাম্মক৷ কেননা মাথায় অঝোর বৃষ্টি নিয়ে তাঁরা বোঝেন, এ বর্ষায় রোমান্স নয়, সর্বনাশের সম্ভাবনাই বেশি৷
কিন্তু দেশের আর্থসামাজিক পরিস্থিতি এমনই যে, এ চিত্র যেন কিছুতেই বদলাতে চায় না৷ একদিকে যেমন কিছু বাচ্চা নানা ফ্যাশনের বর্ষাতিতে চলেছে নিজেদের ছন্দে, অন্যদিকে তখন কিছু বাচ্চা কাকভেজা৷ কেননা তাদের মাথার উপর ছাদ নেই৷ ঘরবাড়ি সব বলেই এই ফুটপাথ কিংবা বড়জোর বস্তির ঝুপড়ি৷ এই বর্ষায় সে ঝুপড়িও জল থইথই৷ টিকে থাকাই যখন সমস্যার তখন বর্ষাতির বিলাসিতা আর কোথায়!
সমাজের এ ছবি বেদনাদায়ক সন্দেহ নেই৷ কিন্তু বদলাতে ক’জনই বা এগিয়ে আসেন! তবে আহমেদাবাদের ডিজাইনার অনুজ শর্মা নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রমী৷ বস্তির বাচ্চাদের জন্য কিছু করবেন ভেবেছিলেন৷ প্রথমে ঠিক করেছিলেন তাদের কিছু বর্ষাতি উপহার দেবেন৷ তারপর ভাবলেন তাতে তো সমস্যার সমাধান হবে না৷ বরং বর্ষাতি তৈরির পদ্ধতি শিখিয়ে দিলে কাজের কাজ হয়৷ কিন্তু বর্ষাতি বানানোর উপকরণের খরচ, সেলাই মেশিন জোগাড় তো চাট্টিখানি কথা নয়৷ কিন্তু সমস্যার সমাধান করলেন অনুজ নিজেই৷ স্রেফ কিছু বোতাম ও রাবার ব্যান্ড দিয়ে পোশাক বানানোর একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন তিনি৷সেভাবেই আহমেদাবাদের এক বস্তির বাচ্চাদের বর্ষাতি বানাতে শিখিয়েছেন এই ডিজাইনার৷ উপকরণ বলতে স্রেফ সাধারণ পলিথিন৷ বাচ্চারা শিখেও নিয়েছে চটপট৷ পলিথিনকে বিশেষ কায়দায় মুড়ে বোতাম ও রাবার ব্যান্ড লাগিযে নিলেই দিব্যি তা বর্ষাতির রূপ নিচ্ছে৷ আর তা পেয়ে খুশির হাসি বাচ্চাদের মুখে৷ এই হাসিটিই ডিজাইনার অনুজের কাছে সবথেকে বড় উপহার বলে জানাচ্ছেন তিনি৷
সমাজ, অর্থনীতির মতো গুরুগম্ভীর ব্যাপার পেরিয়ে স্রেফ সদিচ্ছার জোরেও যে সমাজের ছবিটা বদলানো যায়, তাই-ই যেন প্রমাণ করলেন এই ডিজাইনার৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.