Advertisement
Advertisement

Breaking News

হজরত শাহ ওয়ালিউল্লাহ পাবলিক লাইব্রেরি

উর্দু গীতা, পারসি রামায়ণের অমূল্য সম্পদ দিল্লির এই একচিলতে ঘরে

এই লাইব্রেরির সম্পদের বিবরণ শুনলে চোখ কপালে উঠতে বাধ্য!

This Delhi library bosts of Geeta wrriten in Urdu, Ramayan in Parsi
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:June 27, 2019 11:40 am
  • Updated:June 27, 2019 11:40 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিল্লির জামা মসজিদ চেনেন? তো ব্যস! মাতিয়া মহল থেকে শহরের যে রাস্তাটি ওই মসজিদের দিকে যাচ্ছে, সেখান থেকে বাঁ হাতে ঘুরে যান। দেখবেন, লোকে লোকারণ্য একটি গলিতে ঢুকে পড়েছেন। নাম পাহাড়ি ইমলি লেন। এবার একটু আশপাশে চোখ ফেরাতে ফেরাতে হাঁটুন। সচেতন থাকলে চোখে পড়বেই হজরত শাহ ওয়ালিউল্লাহ পাবলিক লাইব্রেরি লেখা একটা সাইনবোর্ড। হ্যাঁ, তারপর সেই বোর্ডের নিচে তাকালে যা চোখে পড়বে, সেটাকে বাইরে থেকে দেখলে ভ্রম হতেই পারে। কিন্তু দ্বিধা-দ্বন্দ্ব এড়িয়ে একবার শুধু ঢুকে পড়ুন। বইয়ের স্বর্গরাজ্য আপনারই জন্য অপেক্ষা করছে। অদ্ভুতভাবে, তিন দশকেরও বেশি সময় আগে আক্ষরিক অর্থেই এই ঘরটি ছিল পুরোপুরি ‘ব্যাচেলরস প্যাড’। ক্রিকেট খেলে এসে পাড়ার ছেলেরা এখানে বসে বিশ্রাম নিত, গল্প করত, কখনও সখনও একদান ক্যারামও খেলে নিত। কিন্তু হঠাৎই একসময় ভোল পালটে গেল রাজধানী শহরের এই এক চিলতে ঘরটির। বিশ্রামাগার পরিবর্তিত হল গ্রন্থাগারে। সগর্বে মাথা তুলে দাঁড়াল হজরত শাহ ওয়ালিউল্লাহ পাবলিক লাইব্রেরি। আকারে পায়রার খুপরির মতো হলে কী হবে! সম্পদের বিবরণ শুনলে চোখ কপালে উঠতে বাধ্য!

[আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য ব্যবস্থার নিরিখে দেশের সেরা কেরল, তালিকায় সবার নিচে যোগীর উত্তরপ্রদেশ]

Advertisement

তা কী কী আছে এই ‘ওয়ান রুম’ লাইব্রেরিতে? ফিরিস্তিটা তাহলে জেনে নিন। আরবি ভাষায় লেখা ছ’শো বছরের পুরনো তর্কশাস্ত্র, ভগবত গীতার উর্দু সংস্করণ, পারসি ভাষায় অনূদিত রামায়ণ, ১৮৮৫ সালে লেখা সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের সম্পূর্ণ জীবনকাহিনি, বসিরুদ্দিন আহমেদের লেখা ‘ওয়াকিয়াত-এ-দারুলহুকুমত-দিল্লি’ ছাড়াও অন্তত ২,৫০০টি দুষ্প্রাপ্য বই। সব মিলিয়ে উর্দু, আরবি, ইংরেজি, হিন্দি এবং পারসি ভাষায় লেখা ২০,০০০-এরও বেশি বইয়ের সম্ভার মিলবে এই এক চিলতে ঘরে। 

কিন্তু কীভাবে গড়ে উঠল এই গ্রন্থাগার? নেপথ্যের গল্পটা কী? জানতে হলে পিছিয়ে যেতে হবে কয়েকটা বছর। ১৯৮৭ সাল। উত্তরপ্রদেশের সাম্প্রদায়িক হিংসার আঁচে তখন পুড়ছে দিল্লিও। চারদিকে জারি কারফিউ। বন্ধ দোকানপাট। কোথাও খাবার নেই, নেই জীবনধারণের জরুরি জিনিসপত্র। সে রকমই এক রাতে মহম্মদ নইম, তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে বেরিয়েছিলেন পাড়ার সকলের জন্য খাদ্যের সংস্থান করতে। তখনই তাদের মাথায় আসে এই গ্রন্থাগার গড়ার কথা। আর ভাবামাত্রই তাঁরা কাজে লেগে পড়েন। পড়শিদের কাছ থেকে বই চেয়ে এনে তাঁরা পাড়ারই একটি ঘরে সাজিয়ে রাখতে শুরু করেন। এভাবেই তিলে তিলে গড়ে ওঠে হজরত শাহ ওয়ালিউল্লাহ পাবলিক লাইব্রেরি। এই ঘটনার তিন বছর পর নইমেরই মধ্যস্থতায় তৈরি হয় দিল্লি ইউথ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনও। এখনও পর্যন্ত এরাই দেখাশোনা করে চলেছে এই অমূল্য গ্রন্থাগারটির। নামীদামি অনেকেই এসে ঘুরে গিয়েছেন এই গ্রন্থাগার। কবি জর্জ লুই বোর্জেসই যেমন। তাঁর কথায়, এই গ্রন্থাগার ‘অনেকটা স্বর্গের মতো।’ আবার আমেরিকার ভেন্ডারবিল্ট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আনন্দ বিবেক তানেজার মতে, “এত ভাষার এত ধরনের বইয়ের কালেকশন দেখে আমি মুগ্ধ। এ শহরে এলেই আমি এখানে একবার হলেও ঘুরে যাই।”

[আরও পড়ুন: ইন্দো-মার্কিন সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে মোদির সঙ্গে বৈঠক ট্রাম্পের বিদেশ সচিবের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement