সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাঁদের নিজেদের কোনও সন্তান নেই। কিন্তু, তাতে কী! রাস্তার অনাথ শিশুদের আপন করে নিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের এক দম্পতি। মুজাফফরনগরে একটি অনাথ শিশুদের জন্য একটি আশ্রম খুলেছেন বীরেন্দ্র রানা ও তাঁর স্ত্রী মীনা। এখনও পর্যন্ত ৫১ জন শিশুকে মানুষ করেছেন তাঁরা। অনেকেই এখন জীবনে সুপ্রিতিষ্ঠিত। আশ্রম থেকে তাঁদের বিয়েও হয়েছে।
[মেয়ের বিয়ের নিমন্ত্রণপত্রে আধার কার্ডের আদল! রাতারাতি সেলিব্রিটি এই ব্যক্তি]
১৯৮১ সালে বিয়ে করেন বীরেন্দ্র ও মীনা। কিন্তু, দীর্ঘ এক দশক কেটে গেলেও সন্তান হচ্ছিল না তাঁদের। ডাক্তারি পরীক্ষায় মীনার জরায়ুতে টিউমার ধরা পড়ে। চিকিৎসকরা জানান, তিনি কোনওদিন মা হতে পারবেন না। এই খবর শোনার পর প্রথমে ভেঙে পড়েছিলেন ওই দম্পতি। কয়েক বছর পর, ১৯৯০ সালে মুজাফফরনগরে জমি কিনে একটি অনাথ আশ্রম খোলেন বীরেন্দ্র ও মীনা। এক বছরের একটি শিশুকে দত্তক নেন। নাম রাখেন মানগেরাম। কিন্তু, সেই সুখ দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। বছর পাঁচেক পর শিশুটি মারা যায়। কিন্তু, তাতেও ভেঙে পড়েননি ওই দম্পতি। বরং রাস্তা থেকে অনাথ শিশুদের তুলে এনে আশ্রমে রেখে মানুষ করতে শুরু করেন তাঁরা। মীনা রানা বলেন, ‘আমি কখনও এটা দেখি না, যে শিশুটি হিন্দু না মুসলিম। ওরা সকলেই আমার সন্তান। আমাদের একমাত্র লক্ষ্য, ওদের পড়াশোনা শেখানো।’
[কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে জিএসটি-র প্রকৃতি কীরকম ছিল? প্রশ্নে বিভ্রান্ত পড়ুয়ারা]
মুজাফফনগরের সুখরতাল এলাকায় প্রায় আট বিঘা জমিতে এই অনাথ আশ্রম। আশ্রমের ভিতরে রয়েছে খেলার মাঠ ও স্কুল। সুসজ্জিত রান্নাঘরে রোজ ৪৬ জন্য শিশুর রান্না হয়। তাঁদের অনেকে আবার শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। এই অনাথ আশ্রমটিকে সাহায্য করে স্থানীয় পঞ্চায়েত। এগিয়ে এসেছেন এলাকার বাসিন্দারাও। মীনার স্বামী বীরেন্দ্র জানিয়েছেন, ‘আশ্রমের জমি দান করেছে স্থানীয় পঞ্চায়েত। আশ্রমটি দানের টাকাতেই চলে। স্থানীয় বাসিন্দারাও বিভিন্নভাবে সাহায্য করেন।’ বীরেন্দ্র-মীনার অনাথ আশ্রমেই থাকেন বছর বাইশের মমতা। এখন এম.এ পড়ছেন তিনি। মমতা বলেন, ‘ওঁনার যদি আমাকে আশ্রম নিয়ে না আসতেন, তাহলে আমার ভবিষ্যৎ কী হত, জানিনা। আমার জীবন ওঁনাদেরই দান।’ মমতার মতো আরও অনেকেই আছে, যাঁরা আশ্রম থেকেই স্নাতক হয়েছেন। এখন তাঁরা স্বেচ্ছায় আশ্রমে কাজ করেন।
[মোদির রাজ্যেই সবচেয়ে বেশি উদ্ধার ২ হাজার টাকার জাল নোট]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.