Advertisement
Advertisement
ক্যাফে

এই ক্যাফেতে আজও অমর কারগিল যুদ্ধের শহিদ ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রা

বিক্রম বাত্রা ছাড়া আরও তিন শহিদকে শ্রদ্ধা জানাতে রয়েছে তাঁদের নামে খাবারের পদ।

This cafe in Dras offers free food on Kargil Vijay Diwas
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:July 24, 2019 10:36 am
  • Updated:July 25, 2019 3:03 pm  

সোমনাথ রায়, দ্রাস: ১ এ, জাতীয় সড়কের উলটোদিকেই পরপর দু’টি ক্যাফে। যার একটির দিকে তাকাতেই চোখ আটকে গেল। দোকানের সাইন বোর্ডে বড়বড় করে লেখা ‘নাইন্টি নাইন ক্যাফে’। আরও চমকে যেতে হল বাইরে লাগানো মেনু চার্টের দিকে তাকাতে। স্পেশাল মেনু লিস্টে চোখ বোলানোর সময় এমন কিছু পদের নাম দেখলাম যা সত্যিই অভাবনীয়। বিক্রম বাত্রা জিরা কফি। গণেশ যাদব এনার্জি বুস্টার। মনোজ কুমার পাণ্ডে’জ সুইট ড্রিঙ্ক এবং অনুজ নায়ার কুকি।

[আরও পড়ুন: অসমে নাগরিকপঞ্জি প্রকাশের সময়সীমা এক মাস বাড়াল সুপ্রিম কোর্ট]

Advertisement

খাবারের এমন আশ্চর্য নামকরণ দেখে কথা বললাম ক্যাফে মালিক ইরশাদের সঙ্গে। বললেন, কারগিল যুদ্ধ ও তার শহিদদের স্মৃতিতেই বছর তিনেক আগে এই ক্যাফে শুরু করেন তিনি। তাই দোকানের নাম রাখেন কারগিল যুদ্ধের সময়কাল ধরে – ‘ক্যাফে ৯৯’। এবং ক্যাফের সেরা চারটি পদের নামকরণ করেন চার অমর শহিদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে।

কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত? ইরশাদ বলছিলেন, “চোখের সামনে দিনগুলো দেখেছি। তখন ক্লাস এইট। গোলাগুলির শব্দ শুনতাম আর ভয়ে কেঁপে উঠতাম। একটু বড় হওয়ার পর মনে মনে ভাবতাম, আমরা তো তাও দুরে। যুদ্ধক্ষেত্রে ওদের কী পরিস্থিতি। সেই সাহসিকতাকে সেলাম জানাতেই এই সিদ্ধান্ত নিই।” ওয়ার মেমোরিয়ালের ঠিক উলটোদিকেই দোকান। তাই বরফের চাদর সরিয়ে লে যাওয়ার রাস্তা খুললে ব্যবসা খারাপ হয় না এই ক্যাফেগুলির। ২৬ জুলাই বিজয় দিবসে নিরাপত্তার বজ্র আঁটুনির মাঝেও জনসমাগম হবে ভালই। সেদিন তো তাহলে ভালই ব্যবসা…! কথা শেষ হল না। থামিয়ে দিয়ে ইরশাদ বলা শুরু করলেন, “আরে না না দাদা, কী যে বলেন? সেদিন আবার ব্যবসা কী? ওটা তো আমাদের গর্বের দিন। তার উপর পবিত্র জুম্মাবার। সেদিন যারা আমার দোকানে আসবে কারও থেকে টাকা নেব না। সেদিন সব ফ্রি।”

[আরও পড়ুন: ডাইনি অপবাদে ২ মহিলা-সহ তিনজনকে মলমূত্র খাওয়ানো হল ঝাড়খণ্ডে]

একটু আগেই কারগিল যুদ্ধ নিয়ে নিজের ভয়ঙ্কর সব অভিজ্ঞতা শোনাচ্ছিলেন দ্রাস ক্যাফের তরুণ মালিক আবিদ। তখন তাঁর বয়স সাত। ক্লাস ওয়ান। শেলের আঘাতে পিঠ এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে যেতে দেখেছেন স্কুলের নিরাপত্তারক্ষীর। একই কারণে নাক উড়ে যেতে ও হাতে আঘাত পেতে দেখেছেন দুই বন্ধুকে। এক আত্মীয়ের বিয়ের দিন তাঁদের থেকে হাফ কিলোমিটার দূরে এসে পড়েছে পাক সেনার গোলা। ইরশাদ বলছিলেন, “এখনও যুদ্ধবিমানের আওয়াজে ভয় লাগে। মনে হয় আবার উপর থেকে বোমা পড়বে না তো? কোনও অনুষ্ঠানে পটকা ফাটলেও বুক ঢিপঢিপ করে। পুলওয়ামার সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখতাম সবাই বলছে যুদ্ধ হোক। যারা বলছে তারা হয়তো সেই বিভীষিকা দেখেনি। দেখলে যুদ্ধ চাইত না। তবে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান আমরাও চাই। তিতিবিরক্ত হয়ে গিয়েছি। একে শীতে রাস্তা বন্ধ থাকায় পাঁচ-ছ’মাস ব্যবসা বন্ধ থাকে। তার উপর এসব কার ভাল লাগে বলুন তো? আমরাও চাই কাশ্মীর সমস্যা মিটুক। তবে শান্তির পথে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement