সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আজ ‘কারগিল যুদ্ধ’-য় ভারতের সাফল্যের ২০ বছর পূর্তি। দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে কারগিল বিজয় দিবস। ১৯৯৯ সালের ওই যুদ্ধ বিশ্বাসঘাতক পাকিস্তানের কাছে চিরকাল একটি চরম লজ্জার অধ্যায় হয়েই থাকবে। সংঘর্ষের মাত্র দু’মাস আগেই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী লাহোর সফর করেছিলেন। তবে বাজপেয়ী জানতেও পারেননি যে, মুখে আলোচনার কথা বললেও কারগিলে হানাদার বাহিনী পাঠানোর ষড়যন্ত্র প্রায় ছকে ফেলেছিল পাকিস্তানের কুখ্যাত ‘গ্যাং অফ ফোর’।
[আরও পড়ুন: জানেন, কারগিল যুদ্ধে পাকিস্তানের উপর অগ্নিবর্ষণ করেছিল কোন অস্ত্রগুলি?]
হানাদার বাহিনী পাঠিয়ে, ভারতীয় ভূখণ্ডে থাবা বসানোর পরিকল্পনা করেছিলেন ‘গ্যাং অফ ফোর’ নাম খ্যাত পাক সেনাবাহিনীর চার শীর্ষ কর্তা। এই চক্রান্তের বিষয়ে বিস্তারিত জানার আগে বুঝে নিতে হবে কারগিলের ভৌগলিক অবস্থান, কেন ওই এলাকা দখলের জন্য মরিয়া ছিল পাকিস্তান?
জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যটি ভাগ করা হয়েছে তিনটি ডিভিশনে, সেগুলি হল- কাশ্মীর, জম্মু ও লাদাখ ডিভিশন। শেষোক্ত লাদাখ ডিভিশনের অন্তর্গত লেহ ও কারগিল জেলা। ‘লাইন অফ কন্ট্রোল’ বা ভারত-পাক নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে ভারতীয় ভূখণ্ডের প্রায় ১০ কিলোমিটার ভিতরে রয়েছে কারগিল। এই যুদ্ধে কারগিলকে তাক করার নেপথ্যে পাকিস্তানের মূল উদ্দেশ্য ছিল লাদাখ এবং কাশ্মীরের মধ্যে সংযোগ ছিন্ন করা। এবং এর মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে ‘কাশ্মীর সমস্যা’ নিয়ে আসা, যাতে বিভিন্ন অজুহাতে তারা তাদের দখল সফল করতে অন্যান্য দেশের সাহায্য পায়। চক্রান্ত সফল করতে মাঠে নেমে পড়েন পাক সেনাপ্রধান পারভেজ মুশারফ, জেনারেল আজিজ, জেনারেল মাহমুদ ও ব্রিগেডিয়ার জাভেদ হাসান। ‘গ্যাং অফ ফোর’ নাম পরিচিত এই চার সেনাকর্তাই রক্তাক্ত করেছিলেন কারগিলকে। যুদ্ধের সময় চিফ অফ জেনারেল স্টাফ ছিলেন আজিজ। এর আগে আইএসআই সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদ ছড়াতে তাঁর ভূমিকা ছিল অনেকটাই। সেই সময় কোর কমান্ডার ছিলেন জেনারেল মাহমুদ। নর্দার্ন ইনফ্যান্ট্রির দায়িত্ব ছিল ব্রিগেডিয়ার জাভেদ হাসানের কাঁধে। উল্লেখ্য, মুজাহিদদের বেশে ভারতীয় আউটপোস্ট দখল করেছিল নর্দার্ন ইনফ্যান্ট্রির জওয়ানরাই।
মূলত জম্মু ও কাশ্মীর দখল করাই উদ্দেশ্য ছিল তৎকালীন পাক সেনাপ্রধান পারভেজ মুশারফের। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দিয়েছিলেন বাকি তিন সেনাকর্তা। জানা যায়, শীতের দরুন কারগিল থেকে সরে গিয়েছিল ভারতীয় বাহিনী। সেই সুযোগে প্রায় ১৪০টি ভারতীয় আউটপোস্ট দখল করে নেয় পাক সেনা। মুশারফ ভেবেছিলেন, কারগিলে থেকে পাকিস্তানকে হঠাতে গেলে কাশ্মীর ডিভিশন থেকে সেনা সরিয়ে আনতে হবে ভারতকে। সেই সুযোগে কাশ্মীরে মুজাহিদদের মদতে গেরিলা যুদ্ধ শুরু করবে পাকিস্তান। ফলে দু’টি ফ্রন্টে কোণঠাসা হয়ে পড়বে ভারতীয় বাহিনী। শেষমেশ কাশ্মীর দখল করে কায়দে আজম জিন্নার মতোই পাকিস্তানের ইতিহাসে অমর হয়ে যাবেন তিনি। তবে সে গুড়ে বালি। উলটে যুদ্ধে হেরে নিজের আসন খোয়াতে হয় তাঁকে। তাঁর বাকি তিন সহযোগীও সেনার অন্দরে কোণঠাসা হয়ে পড়েন।
[আরও পড়ুন: পেয়েছিলেন বীর চক্র, কারগিল যোদ্ধা এখন ট্রাফিক সামলান]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.