সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞরা আগেই দাবি করেছিলেন, গলায় ঝোলানো রেডিও কলার থেকেই সংক্রমণ হচ্ছে আফ্রিকা থেকে আনা কুনোর জাতীয় উদ্যানের চিতাদের। আর তা থেকেই পরপর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে তারা। এবার সেই দাবিরই মিলল চাক্ষুষ প্রমাণ। সম্প্রতি কুনোর (Kuno) ছ’টি চিতার গলা থেকে রেডিও কলার খুলে নেওয়া হয়। সেই কলার খুলতেই চোখে পড়ে তাদের মধ্যে দু’টির শরীরে গুরুতর সংক্রমণ। ইতিমধ্যেই চিকিৎসা শুরু হয়ে গিয়েছে তাদের।
বন আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ‘গৌরব’ এবং ‘সৌর’ নামে দু’টি চিতার শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। চিকিৎসকরা সেই সংক্রমণকে ‘গুরুতর’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন। এক বন আধিকারিকের কথায়, ওই চিতাগুলির (Cheetah) জন্য ওষুধপত্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি আর যাতে এই রেডিও কলার থেকে তাদের শরীরে সংক্রমণ দেখা না দেয়, তা-ও দেখা হচ্ছে। সোমবার বনদপ্তরের আধিকারিকরা জানিয়ে দিয়েছিলেন, সব চিতাই সুস্থ রয়েছে। কিন্তু চিতাদের ঘা প্রকাশ্যে আসতেই অস্বস্তিতে কেন্দ্র।
গত পাঁচ মাসে মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় উদ্যানে একের পর এক চিতার মৃত্যু হয়েছে। যা উদ্বেগ বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের। চিতামৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিশেষজ্ঞদের একাংশ দাবি করেন, আফ্রিকা থেকে আসা চিতাগুলির মৃত্যুর কারণ হতে পারে তাদের গলায় থাকা রেডিও কলার। যা নিয়ে তৈরি হয় বিতর্ক। তারপরই বনদপ্তরের পক্ষ থেকে দশটি চিতার রেডিও কলার খুলে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। অবশেষে দেখা গেল আশঙ্কাই ঠিক ছিল।
উল্লেখ্য, কুনো জাতীয় উদ্যানে একের পর এক চিতামৃত্যুর ঘটনায় কেন্দ্রকে ভর্ৎসনা করে সুপ্রিমকোর্ট। বিচারপতি বি আর গাভাই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন, “গত সপ্তাহে দু’টি মৃত্যু হয়েছে। কেন বিষয়টা প্রেস্টিজ ইস্যু হয়ে উঠছে? দয়া করে কিছু সদর্থক পদক্ষেপ করুন। কেন এদের সকলকে একজায়গায় রাখা হল বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে না রেখে?” এই বিষয়ে কেন্দ্রের তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছিল, সরকার তাদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছে এই সমস্যার সমাধানে।
৭০টি চিতা আনতে ৯১.৬৫ কোটি টাকা খরচ করেছে কেন্দ্র। এখনও পর্যন্ত মোট ৮টি চিতার মৃত্যু হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে গড়ে আরও ১২ থেকে ১৪টি করে চিতা নামিবিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভারতে আনা হবে বলে জানা যাচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.