ফাইল ছবি।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিংসা, বিদ্বেষকে পিছনে ফেলে শান্তিকে সঙ্গী করে নতুন বছর শুরু করার বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বিরেন সিং। মণিপুরের ঘটনার জন্য রাজ্যবাসীর কাছে ক্ষমাও চান তিনি। তবে মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন গ্রাহ্য হল না। হিংসাকে সঙ্গী করেই বছর শুরু হল উত্তর-পূর্বের রাজ্য মণিপুরে।
নতুন বছরের শুরুতে মণিপুরের পশ্চিম ইম্ফল জেলার কদংবন্ড অঞ্চলে হামলা চালাল একদল জঙ্গি। মাঝরাতের দিকে চলে এই হামলা অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্রে এলোপাথাড়ি গুলি ছোড়ার পাশাপাশি বোমা ছোড়া হয়। মাঝরাতে হঠাৎ এই হামলায় আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত ১টা নাগাদ পাহাড়ের উপর থেকে নিচে নেমে আগে জঙ্গিরা। নিচে মেতেইদের গ্রাম লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি বোমা ও গুলি ছোড়া হয়। এমন অতর্কিত হামলায় আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা দ্রুত নিরাপত্তাবাহিনীকে খবর দেয়। গ্রামের স্বেচ্ছাসেবক দল পালটা জবাব দেয় জঙ্গিদের। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছলে পালিয়ে যায় জঙ্গিরা। এই হামলায় অবশ্য হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে মঙ্গলবারই মণিপুরের ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়ে বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বিরেন সিং। তিনি বলেন, “গোটা বছর দুর্ভাগ্যজনক কেটেছে আমাদের। গত বছরের ৩ মে থেকে যা ঘটে চলেছে রাজ্যে তার জন্য সাধারণ মানুষের কাছে ক্ষমা চাইছি আমি। অনেকেই প্রিয়জনকে হারিয়েছেন। অনেকে ঘরছাড়া হয়েছেন। আমি অনুতপ্ত। ক্ষমা চাইছি। কিন্তু গত তিন-চার মাসের শান্তি পরিস্থিতি দেখে আমার আশা যে ২০২৫-এর মধ্যে রাজ্যে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরবে।” এইসঙ্গে রাজ্যের ৩৫টি উপজাতি গোষ্ঠীকে মিলমিশে থাকার বার্তা দেন তিনি। তবে হিংসাদীর্ণ মণিপুরে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তার কোনও প্রভাব যে পড়েনি এই হামলার ঘটনা সেটাই প্রমাণ করে।
গত বছরের মে মাস থেকে মেইতেই এবং কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসা ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মণিপুর। এ পর্যন্ত ২৫০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গৃহহীন হয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। সমস্যা সমাধানে বিপুল সংখ্যায় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে মণিপুরে। একাধিক জেলায় অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও যুদ্ধ সামগ্রী। মঙ্গলবার কাংপোকপি জেলায় এমনই এক অভিযান চলাকালীন কুকি জনগোষ্ঠীর মহিলাদের ব্যাপক বাধার মুখে পড়ে সেনা। পরিস্থিতি সামাল দিতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে হয় জওয়ানদের। উত্তপ্ত এই পরিস্থিতির জেরে মণিপুরের কুকি গোষ্ঠীর ‘আদিবাসী একতা সমিতি’ ২ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ করে দেয়। অনির্দিষ্টকালের জন্য এই সড়ক বন্ধ রাখার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.