সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নোট বাতিলের পর দেশে নগদবিহীন অর্থনীতি তৈরি করাই এখন প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন৷ আর মহারাষ্ট্রের নন্দদুরবার জেলার তেম্ভলি গ্রাম এখন প্রকৃত অর্থেই ক্যাশলেস৷ তবে সেখানে কোনও নগদবিহীন অর্থনীতি তৈরি হয়নি৷ দেশের সাধারণ ছাপোষা মানুষজন নগদবিহীন বলতে ঠিক যেটা বোঝে সেটাই৷ মানে বলতে চাইছিলাম, অর্থাভাবে ভুগছে মহারাষ্ট্রের তেম্ভলি গ্রাম৷ প্রায় কোনও সাধারণ মানুষজনের কাছেই কোনও নগদ টাকা নেই৷ তাই ব্যাহত হচ্ছে প্রতিদিনের নিত্যনৈমিত্তিক কাজ৷
অথচ এই তেম্ভলি গ্রামের আরেকটা পরিচয় আছে৷ এখানেই থাকেন দেশের প্রথম আধার কার্ড প্রাপক৷ যিনি রঞ্জনা সোনওয়ানে৷ প্রথম যখন আধার কার্ড বিলি শুরু হয়েছিল তখন এই মহিলাই প্রথম আধার কার্ড পান৷ যা থেকে আমরা ধরে নিতেই পারি, যে বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি সরকারি সমস্ত প্রকল্প থেকে শুরু করে ব্যঙ্কিং ব্যবস্থা সব ক্ষেত্রেই সুযোগ-সুবিধা পাবেন৷ কিন্তু না, তাঁর ক্ষেত্রে বা তাঁর গ্রামের মানুষজনের ক্ষেত্রে এমনটা হয়নি৷
রঞ্জনা সোনওয়ানে গ্রামের মেলায় পুতুল বিক্রি করেন৷ কিন্তু এখন পয়সা না থাকায় আর মেলায় যেতে পারছেন না তিনি৷ এমনকি নোট বাতিলের পর থেকে তার বাড়িতে না আছে গ্যাস, না আছে বিদ্যুৎ৷ তাই জীবন যাপন করাই এখন দুষ্কর হয়ে উঠেছে রঞ্জনাদেবীর৷ শুধু তাঁই নয়, তাঁর অভিযোগ গ্রামের কোনও চাষি অর্থের অভাবে চাষবাস করতে পারছেন না৷ প্রায় সবাই টাকা না থাকায় গুরুতর সমস্যায় পড়েছেন৷ আসলে শুধু আধার কার্ড নিয়ে তো আর কোনও মানুষের পেট চলতে পারে না ?
দেশের প্রথম আধার কার্ড প্রাপক জানাচ্ছেন, তাঁর গ্রামের প্রায় কাউকেই পুরনো নোট বদল করতে ১০ কিলোমিটার দূরে সাহাদা গ্রামে দৌড়তে হয়নি৷ কারণ গ্রামের কারও কাছে ৫০০, ১০০০-এর মত বড় নোটের লেনদেন প্রায় নেই বললেই চলে৷ সবারই ভরসা ওই ৫০, ১০০ টাকার নোট৷ কিন্তু নোট বাতিলের পর এখন সেই খুচরো নোটেরই আকাল৷ তাই সরকারের প্রায় আস্থা হারিয়েছেন তেম্ভলি গ্রামের বাসিন্দারা৷ কেন্দ্রের স্বপ্নের প্রকল্প নগদবিহীন অর্থনীতির বিষয়ে রঞ্জনা সোনওয়ানেকে জিজ্ঞাসা করলে কিছুটা ব্যঙ্গের সুরেই তিনি বললেন, তেম্ভলি কিন্তু অনেক আগেই নগদহীন হয়ে গিয়েছে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.