সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বামীর কাছে ৮ কোটি টাকার দাবি জানিয়েছিল স্ত্রী। টাকা দিতে না চাওয়ায় প্রেমিকের সঙ্গে মিলে ব্যবসায়ী স্বামীকে খুন করে ৮০০ কিলোমিটার দূরে ফেলে এল স্ত্রী। প্রায় এক মাস পর সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে সেই খুনের কিনারা করল পুলিশ। ভয়ংকর এই খুনের ঘটনা হার মানাবে যে কোনও ক্রাইম থ্রিলারকে মুভিকে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তাহ তিনেক আগে গত ৮ অক্টোবর কর্নাটকের কোডাগু জেলার সুন্তিকোপ্পায় অর্ধদগ্ধ এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার হয়। তবে মৃতের পরিচয় জানা যায়নি। তদন্তে নেমে এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ। সেখানে এক মার্সিডিজ গাড়ি নজরে পড়ে পুলিশের। জানা যায়, গাড়িটি তেলেঙ্গানার রমেশ নামে ৫৪ বছর বয়সি এক ব্যক্তির। সেই সূত্র ধরে পুলিশ জানতে পারে, রমেশের নামে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছেন তাঁর স্ত্রী ২৯ বছর বয়সি নীহারিকা। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই সন্দেহ হয় পুলিশের। এর পর লাগাতার জেরার মুখে ভেঙে পড়েন নীহারিকা এবং স্বীকার করে নেন প্রেমিক নিখিল ও তাঁর এক বন্ধু অঙ্কুরের মদতে স্বামীকে খুন করেছে সে।
পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, ১৬ বছর বয়সে নীহারিকার পিতার মৃত্যুর পর তাঁর মা দ্বিতীয় বিয়ে করে। এর পর অল্প বয়েসেই বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয় নীহারিকাকে। তাঁর এক সন্তানও হয়। তার পর স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ করে হরিয়ানায় চলে আসে নীহারিকা। সেখানে এক আর্থিক প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জেলে ছিলেন দীর্ঘদিন। সেখানেই অঙ্কুর নামে এক যুবকের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। তবে জেল থেকে বের হওয়ার পর ব্যবসায়ী রমেশকে বিয়ে করেন নীহারিকা। তার পর থেকে শুরু হয় নীহারিকার বিলাসবহুল জীবন। তবে স্বামীর বয়স অনেক বেশি হওয়ায় রমেশের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক খুব একটা ভালো ছিল না। অঙ্কুরের সূত্রে পশু চিকিৎসক নিখিলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে অভিযুক্ত। এবং রমেশের কাছে ৮ কোটি টাকার দাবি জানায় নীহারিকা। তবে স্বামী তা দিতে রাজি না হওয়ায় প্রেমিকের সঙ্গে মিলে খুনের ষড়যন্ত্র তৈরি করে নীহারিকা।
জেরায় অভিযুক্ত স্বীকার করেছে ১ অক্টোবর উপ্পলে রমেশকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে নীহারিকা। এর পর সঙ্গীদের সঙ্গে নিয়ে রমেশের বাড়িতে এসে টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে নেয়। সেখান থেকে মৃতদেহ গাড়িতে তুলে কর্নাটকের কোডাগুতে এক কফি বাগানে উপস্থিত হয়। সেখানে দেহ কম্বলে মুড়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। সব কাজ শেষ করার পর সকলে হায়দরাবাদ চলে আসে। সেখানে স্বামীর নামে নিখোঁজ ডায়েরি করে অভিযুক্ত। পুলিশের দাবি, সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে রমেশের গাড়ির ভিত্তিতেই স্পষ্ট হয়েছে হাড়হিম এই হত্যা মামলা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.