সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হয় ১০০ কোটি টাকা নিয়ে বিদ্রোহ করে বিআরএস (BRS) সরকার ফেলে দাও। নয়তো ইডি-সিবিআই (CBI) পিছনে লাগবে। তেলেঙ্গানা কেসিআর সরকার ভাঙতে ‘বিজেপি এজেন্টরা’ বিপুল অর্থের টোপ ও হুমকি দিয়েছিল বলে শুক্রবার বিস্ফোরক দাবি করেছেন শাসকদল ভারত রাষ্ট্র সমিতির বিধায়ক রোহিত রেড্ডি।
এদিকে, তেলেঙ্গানায় বিধায়ক ‘কেনাবেচা’ কাণ্ডে নতুন মোড়। শুক্রবার এই সংক্রান্ত একটি টেলিফোনিক বার্তালাপ ফাঁস করেছে রাজ্যের ক্ষমতাসীন BRS (জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে যোগ দিতে TRS নাম বদল করে বিআরএস করা হয়েছে)। মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের (K Chandrashekhar Rao) দলের তরফে টুইটারে সেই কথোপকথনের অডিও পোস্ট করে দাবি করা হয়েছে, তাদের হাতে আরও প্রমাণ রয়েছে, সেগুলি ক্রমশ প্রকাশ্যে আনা হবে। এদিকে, বিধায়কদের বিপুল অর্থ ও পদের টোপ দিয়ে তেলেঙ্গানার বিআরএস সরকারকে ফেলে দেওয়ার চক্রান্তের অভিযোগে ধৃত তিনজনকে এদিন মুক্তি দিয়েছে বিশেষ অ্যান্টি কোরাপশন ব্যুরো (এসিবি) কোর্ট। আদালত জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিশেষ প্রমাণ মেলেনি। তাছাড়া, এই ক্ষেত্রে প্রিভেনশন অফ কোরাপশন অ্যাক্ট প্রযোজ্য নয়।
এদিন বিআরএস বিধায়ক রোহিত রেড্ডি (Rohit Reddy) দাবি করেছেন, দল পালটাতে তাঁকে ১০০ কোটি টাকার টোপ দিয়েছিল বিজেপি (BJP)। রাজি না হলে অপরাধমূলক মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ইডি-সিবিআই লেলিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। রেড্ডির দাবি, তাঁকেই অন্য বিধায়কদের ঘুষের প্রলোভন দিয়ে ভাঙিয়ে আনার জন্য কাজ করতে বলা হয়েছিল। দল পালটে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য বিধায়ক পিছু ৫০ কোটি টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়। অন্যদিকে, বিধায়ক বান্দি সঞ্জয় প্রসিদ্ধ ইয়াদরি মন্দিরের নামে শপথ করে বলেছেন, এই বিধায়ক কেনাবেচার সঙ্গে তার কোনও যোগ নেই।
তেলঙ্গানার সাইবারাবাদ পুলিশ বুধবার রাতে হায়দ্রাবাদের কাছে আজিজ নগরের একটি খামারবাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ বাজেয়াপ্ত করেছে। পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, ওই অর্থের বিনিময়ে ‘ক্ষমতাসীন তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির (TRS) চারজন বিধায়ককে পদত্যাগ করার প্রস্তাব দিয়েছিল ‘বিজেপির এজেন্টরা’। এই ঘটনায় পুলিশ হরিয়ানার ফরিদাবাদের এক মন্দিরের পুরোহিত রামচন্দ্র ভারতী, তিরুপতির ধর্মগুরু ডি শিমায়াজি এবং হায়দ্রাবাদের নন্দকুমার নামের এক ব্যবসায়ীকে ওই খামার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশের দাবি, ওই খামারবাড়িতে একটি গাড়ি থেকে নগদ ১৫ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, ধৃতরা টিআরএসের চার বিধায়ক পাইলট রোহিত রেড্ডি, বি হর্ষবর্ধন রেড্ডি, জি বলরাজু এবং রেগা কানথা রাওয়ের সাথে যোগাযোগ করেন।
এদিন বিআরএস বিধায়ক রোহিত রেড্ডির সঙ্গে এক স্বামীজির কথাবার্তা অডিও প্রকাশ করেছে। এই স্বামীজিকে বিধায়ক কেনাবেচা কাণ্ডে একজন অন্যতম অভিযুক্ত হিসাবে দাবি করেছে বিআরএস। রোহিত রেড্ডি এবং স্বামীজির মধ্যে কথাবার্তায় সরকার ফেলার চক্রান্ত, বিধায়কদের অর্থ ও পদের টোপ ইত্যাদি প্রকাশ হয়ে গিয়েছে বলে রাজ্যের শাসক দলের তরফে দাবি করা হয়েছে। সেই কথাবর্তায় অন্য দুই বিধায়কের নামও উঠে এসেছে। এর আগে বিআরএস দাবি করে, শাসক দলের চার বিধায়ককে ১০০ কোটি করে এবং অন্য বিধায়কদের ৫০ কোটি টাকার টোপ দিয়েছিল ‘বিজেপি এজেন্টরা’। অবশ্য, বিজেপি তাদের এই দাবি উড়িয়ে দিয়ে বলেছে, পুরোটাই বিআরএসের ‘রাজনৈতিক নাটক’।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.