সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেষবার বোনকে ফোন না করে ১০০ নম্বর ডায়াল করতে পারতেন। হায়দরাবাদের পশু চিকিৎসক প্রিয়াঙ্কা রেড্ডির ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা নিয়ে তেলেঙ্গানা মন্ত্রীর এমন প্রতিক্রিয়াতে বিতর্কের ঝড় উঠেছে।
সে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহম্মদ মেহমুদ আলি বলেন, “এমন ঘটনায় আমরা অত্যন্ত দুঃখিত। পুলিশ অপরাধ দমনে সদা সতর্ক। ওঁ একজন শিক্ষিত মহিলা। কিন্তু তা সত্ত্বেও ১০০ ডালায় না করে ওঁ সেসময় বোনকে ফোন করেছিলেন। ১০০ নম্বরে ফোন করলে হয়তো তিনি প্রাণে বেঁচে যেতেন। এই নম্বরে সবসময় সাহায্য পাওয়া যায়। মানুষের মধ্যে আরও সচেতনতা ছড়াতে হবে।” এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে তিনি বছর ছাব্বিশের নির্যাতিতাকেই একপ্রকার কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন বলে মনে করছেন অনেকে। তবে মন্ত্রীর দাবি, তাঁর রাজ্যের পুলিশ দেশের সেরা। তাঁরা দ্রুত অভিযুক্তদের শাস্তির ব্যবস্থা করবে।
তেলেঙ্গানার ডিজি মহেন্দর রেড্ডিও আশ্বাস দিয়েছেন, মামলাটি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে তুলে অভিযুক্তদের দ্রুত কঠোর সাজার ব্যবস্থা করা হবে। তাঁর দাবি, ওই তরুণী ১০০ ডায়াল করতে ইতস্তত বোধ না করলে হয়তো এমন ঘটনা এড়ানো যেত। তিনি বলেন, “রাত-বিরেতে ফাঁকা জায়গায় কোনও সমস্যার সম্মুখীন হলে আমাদের জানান। আমরা মাত্র একটা ক্লিক দূরে।”
তেলেঙ্গানার সাধনগরের এক পশু হাসপাতালের চিকিৎসক প্রিয়াঙ্কা অন্যান্য দিনের মতো গত বুধবার রাতে কাজ থেকে নিজে স্কুটি চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। সামশাবাদের কাছে রাস্তার মাঝেই স্কুটির চাকা ফেটে যায় তাঁর। তখনই তরুণীর সঙ্গে কথা হয় তাঁর বোনের। তিনি ফোনে জানান, স্কুটির চাকা ফেটে যাওয়ায় বাড়ি ফিরতে সামান্য দেরি হচ্ছে। তখন রাত প্রায় ৯টা ১৫। প্রিয়াঙ্কাকে তাঁর বোন বলেন, টোলপ্লাজার কাছে গিয়ে দাঁড়াতে। সেখানেই হয়তো সাহায্য পেতে পারেন। তবে ফোনে ওই তরুণী জানান, সেখানে প্রচুর অপরিচিত লোক রয়েছে। তাই বেশিক্ষণ দাঁড়াতে ভয় লাগছে। সেই শেষবার বোনের সঙ্গে কথা হয়। তারপর যতবারই ফোন করেছেন তাঁর নম্বর সুইচড অফ এসেছে।
পরেরদিন পুলিশের তরফে প্রিয়াঙ্কার পরিজনের কাছে ফোন আসে। একটি দেহ শনাক্ত করতে ডাকা হয় তাঁদের। তরুণীর গলার হারের লকেট দেখে তাঁর দেহ শনাক্ত করেন পরিজনেরা। পুলিশ সূত্রে খবর, সাধনগর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে একটি ব্রিজের নিচে তরুণীর অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তদন্তে নেমে একটি ট্রাকের চালক এবং খালাসিকে প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদেরকে জেরা করে আরও দু’জনের খোঁজ পায় পুলিশ। চারজনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন আধিকারিকরা। নির্যাতিতার মা চান, মেয়েকে যেভাবে দুষ্কৃতীরা পুড়িয়ে মেরেছে, সেভাবেই অপরাধীদের পুড়িয়ে মারা হোক। গোটা ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও।
I’m shocked to hear about the brutal rape & murder of #DrPriyankaReddy in Hyderabad. How anyone could subject another human being to such terrible, unprovoked violence is beyond imagination. My thoughts & prayers are with the victim’s family at this time of immense grief.
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) November 29, 2019
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.