সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জেলের ভিতর কেটে গিয়েছে আড়াই দশক। বয়স বেড়ে গিয়েছে অনেকটাই। বদলে গিয়েছে মানসিকতাও। কিন্তু বহু বছর তাঁর খোঁজ রাখেনি কেউ। একদা সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে থাকা সুশীল শর্মাকে নিয়ে এতদিনে টনক নড়েছে আদালতের। স্ত্রীকে খুন করার দায়ে প্রায় আড়াই দশকেরও বেশি জেলে থাকা প্রাক্তন যুব কংগ্রেস নেতা সুশীল শর্মাকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে বলেছে দিল্লি হাইকোর্ট।
[বিরোধী জোটে মমতাই মুখ, দেশ বাঁচানোর আরজি ফারুকের]
আদালতের বক্তব্য, সুশীলকে অর্নির্দিষ্টকালের জন্য জেলে রেখে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। তাই সুশীলকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হোক। উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সালে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে এই সন্দেহে স্ত্রী নয়না সাহানিকে গুলি করে খুন করেছিলেন সুশীল। তারপর স্ত্রীর দেহ টুকরো টুকরো করে পুড়িয়েছিলেন তন্দুরে। এই ঘটনায় স্তম্ভিত হয় গোটা দেশ। ২০০৩ সালে নিম্ন আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল সুশীলের। ২০০৭ সালে সেই রায় বহাল রাখে দিল্লি হাইকোর্ট। কিন্তু পরে ২০১৩-য় সুপ্রিম কোর্ট সুশীলের মৃত্যুদণ্ড মকুব করে দেয়, পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণের অভাবে।
চলতি সপ্তাহে দিল্লি হাই কোর্টে ৫৬ বছর বয়সি সুশীল জানিয়েছিলেন, তদন্তের সময় থেকে শুরু করে আদালতের রায় ঘোষণার পর দু’দশকেরও বেশি সময় তিনি জেলে কাটাচ্ছেন। তাই তাঁর মুক্তির বিষয়টি বিবেচনার আরজি জানান সুশীল। তার প্রেক্ষিতে আদালত বলেছে, ‘দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে আসামি (সুশীল শর্মা) জেলে কাটিয়েছেন। এটা নৃশংস খুনের ঘটনা ঠিকই। কিন্তু এতদিন ধরে জেল হওয়ায় কি মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়নি?’’
এরপর নিজের কারাবাসের সাজা কম করার জন্য পুনর্মূল্যায়ন বোর্ডের কাছে আরজি জানিয়েছিলেন সুশীল। সুশীল জানিয়েছিলেন, তাঁর মা ও বাবার দু’জনেরই বয়স ৮০ পেরিয়ে গিয়েছে। তাঁরা অসুস্থ। তাঁদের দেখাশোনা করা দরকার। জেলে তাঁর ভাল আচরণেরও উল্লেখ করেছিলেন তিনি। কিন্তু সুশীলের সেই আরজি কারাবাস পুনর্মূল্যায়ন বোর্ড খারিজ করে দেয়। এই প্রসঙ্গে এদিন আদালতের মন্তব্য, ‘‘খুনের ঘটনা নৃশংস বলে অপরাধীর আরজি একেবারে খারিজ করে দিতে পারে না পুনর্মূল্যায়ন বোর্ড। অপরাধ যতই জঘন্য হোক, কাউকে অনির্দিষ্টকালের জন্য জেলে পুরে রাখা যায় না। তা হলে খুন করলে কোনও অপরাধী কোনওদিনই মুক্তি পাবে না। তাই সুশীল শর্মাকে নিঃশর্তে মুক্তির নির্দেশ দিচ্ছে আদালত।’’
[দেশের যে কোনও কম্পিউটারে নজর রাখবে শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থাগুলি, নির্দেশিকা কেন্দ্রের]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.