Advertisement
Advertisement

আম্মা নেই, বিপর্যয়ের মুখে তাই বড় ভয় করছে

একদিন ঝড় থেমে যাবে৷ কিন্তু ঝড়ের চিহ্নটুকু ঠিকঠাকভাবে মুছে ফেলা যাবে তো!

Tamilnadu People feel the absence of amma during cyclone vardah
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:December 12, 2016 3:40 pm
  • Updated:December 12, 2016 4:04 pm  

প্রকল্প ভট্টাচার্য: গতকাল বিকেলেই হাওয়া অফিস জানিয়েছিল, ভারদা আসছে৷ সে যেন ছিল সিঁদুরে মেঘ৷ ঝড়ের সঙ্গে আমার বা আমাদের ঠিকানা এই তো প্রথমবার মিলছে না! গতবছরের বিপর্যয়ের ছবি এখনও স্মৃতিতে টাটকা৷ তবে এবার তার সঙ্গে যোগ দিয়েছে এক গা শিরশিরানি ভয়৷ কেননা এবার আম্মা নেই৷ গতবছর সব ক্ষয়ক্ষতি প্রায় এক হাতে সামলে নিয়েছিলেন সদ্যপ্রয়াতা মুখ্যমন্ত্রী৷ পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন নাগরিকদের৷ তিনি যে আছেন, এটাই ছিল বড় ভরসা৷ এবারও প্রশাসন সব ব্যবস্থা নিশ্চয়ই করবে৷ তবু কোথাও যেন বড় ফাঁকা ফাঁকা লাগছে৷ মনে হচ্ছে, সব ঠিক থাকবে তো!

কাল বিকেলে টিপটিপ বৃষ্টি মাথায় নিয়েই অফিস থেকে ফেরা৷ পরে হাই অ্যালার্ট জারি হল৷ স্কুল, কলেজে ছুটির ঘোষণা৷ অফিসগুলো ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে কাজকর্ম যা হবে সব বাড়ি বসেই অর্থাৎ ওয়ার্ক ফ্রম হোম৷ কিন্তু হবে কী করে! সকাল

Advertisement
ছবি-লেখক
ছবি-লেখক

হতে না হতেই নেমেছে অঝোর বৃষ্টি৷ এদিকে নেই বিদ্যুৎ৷ বিদ্যুতের বিহনে নেই ইন্টারনেট৷ অগত্যা সব কাজকর্ম শিকেয়৷ গতবছরও এই পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছিল৷ কেননা রাস্তায় গাছ পড়ে, জল জমে৷ বিদ্যুতের তার ছিড়লে যে কোনও মুহূর্তে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে৷ তাই আগেভাগেই এই পদক্ষেপ৷ বিদ্যুৎ যে চলে যাবে সে অবশ্য জানতামই৷ কিন্তু তাতে মুশকিল হল, দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় একরকম আঁধার ঘনিয়েছে৷ হাতে সময়ও পাওয়া গিয়েছে খুব কম৷ এমনকী পর্যাপ্ত পানীয় জল তুলে রাখারও উপায় নেই৷ তবে সিঁদুরে মেঘ দেখে কে না ডরায়! তাই ২-৩ দিনের শুকনো খাবার-দাবার অনেকেই ঘরে তুলে রেখেছেন৷ নৌকারও খোঁজখবর করে রেখেছেন কেউ কেউ৷ জল বাড়লে কী হবে কেউ জানেন না!

এলিয়ট সাহেবের কাছে মার্জনা চেয়ে নিয়েই যেন বলতে হচ্ছে, এপ্রিল নয় ডিসেম্বর ইজ দ্য ক্রুয়েলেস্ট মান্থ৷ অন্তত তামিলনাড়ুর জন্য এর থেকে বড় সত্যি আর নেই৷ বিপর্যয় আসছে৷ লোপাট করে সে চলেও যাবে৷ হয়তো ১-২ দিনের মধ্যে জনজীবন আবার স্বাভাবিক হবে৷ কিন্তু এই বিদ্যুৎহীন অন্ধকারে আর এক ভয়ের কালো মেঘও বেশ ছেয়েছে তামিলনাড়ুকে৷ সেটা হল, পন্নিরসেলভম সব সামলাতে পারবেন তো! আম্মার আমলে তিনি ছিলেন নেপথ্য সৈনিক৷ দক্ষ সে নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই৷ কিন্তু আগেরবার আম্মার অভয় যেন বিপদের দিনে সকলের সঙ্গে সঙ্গে ছিল৷ সন্দেহ নেই, এবার তামিলনাড়ুবাসী এই বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে সেটারই অভাব অনুভব করছেন সবথেকে বেশি৷ আম্মা নেই৷ পন্নিরসেলভমে এখনও ততটা ভরসা নেই৷ বিদ্যুৎ নেই৷ জল নেই৷ ইন্টারনেট নেই৷ অনেক নেইয়ের মধ্যে আছি আমরা৷ আর ভাবছি, একদিন ঝড় থেমে যাবে৷ কিন্তু ঝড়ের চিহ্নটুকু ঠিকঠাকভাবে মুছে ফেলা যাবে তো!

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement