সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জোড়া পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রিধারী, ঝুলিতে রয়েছে অজস্র সার্টিফিকেট, ঝাঁ চকচকে কর্পোরেট স্কুলের শিক্ষকের দিনযাপন ভালই চলছিল। কিন্তু কাল হল করোনা! কেড়ে নিল চাকরি। অভাবে পড়ে এখন রাস্তায় ঠেলা নিয়ে কলা বিক্রি করছেন শিক্ষক। শিক্ষকের এই দুর্দশার ঘটনা কানে আসতেই প্রাক্তন ছাত্ররা তহবিল গড়ে প্রায় ৮৬ হাজার টাকা তুলে ফেললেন।
বিগত আড়াই মাস ধরে লকডাউনের জেরে দেশের অর্থনৈতিক পরিকাঠামো ধুঁকতে থাকার ফলে যে অনেকে কাজ হারাতে পারেন, আগেভাগেই এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন অর্থনীতিবিদরা। ইতিমধ্যেই দেশের প্রায় কোটি কোটি লোক চাকরি খুঁইয়েছেন। সংসার চালাতে পেটের দায়ে নাকানিচোবানি অবস্থা এখন তাঁদের। এদের মধ্যেই একজন তামিলনাড়ুর শিক্ষক পাট্টেম ভেঙ্কট সুব্বাইয়া।
শিক্ষকের এমন দুর্দশার কথা শুনে এগিয়ে এসেছে সুব্বাইয়ার প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীরা। একটি তহবিল গড়ে ইতিমধ্যেই ৮৬ হাজার ৩০০ টাকা তুলে ফেলেছে শিক্ষককে সাহায্যের জন্য। আপ্লুত সুব্বাইয়ার কথায়, “প্রাক্তন ছাত্ররা যখন আমার এই দুর্ভোগের কথা শুনে এগিয়ে এসেছে, তখন জীবনে নিশ্চয় কিছু ভাল কাজ করতে পেরেছি আমি।”
অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোরের একটি কর্পোরেট স্কুলের শিক্ষক ছিলেন পাট্টেম ভেঙ্কট সুব্বাইয়া। সংস্কৃত এবং তেলেগু- এই দুই ভাষায় জ্ঞান তাঁর তুখড়। ১৫ বছর ধরে ওই স্কুলে সাহিত্যের শিক্ষকতা করেছেন। লকডাউন জারি হতেই সেই স্কুল কর্তৃপক্ষ এক ধাক্কায় ৫০ শতাংশ বেতন কেটে নেয় কর্মীদের। সেই তালিকায় ছিলেন সুব্বাইয়াও। এপ্রিলে ৫০ শতাংশ বেতন কাটার পরই কর্তৃপক্ষের তরফে মে মাসে এক কঠিন টার্গেট ধরিয়ে দেওয়া হয় তাঁদের হাতে। সুব্বাইয়ার মতো শিক্ষকদের একপ্রকার হুমকিই দেওয়া হয় যে, এই মরসুমে ৭-৮ জন ছাত্রকে ভরতি করাতে না পারলে চিরদিনের মতো স্কুলের দরজা তাঁদের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে। বেজায় বিপদে পড়ে সেই চেষ্টাও করেন। কিন্তু করোনা আতঙ্কের জেরে অনেক বাড়িতেই তাঁকে ঢুকতে অবধি দেওয়া হয়নি। স্কুলে ছাত্র পাঠানো তো দূরের কথা। ব্যস! চাকরি যায়।
বর্তমানে পেট চালাতে কলা বিক্রি করতে হয় তাঁকে। সুব্বাইয়ার কাঁধে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা ঋণ শোধ করার চাপও রয়েছে ৷ আয় বন্ধ হতেই আকাশ ভেঙে পড়েছে তাঁর মাথায় ৷এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশে ৷ প্রশাসনের তরফে ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত করে দেখার আশ্বাস মিলেছে ৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.