সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিনি বুঝেছিলেন তাঁর হাতে আর বেশি সময় নেই। ভয়ংকর শারীরিক কষ্টে লেখা ছিল মৃত্যুর আগমনধ্বনি। এহেন অবস্থাতেও নিজের দায়িত্ব ভোলেননি স্কুলভ্যান চালক। রাস্তার ধারে গাড়িটিকে নিরাপদে দাঁড় করানোর পরই হৃদরোগের ছোবলে ঢলে পড়লেন মৃত্যুর কোলে। এমনই হৃদয়বিদারক ঘটনার সাক্ষী হল তামিলনাড়ু (Tamil Nadu)।
দক্ষিণী রাজ্যের তিরুপ্পুর জেলার বাসিন্দা ৪৯ বছরের ওই ভ্যানচালক। তাঁর গাড়িতে ছিল প্রায় ২০ জন পড়ুয়া। এএনভি ম্যাট্রিক স্কুল থেকে তাদের তুলে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়াই ছিল ওই চালকের কাজ। কিন্তু ঘটনার দিন আচমকাই তিনি বুকে অসহ্য যন্ত্রণা অনুভব করেন। এই পরিস্থিতিতে গাড়ি চালানো ছিল অসম্ভব কঠিন এক কাজ। কিন্তু এই অবস্থাতেও ছোট্ট ছেলেমেয়েদের কথা ভুলতে পারেননি ওই ব্যক্তি। কোনওমতে গাড়িটিকে পথের ধারে নিরাপদে দাঁড় করান। আর তার পরই অচেতন হয়ে যান। সেই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন তাঁর স্ত্রীও। কেননা তিনিও ওই স্কুলেই চাকরি করতেন। সকলের চোখের সামনেই মারা যান ভ্যানচালক।
এমন দায়িত্বপ্রবণ মানুষের করুণ পরিণতিতে পরিচিতরা তো বটে, অন্যরাও শোকাচ্ছন্ন। এই মহৎ আত্মত্যাগের কথা পৌঁছে গিয়েছে প্রশাসনের কাছেও। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ”জীবন বিপণ্ণ এই অবস্থাতেও উনি স্কুলপড়ুয়াদের মূল্যবান জীবনগুলি রক্ষা করেছেন। ওঁর আত্মত্যাগ ও কর্তব্যজ্ঞানকে আমাদের কুর্নিশ। এই মানবিক কর্মকাণ্ডের জন্য উনি বেঁচে থাকবেন।” প্রয়াত ভ্যানচালকের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়ার ঘোষণাও করেছেন স্ট্যালিন। ইতিমধ্যেই তাঁদের হাতে চেক তুলে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার মৃত ব্যক্তির উদ্দেশে শোকজ্ঞাপন করে ওই স্কুলের পড়ুয়ারা। ছিলেন শিক্ষকরাও। এদিকে মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে শোকপ্রকাশ করেছেন স্কুলশিক্ষামন্ত্রী আনবিল মহেশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.