সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জাতীয় শিক্ষানীতি লাগুর বিরুদ্ধে ফুঁসছে তামিলনাড়ু। এই আগুনেই এবার ঘৃতাহুতি দিলেন তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল আরএন রবি। তাঁর অভিযোগ, সরকারের ‘দ্বিভাষা’ নীতির কারণে দক্ষিণের যুবকরা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। দক্ষিণের এই রাজ্যে ২০২০ জাতীয় শিক্ষানীতি লাগুর পক্ষে সওয়াল করলেন রাজ্যপাল।
শুক্রবার সোশাল মিডিয়ায় তামিলনাড়ুর দক্ষিণের জেলা তুতিনকোরিন ও তিরুনেলভেলি সফরের কথা তুলে ধরেন রাজ্যপাল রবি। তিনি বলেন, এই অঞ্চলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাণিজ্য-সহ একাধিক ক্ষেত্রের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। তার ভিত্তিতে রাজ্যপালের মনে হয়েছে তামিলনাড়ুর দক্ষিণাঞ্চল মানব ও প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ, অথচ বাস্তবে এটি অবহেলিত। শিল্পায়নের বিরাট সুযোগ থাকা সত্ত্বেও এখানকার মানুষ সব সুযোগ থেকে বঞ্চিত। তরুণরা মাদকাসক্ত। রাজ্য সরকারের কঠোর দ্বিভাষা নীতির জেরে এখানকার তরুণরা প্রতিবেশী রাজ্যের তুলনায় নিজেদের বঞ্চিত বলে মনে করে। রাজ্যপালের দাবি, ‘হিন্দি বিরোধিতার নামে দক্ষিণের অন্যান্য ভাষাগুলিকেও অবহেলা করা হচ্ছে। তরুণদের বিকল্প ভাষা শেখার সুযোগ থাকা উচিত বলে দাবি করে তামিলনাড়ুতে জাতীয় শিক্ষানীতি লাগুর দাবি করেন রাজ্যপাল।
উল্লেখ্য, জাতীয় শিক্ষানীতির মাধ্যমে তামিলনাড়ুতে জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে স্ট্যালিন সরকার। রাজ্যে হিন্দির বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন তিনি। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, “কেন্দ্র ২ হাজার কোটি টাকার পরিবর্তে যদি ১০ হাজার কোটি টাকাও দেয় তাহলেও এ পাপ আমি করব না। এই নীতিতে সই করলে তামিল সমাজ ২ হাজার বছর পিছনে চলে যাবে।” স্ট্যালিন আরও বলেন, “দ্রাবিড় আন্দোলন ৮৫ বছর ধরে তামিল ভাষা রক্ষায় লড়াই করছে। গত ৭৫ বছরে ভারতে ৫২টি ভাষা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে হিন্দি আগ্রাসনে। শুধুমাত্র হিন্দি বলয়ে ধ্বংস হয়েছে ২৫ টি ভাষা। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য আমাদের রাজ্যের দুই চোখ। এখানে জাতীয় শিক্ষানীতির মাধ্যমে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া আমরা মানব না।”
এরই মাঝে রাজ্যপালের এই মন্তব্যে বিতর্ক চরম আকার নিয়েছে। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তোপ দেগে তামিলনাড়ুর আইনমন্ত্রী এস রেগুপথি বলেন, “যিনি তামিল, তামিলনাড়ু ও রাজ্য সঙ্গীতের বিরুদ্ধে লাগাতার ঘৃণা পোষণ করে চলেছেন তাঁর মুখ থেকে কোনও জ্ঞান আমরা শুনব না। তামিলনাড়ু শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বাকি রাজ্যকে পিছনে ফেলে এগিয়ে চলেছে। এটা খোদ কেন্দ্রের রিপোর্টেই স্পষ্ট। রাজ্যের দ্বিভাষা নীতির কারণেই এই সাফল্য পেয়েছি আমরা।” রাজ্যপালকে ‘আরএসএসের দাস’ বলে অভিযোগ করে ডিএমকে নেতা বলেন, ‘হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার কোনও ষড়যন্ত্র আমরা মানব না।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.