বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: আফগানিস্তানে (Afghanistan) আটকে থাকা ভারতীয়দের উদ্ধার করাটাই অগ্রাধিকার। তবে, আফগান শিখ এবং হিন্দুদের উদ্ধার করতেও সাহায্য করবে ভারত (India)। তালিবানরা আফগানিস্তানের দখল নেওয়ার ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় পর বিবৃতি দিয়ে এমনটাই জানাল বিদেশমন্ত্রক। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি এই বিবৃতি জারি করে জানিয়েছেন, যাত্রী বিমান পরিষেবা শুরু হলেই আফগান শিখ এবং হিন্দুদের ভারতে আসতে সাহায্য করা হবে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আফগানিস্তানের পরিস্থিতির উপর ভারত নজর রাখছে। আপাতত সেখানে আটকে পড়া ভারতীয়দের দেশে ফিরিয়ে আনাই ভারত সরকারের প্রধান লক্ষ্য। আফগানিস্তান নিয়ে ভারত যে খুব ভেবে চিন্তা অবস্থান ব্যক্ত করতে চাইছে এদিনের বিবৃতিতে তা স্পষ্ট। প্রায় এক পাতার বিবৃতিতে উল্লেখিত পাঁচটি বিষয়ের মধ্যেই চারটিতেই আটকে পড়া ভারতীয় থেকে শুরু করে সেখানকার শিখ (Afghan Sikh) ও হিন্দু (Afghan Hindu) সম্প্রদায়ের মানুষজনকেও যে ভারত সরকার দেশে নিয়ে আসতে চায় এবং সেখানকার যে সমস্ত আফগান সদস্যরা ভারতের সঙ্গে কাজ করেছেন অর্থাৎ সেখানকার কূটনৈতিক ব্যক্তিত্বদের ও আফগানিস্তান থেকে নিয়ে আসার বিষয়ে সাহায্য করবে তাও উল্লেখ করা হয়েছে। শেষ বিষয়টিতেই ভারত যে নিজেদের স্বার্থ বিবেচনা করেই আফগানিস্তানের ক্ষেত্রে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে সেকথা বলা হয়েছে।
বিবৃতিতে বাগচি জানিয়েছেন, “আফগানিস্তানের পরিস্থিতির দিকে লাগাতার উচ্চ পর্যায়ের নজর রাখা হচ্ছে। ভারতীয়দের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এবং নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য ভারত সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।” শুধু তাই নয়, ভারত সরকার যে সবসময় আফগান শিখ এবং হিন্দুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে সেটাও জানিয়ে দিয়েছেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র। তাঁর স্পষ্ট কথা, এঁদের মধ্যে যারা যারা দেশ ছাড়তে চান, তাঁদের ভারতে আসতে সাহায্য করবে সরকার। ইতিমধ্যেই সেই উদ্দেশে পদক্ষেপও করে ফেলেছে সরকার। যে সমস্ত আফগান নাগরিকরা ভারতে আসতে চান, তাঁদের জন্য দ্রুত নতুন ই-ভিসার ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিকে বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, ভারতীয় বায়ুসেনার C-17 যুদ্ধবিমান ১২০ জন ভারতীয় দূতাবাসের কর্মীকে নিয়ে কাবুল থেকে উড়ে গিয়েছে। আপাতত কাবুলে ভারতীয় দূতাবাস জনশূন্য।
[আরও পড়ুন: Afghanistan নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারত, Taliban-এর আগ্রাসনের মুখে দর্শক আমেরিকা]
তালিবান (Taliban) শাসিত আফগানিস্তানের ক্ষেত্রে ভারতের অবস্থান গ্রহণ যে অত্যন্ত কঠিন সেবিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এর আগের সরকারের সঙ্গে ভারতের অত্যন্ত সুসম্পর্ক ছিল। বর্তমান তালিবান শাসনকে ভারত সরকার কী ভাবে দেখবে তা নিয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে ঠিক হলেও, তালিবানের সঙ্গে ‘ব্যাকচ্যানেল’ আলোচনার রাস্তা খোলা রাখার প্রক্রিয়া আগে থেকেই শুরু করে দেওয়া হয়েছিল বলেই বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর। বিগত কয়েক মাস ধরেই দোহাতে ভারতীয় কূটনৈতিক মহল থেকে তালিবানের সঙ্গে অল্প বিস্তর কথাবার্তাও ছিল বলেই শোনা গিয়েছে। অতীতে কান্দাহার বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনার সময়ে ভারত সরকার কোন ভাবেই তালিবানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে আর না হয় সেদিকে নজর রেখেই বিদেশ মন্ত্রক আগে থেকেই ‘ব্যাকচ্যানেল’ তৈরি চেষ্টা করা হয়েছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.