বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষ শিবির বনাম শুভেন্দু অধিকারী। বঙ্গ বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল এবার নেমে এল রাজধানীর রাজপথে। রাজ্যে সংগঠন যেভাবে চলছে তাতে লোকসভা কেন পঞ্চায়েত ভোটেও ভরাডুবি হবে। তড়িঘড়ি দিল্লি ছুটে এসে অমিত শাহ ও জে পি নাড্ডার কাছে নালিশ জানালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার কার্যত রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুদারদের বিরুদ্ধে নিজের অনাস্থার কথা জানান শুভেন্দু। বঙ্গের সংগঠনে রদবদলের দাবিও জানান। সেইসঙ্গে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা, দুর্নীতি ও সরকারি কর্মীদের ডিএ সংক্রান্ত বিষয় কথা বলেন। তবে শাহ বা নাড্ডার কাছ থেকে কোনও সদুত্তর পাননি বলে সূত্রের খবর। পালটা শুভেন্দুর দিল্লি সফরকে নিশানা করেন তৃণমূলের মুখপাত্র ও রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।
এদিন রাজধানীতে পা রেখেই প্রথমে ছুটে যান অমিত শাহর কাছে। তবে শাহর সঙ্গে কী কথা হয়েছে তা প্রকাশ করতে চাননি। তবে সূত্রের খবর, দলের নয়া সমীকরণে বিরোধী শিবিরের বিরুদ্ধে শাহর কাছে একরাশ ক্ষোভ জানানোর পাশাপাশি সংগঠনে রদবদল করার কাতর আবেদন জানান। যুক্তি দেন, তৃণমূলের সঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটে লড়তে গেলে যেভাবে সংগঠনকে শক্তিশালী করার প্রয়োজন তা হচ্ছে না। তাঁর কোনও পরামর্শ রাজ্য নেতৃত্ব গ্রহণ করছে না। এমনভাবে সংগঠন চললে পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটে ভরাডুবি ঠেকানো অসম্ভব। আবার রাজ্য পরিস্তিতি নিয়েও শাহর কাছে ব্যাখ্যা দেন বিরোধী দলনেতা। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কেন্দ্র যাতে কোনও খাতে রাজ্যকে অর্থ না দেন সেই দাবি জানান। সূত্রের খবর, শাহকে তিনি জানান, কেন্দ্র অর্থ বরাদ্দ করলে তৃণমূলের নেতারা তা নয়ছয় করবে। ভোটে সেই অর্থ ব্যবহার করবে। শাহ সব শুনলেও কোনও আশ্বাস দেননি বলে জানা গিয়েছে। এদিকে রাজ্য়ের পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। তাঁর অভিযোগ, বাংলা জ্বলছে।
এই সফরকে কটাক্ষ করে কুণাল ঘোষ বলেন, “সিবিআইয়ের এফআইআরে নাম থাকা শুভেন্দু অধিকারী একমাত্র ব্যক্তি, যিনি নিজের দোষ স্বীকার করেছেন। সারদা-সহ অনেক অভিযোগ আছে। নারদা নিয়ে বলেছেন প্রমাণিত অভিযোগ। এরপরও বাইরে রয়েছেন কীভাবে? দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কীভাবে তিনি দেখা করতে পারেন? তাহলে কি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দিয়ে এই প্রভাবশালী ব্যক্তি আইনের ফাঁক তৈরি করে গ্রেপ্তারি এড়ানো যায় তার রাস্তা তৈরি করছেন? কেন গিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে?
মঙ্গলবার সুকান্তর নেতৃত্বে বাংলার গেরুয়া সাংসদরা প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবেন। ঠিক তার আগের দিন শুভেন্দুর আচমকা দিল্লি সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ শুভেন্দুর শেষ দিল্লি সফরেও তাঁর ছায়াসঙ্গী ছিলেন সুকান্ত। আর এবার একাই দৌড়ে বেড়ান তিনি। যদিও ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় দুর্নীতি নিয়ে কথা হয়েছে বলে জানান বিরোধী দলনেতা। সেইসঙ্গে শাহর কাছে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট করানোর আবদারও করেন বলে জানা গিয়েছে। শুভেন্দুর দিল্লি সফর নিয়ে দিলীপ ঘোষ ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভপ্রকাশ করেন বলে সূত্রের খবর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.