ছবি: প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একে মা মনসা, তার উপরে ধুনোর গন্ধ! পাকিস্তানের সঙ্গে প্রায় ৭০ বছরের শত্রুতা। চিনের সঙ্গে সর্বক্ষণই চাপানউতোর সম্পর্ক। দুই প্রতিবেশী দেশের সঙ্গেই একাধিকবার যুদ্ধ হয়েছে ভারতের। প্রায়ই ভারতের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকে দুই ‘শত্রু মনোভাবাপন্ন’ দেশ। চিনের দখলদারির চেষ্টার জন্য চিরকালই স্পর্শকাতর এলাকা অরুণাচল প্রদেশ। এবার সেখানেই ধরা পড়ল পাক গুপ্তচর। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সেনা মহলে।
গোয়েন্দাদের সন্দেহ, ইন্দো-চিন সীমান্তে হামলার ছক কষছে পাকিস্তান ও চিন। সম্প্রতি চিনের সঙ্গে পাকিস্তানের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও একে অপরকে প্রতিরক্ষা দিক থেকে সাহায্য করার ঘটনা চিন্তায় ফেলেছে সাউথ ব্লকের কর্তাদের। গুপ্তচরবৃত্তির ঘটনায় তা আরও দ্বিগুণ হল। গুপ্তচরের মাধ্যমে অরুণাচল প্রদেশের চিন সীমান্তে ভারতের প্রতিরক্ষা কতটা জোরদার, কোনখানে ফাঁক রয়েছে, কোথায় রাস্তা তৈরি করছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী সব খবর চালান হয়ে যাচ্ছিল করাচিতে। আর এই সবকিছুই করছিল মালবাহকের ছদ্মবেশে সেনাবাহিনীতে লুকিয়ে থাকা পাক গুপ্তচর নির্মল রাই। সম্প্রতি খবর পাচার করতে গিয়ে ভারতীয় জওয়ানদের কাছে ধরা পড়েছে অসমের তিনসুকিয়ার বাসিন্দা নির্মল। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, পাকিস্তানের কয়েকটি সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল নির্মলের। হোয়াটসঅ্যাপ ও ভিডিও কল অ্যাপের মাধ্যমে পাক-গুপ্তচর সংগঠনের কাছে ইতিমধ্যেই চিন সীমান্তে ভারতের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি পাঠিয়ে দিয়েছে অভিযুক্ত। সেই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পরেই নির্মলকে আটক করা হয়। আপাতত তাকে নিজেদের হেফাজতে রেখেছেন সেনাবাহিনীর গোয়েন্দারা। নির্মল পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়েরই সদস্য বলে দাবি গোয়েন্দাদের একাংশের। জেরায় নির্মল জানিয়েছে, দুবাইয়ে একটি বার্গারের দোকানে কাজ করতে গিয়ে পাকিস্তানি গুপ্তচর সংগঠনের কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল। সেখানে তারাই তাকে গুপ্তচরবৃত্তির প্রশিক্ষণ দেয়। কীভাবে গোপনে ছবি তুলবে বা ভিডিও করবে সেই ট্রেনিংই পেয়েছিল। তবে আগ্নেয়াস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ তাকে দেওয়া হয়নি বলেই দাবি নির্মলের।
[উত্তপ্ত উপত্যকা, ৩ দিনে সাতবার সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন পাকিস্তানের]
দুবাইয়ে প্রশিক্ষণের পর পাকিস্তানের গুপ্তচররাই তাকে ফের অরুণাচল প্রদেশে ফেরত পাঠায়। এরপর ২০১৮ সালে সে পাক হ্যান্ডলারদের নির্দেশমতো সেনাবাহিনীতে মালবাহকের কাজে যোগ দেয়। অরুণাচল প্রদেশের আনজাও এলাকায় সীমান্তের সেনাছাউনিতে তাকে মালবাহকের কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়। নির্মলের এক ভাইও সেনাবাহিনীতে রয়েছে। গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, অরুণাচল প্রদেশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য নির্মিত রাস্তা, লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল চত্বর, বিমান-হেলিকপ্টার ওঠানামার স্থান, সেনাছাউনি, ব্রিজ, অস্ত্রভাণ্ডার, উন্নত আগ্নেয়াস্ত্রর ছবি ও ভিডিও পাক গুপ্তচরদের কাছে ফাঁস করে দিতে পারে নির্মল। সেই কারণেই আরও কঠোরভাবে অরুণাচল প্রদেশ-চিন সীমান্তের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে। সাধারণত, সেনাবাহিনীর ফরোয়ার্ড পোস্টের জন্য সেনাকর্তারা স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়োগ করেন। এই ঘটনার পর নির্মলের নিয়োগ নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠছে।
[প্রবল তুষারপাতে ফের ত্রাতা সেনাবাহিনী, সিকিমে রক্ষা পেলেন ১৫০ জন পর্যটক]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.