সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত অক্টোবর মাসেই দিল্লি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ইসলামিক স্টেটের ৩ জঙ্গিকে। ধৃতদের মধ্যে অন্যতম ছিল মহম্মদ রিজওয়ান। এবার তার সঙ্গে যোগ থাকার অভিযোগে এক আইএস জঙ্গিকে ছত্তিশগড় থেকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। অন্যদিকে, ঝাড়খণ্ড থেকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২ আইএস জঙ্গিকে।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, বুধবার ছত্তিশগড়ের দুর্গ (Durg) জেলা থেকে ওয়াজিহুদ্দিন নামে এক আইএস জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে উত্তরপ্রদেশের অ্যান্টি টেররিস্ট স্কোয়াড ও ছত্তিশগড় পুলিশের যৌথ একটি দল। এনিয়ে দুর্গ পুলিশের তরফে একটি বিবৃতি পেশ করে বলা হয়েছে, ঝাঁসির থেকে সন্ত্রাস দমন শাখার একটি ইউনিট ওয়াজিহুদ্দিনের খোঁজে দুর্গে এসেছিল। অভিযুক্ত ওয়াজিহুদ্দিন উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ের বাসিন্দা। দুর্গের সুপেলা থানার অন্তর্গত স্মৃতিনগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওয়াজিহুদ্দিনের বিরুদ্ধে ইউএপিএ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এদিকে বুধবারই ঝাড়খণ্ড থেকে আরও ২ আইএস জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে ঝাড়খণ্ড পুলিশের সন্ত্রাস দমন শাখার একটি ইউনিট। দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ইউএপিএ আইনে ও ভারতীয় দণ্ড বিধির বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এনিয়ে ঝাড়খণ্ড পুলিশের সন্ত্রাস দমন শাখার তরফে একটি বিবৃতি পেশ করে জানানো হয়েছে, ওই দুই জঙ্গির নাম মহম্মদ আরিজ হুসেনাইন ও নাসিম। আরিজকে ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা জেলা থেকে ও নাসিমকে হাজারিবাগ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আরিজের বিরুদ্ধে সোশাল মিডিয়ায় যুবকদের সঙ্গে পরিচয় করে তাদের প্রভাবিত করার অভিযোগ রয়েছে। আরিজের ফোনের সূত্র ধরে খোঁজ মেলে নাসিমের। দুজনের মধ্যে সন্দেহজনক কথোপকথনের হয়েছে। নাসিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে জেহাদ ও আইএসের আদর্শ সংক্রান্ত দুটি বই আরিজকে পাঠানোর। পুলিশের জেরায় ইসলামিক স্টেট-সহ পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মদতপুষ্ট বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছে আরিজ।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সেলে ইরাকে পরাজিত হয় ইসলামিক স্টেট। তবে হারলেও এখনও যথেষ্ট শক্তি ধরে সংগঠনটি। ‘খিলাফত’ বা বিশ্বজুড়ে মুসলিম সাম্রাজ্য গড়ে তোলার চেষ্টা করছে সংগঠনটি। ভারতেও ছড়াচ্ছে জেহাদের এই হলাহল।
প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, কাশ্মীরে জইশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তইবার মতো জঙ্গি সংগঠনগুলির জায়গা নিতে চাইছে আইএস (খোরাসন)। বাংলাদেশ হয়ে পশ্চিমবঙ্গে জামাত-উল-মুজাহিদিনের হাত ধরে ঢুকে পড়েছে সংগঠনটি। বিশ্লেষকদের সাফ কথা, আইএস শুধুমাত্র একটি সংগঠন নয়। এটি মতাদর্শ। যার উদ্দেশ্য গোটা বিশ্বে শরিয়ত আইন লাগু করে ‘খিলাফত’ প্রতিষ্ঠা করা। আর এর জন্য ভারতীয় মহাদেশে প্রস্তুতি শুরু করেছে সংগঠনটি।
সাউথ ব্লকের উদ্বেগ বাড়িয়ে বছর দুয়েক আগে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে রাষ্ট্রসংঘ। সেখানে বলা হয়, ভারতে জেহাদের বিষ ছড়াতে তৈরি কুখ্যাত আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট -খোরাসন (ISIL-K)। ভারত-সহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে নাশকতা চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে সংগঠনটির। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে সক্রিয় ইসলামিক জঙ্গি সংগঠন হাক্কানি নেটওয়ার্কগুলিও সক্রিয়।ইরাক ও সিরিয়ায় জমি খুইয়ে এখন অনেকটাই কোণঠাসা আইএস। তবে এখনও যথেষ্ট শক্তিশালী সংগঠনটি। তাদের হালকা ভাবে নেওয়া উচিত হবে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.