সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হত্যার সপ্তাহ খানেক বাদে শ্রদ্ধার (Shraddha Walkar) ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে মোটা টাকা হাতিয়ে নেয় আফতাব (Aftab Amin Poonawala)। এমনকী তরুণীর দু’টি মোবাইল ফোনও বিক্রি করে দেয় সে। এমন তথ্যই জানতে পেরেছে পুলিশ। অন্যদিকে শ্রদ্ধার দেহ করাত দিয়ে কাটায় দিল্লির (Delhi) তিনতলা ভাড়া বাড়ির ঘর ও বাথরুম রক্তে ভেসে যায়। ওই রক্ত ধোয়াতে গিয়ে অতিরিক্ত জলের প্রয়োজন ছিল। অনেক সময় ধরে কল খুলে রাখে অভিযুক্ত। এই কারণে মে মাসে অতিরিক্ত জলের বিল এসেছিল তিনতলার বাড়িটিতে। পুলিশি তদন্তে এমনও দাবি করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে তদন্তকারীদের হাতে মে মাসের জলের বিল এসেছে। নৃশংস অপরাধের প্রমাণ হিসেবে জলের বিলটিকে ব্যবহার করা যায় কিনা তা খতিয়ে দেখছেন পুলিশ আধিকারিকরা।
রাজধানীর ছতরপুরের ভাড়া বাড়ির তিনতলায় তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে। জলের বিল আসত একত্রে। মে মাসে জলের বিল এসেছিল অতিরিক্ত, অন্য আবাসিকরা যে বিল দেখে অবাক হন। কারণ দিল্লি সরকার ২০ হাজার লিটার পর্যন্ত জলের ব্যবহারে কোনও খরচ দিতে হয় না। সাধারণত জলখরচ বাবদ এক টাকাও দিতে হয় না আবাসিকদের। কিন্তু মে মাসের বিল দেখে চমকান সকলে। প্রতিবেশীদের দাবি, জলের বিল বাবদ ৩০০ টাকা দিতে হত আফতাবকে। যা সে দেয়নি। পুলিশের দাবি, দেহ টুকরো করে কাটায় রক্তে ভেসে গিয়েছিল ঘর। সেই রক্ত পরিষ্কার করার জন্য অতিরিক্ত জলখরচ করেছিল আফতাব। বাথরুম ধুতে কল খুলে রাখা হয় দীর্ঘ সময়।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে দাবি, জলের বিলকে শ্রদ্ধা হত্যা মামলায় একটি বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে কাজে লাগানো হতে পারে। উল্লেখ্য, আগেই আফতাবের ফ্ল্যাট থেকে রক্তের দাগ ও গ্লাভস খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। কিন্তু এখনও সেই অস্ত্রটি পাওয়া যায়নি, যার সাহায্যে শ্রদ্ধার শরীর টুকরো টুকরো করে কাটা হয়। এছাড়াও শ্রদ্ধাকে হত্যার পর তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে নিজের অ্যাকাউন্টে ৫৪ হাজার টাকা স্থানান্তর করেছিল আফতাব। ১৮ তারিখে হত্যার পর ২৬ তারিখে ব্যাংক ট্রান্সফার করে সে। যদিও শুরুতে পুলিশকে সে মিথ্যে বলেছিল, অনেকে দিন থেকে সে ও শ্রদ্ধা আলাদা থাকছিল, এমনটাই ছিল প্রাথমিক বয়ান। হত্যার কিছুদিন পর শ্রদ্ধার দু’টি ফোন অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করে দেয় আফতাব। আরও জানা গিয়েছে, শ্রদ্ধার পরিচয় লোকাতে তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করার পর কাটা মুন্ডুর মুখ পুড়িয়ে দিয়েছিলেন আফতাব। সূত্রেরর খবর, পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে আফতাব এমনটাই জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ১৮ মে দিল্লির মেহেরৌলিতে প্রেমিকা শ্রদ্ধা ওয়াকারকে খুন করে তাঁর প্রেমিক তথা লিভ-ইন সঙ্গী আফতাব আমিন পুনাওয়ালা। খুনের পর শ্রদ্ধার দেহ ৩৫টি টুকরো করে আফতাব। এরপর দিল্লি শহরের বিভিন্ন জায়গায় তা ফেলতে থাকে। আফতাবকে ভালবেসে পরিবার, চাকরি, শহর ছেড়ে দিল্লিতে চলে এসেছিল তরুণী। যদিও তাঁর পরিণতি হয় মর্মান্তিক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.