সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রিয়েল থেকে রিল লাইফ- গোটা দেশ চিনেছে ‘প্যাডম্যান’কে। মহিলা স্বাস্থ্য সচেতনতার মোড় ঘুরিয়ে দেশে স্যানিটারি ন্যাপকিন চালু করেছিলেন যে ব্যক্তি, তিনি এখন পর্দার নায়ক। তবে বাস্তবের বহু নায়ক এখনও আলোর বৃত্তের বাইরেই। যেমন সুরাটেই এই দম্পতি।বস্তিতে বস্তিতে টানা পাঁচ বছর ধরে বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিলি করে চলেছেন তাঁরা।
[ পার্বতীর মতো স্ত্রী চাই, দেওঘরে বৈদ্যনাথের মাথায় জল ঢেলে আরাধনায় পুরুষরা ]
মীনা মেহতাকে এখনও দেশের অনেকেই চেনেন না। না, তাঁকে নিয়ে কোনও ছবি হয়নি। ফলে তাঁর পরিচিতি সীমাবদ্ধ। তবে বস্তিবাসী কিছু মহিলার কাছে তিনি প্রায় ভগবানের মতোই। কেন? মাসের ‘ওই ক’টাদিন’, যে সময় মহিলাদের প্রায় অচ্ছ্যুৎ হয়ে থাকতে হয়, সে সময় উপশমের সামগ্রী নিয়ে হাজির হন তিনি। এক মাস, বা দু-মাস নয়, টানা পাঁচ বছর ধরে এ কাজ করে চলেছেন তিনি। তাঁকে সঙ্গ দিচ্ছে তাঁর স্বামী অতুল মেহতা। প্রতি মাসে দুঃস্থ মহিলাদের মধ্যে প্রায় হাজার পাঁচেক প্যাড বিলি করেন তিনি।
[ দেশের দরিদ্রতম মুখ্যমন্ত্রীদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ]
আচমকাই একদিন শুরু হয়েছিল এই কাজ। তবে তার নেপথ্যে একটি গল্প আছে। একদিন মীনা দেখেছিলেন, ডাস্টবিনের মধ্যে দুই কিশোরী আতিপাতি করে কিছু খুঁজছে। প্রশ্ন করে যা উত্তর পেয়েছিলেন তাতে শিউরে উঠেছিলেন তিনি। বস্তিবাসী ওই দুই কিশোরী খোঁজ করছিল ব্যবহৃত স্যানিটারি ন্যাপকিনের। যা উচ্চবিত্তের বাড়ি হয়ে জায়গা করে নেয় ডাস্টবিনে। ঋতুরক্ত মাখা সেই ন্যাপকিন নিয়ে ওরা কী করবে? মীনা জানতে পারেন, তাদের তো নিজেদের ন্যাপকিন কেনার ক্ষমতা নেই। তাই ওই ন্যাপকিনই ধুয়ে নিয়ে কাজ চালায়। এই দুরবস্থা মেনে নিতে পারেননি মীনা। সংকল্প করেন, যে কোনওভাবে ওই কিশোরীদের হাতে প্যাড তুলে দিতে হবে। এখনও প্যাড ব্যবহার নিয়ে দেশের বহু প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছুৎমার্গ আছে। কিন্তু এই কিশোরীরা তা কাটিয়ে উঠলেও প্রতিবন্ধকতা আর্থিক সামর্থ্য। ভাবনা শুরু হয় মীনার। তারপর থেকেই বস্তি ও দুঃস্থ মহিলাদের মধ্যে মাসে মাসে প্যাড বিলি করা শুরু করেন তিনি। ক্রমে সংখ্যা বেড়েছে। তাঁদের থেকে সহায়তা পেয়ে বহু মহিলাই প্যাড ব্যবহার করছেন। এখন প্রতি মাসে প্রায় হাজার পাঁচেক প্যাড বিলি করেন তাঁরা। মাস পড়লেই সুরাটের বিভিন্ন বস্তি পৌঁছে যান তাঁরা। হাতে হাতে তুলে দেন স্যানিটারি ন্যাপকিন। যে ন্যাপকিনের উপর সরকার জিএসটি ধার্য করেছে, তাইই বিনামূল্যে পাওয়া দুঃস্থ মহিলাদের কাছে প্রায় স্বপ্নের মতো।
I drew inspiration when I saw 2 poor girls collecting sanitary pads from the dustbin, when I asked them why, they said they collect them every month, wash & use them since can’t afford to buy the sanitary pads. I urge people to help such women. : Meena Mehta in Surat pic.twitter.com/RPeNgq6LR3
— ANI (@ANI) February 13, 2018
নারী স্বাস্থ্যের সচেতনতার বিষয়টি এখনও অনেকটাই অন্ধকারে। সিনেমা হোক আর যাই হোক, মনের অন্ধকারের দরুণই তা পিছনে পড়ে আছে। এমনকী বহু উচ্চবিত্ত শ্রেণির মধ্যেও ছুৎমার্গ বিদ্যমান। সেখানে দাঁড়িয়েই দুঃস্থদের পাশে দাঁড়িয়ে নারী স্বাস্থ্যে সম্পর্কে এই সচেতনতা ছড়ানোর উদ্যোগ কুর্নিশ আদায় করে নিয়েছে দেশবাসীর। না, ‘প্যাডম্যান’ হয়তো তাঁরা নন। তবে এই ‘প্যাড কাপল’ও যে মহিলাদের কাছে মসীহা তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
Gujarat: Surat’s ‘Pad couple’ Meena & Atul Mehta have been distributing about 5000 sanitary pads every month from the last five years to women who cannot afford to buy it. They distribute sanitary pads at slums, municipal schools and Anganwaadis. pic.twitter.com/draZ07VhGj
— ANI (@ANI) February 13, 2018
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.