সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিন তালাকের (Tin Talaq) মতো নয় তালাক-এ-হাসান (Talaq-e-Hasan) । এর অনুশীলন অতটাও ‘অনুচিত’ বা ‘বেঠিক’ নয়। কারণ, এক্ষেত্রে মহিলাদের কাছেও বিকল্প (খুলা) পথ খোলা রয়েছে। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে এমনই মত সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court)।
প্রসঙ্গত, তালাক-এ-হাসান মুসলিম দম্পতিদের মধ্যে বিচ্ছেদের একটি ধরন। এক্ষেত্রে স্বামী, তাঁর স্ত্রীকে প্রতি মাসে এক বার (মোট তিন মাস) ‘তালাক’ দিয়ে বিচ্ছেদের বৃত্ত সম্পূর্ণ করতে পারেন। অন্যদিকে স্ত্রীও বিচ্ছেদ ঘোষণা করতে পারেন ‘খুলা’ প্রথার মাধ্যমে। এক্ষেত্রে স্ত্রীকে ‘কাজি’র (আদালত) ফরমান মেনে বা স্বামীর সম্মতি-সাপেক্ষে বিয়ের সময় স্বামীর কাছ থেকে পাওয়া ‘মেহের’ ফিরিয়ে দিতে হয় (পরিস্থিতি সাপেক্ষে অবশ্য এরও ব্যতিক্রম রয়েছে)।
এই তালাক-এ-হাসান প্রথারই অনুশীলন বন্ধের আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সাংবাদিক বেনজির হিনা। তাঁর বক্তব্য ছিল– এই প্রথা ইসলাম এবং ভারতীয় সংবিধান, উভয়েরই বিরোধী। এই প্রথা মানবাধিকার লঙ্ঘন করার পাশাপাশি লিঙ্গ বৈষম্যকেও প্রশ্রয় দেয়। পিটিশনে এ-ও দাবি করা হয় যে, এই প্রথাটি স্বেচ্ছাচারী এবং সংবিধানের ১৪, ৫১, ২১ এবং ২৫ নম্বর অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন।
সেই আবেদনেরই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কিষান কৌলের পর্যবেক্ষণ– ‘‘প্রাথমিকভাবে খতিয়ে দেখতে হলে তালাক-এ-হাসান অতটাও বেঠিক প্রথা নয়। আমি চাই না, অকারণে এটা নিয়েও অ্যাজেন্ডা তৈরি করা হোক।’’ মামলার পরবর্তী শুনানি ২৯ আগস্ট।
যদিও আবেদনকারী বেনজির হিনার এই রায় পছন্দ হয়নি। তাঁর বক্তব্য, তিনি নিজেই তালাক-এ-হাসান পদ্ধতির বিচ্ছেদের শিকার হয়েছেন। দেশের সকল নাগরিকের জন্য বিবাহবিচ্ছেদের নিরপেক্ষ এবং অভিন্ন ভিত্তি তৈরির জন্য কেন্দ্রকে নির্দেশ দেওয়ার জন্যও আদালতে আবেদন জানিয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য, তালাক-ই-হাসানের ক্ষেত্রে তৃতীয় মাসে তালাক উচ্চারণের সময়ও যদি স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে থাকা না শুরু করেন, তাহলেই কেবল মাত্র তা পাকা বিবাহ বিচ্ছেদ হিসেবে গন্য হয়। কিন্তু, প্রথম বা দ্বিতীয় তালাক উচ্চারণের পর, যদি বর বউ ফের একসঙ্গে থাকা শুরু করেন, সেক্ষেত্রে বিচ্ছেদ হয় না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.