সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঘৃণাভাষণ ক্রমেই ভয়ংকর আকার ধারণ করছে। আর এর পিছনে টিভি চ্যানেলগুলির ভূমিকা নিন্দনীয়। বহু ক্ষেত্রেই সঞ্চালকরাই টিআরপি বাড়াতে সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলছে। শুক্রবার এক মামলায় এমনটাই জানাল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের মন্তব্য, ”আমরা চাই মুক্ত ভাষণ। এবং সেটা যে কোনও মূল্যে।”
দেশের শীর্ষ আদালতের মতে, ইদানীং সব কিছুই নির্ধারণ করে দিচ্ছে টিআরপি। চ্যানেলগুলি একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে সমাজে বিভেদ সৃষ্টি করছে। সেই সঙ্গে বিচারপতি কেএম জোসেফ ও বিভি নাগরত্নের বেঞ্চ বিস্ময় প্রকাশ করে জানিয়েছে, সঞ্চালকরা নিজেরাই ঘৃণা ভাষণ ছড়ানোর অন্যতম অংশ হয়ে উঠছেন।
দেশ জুড়ে ঘৃণাভাষণ (Hate Speech) ছড়ানো রুখতে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বহু পিটিশন জমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court)। সেই মামলাগুলিরই শুনানি ছিল এদিন। বিচারপতিরা বলেন, ”ঘৃণাভাষণ হয়ে উঠেছে ভয়ংকর বিপদের কারণ। এটা বন্ধ হতেই হবে।” আর এই প্রসঙ্গেই উঠে আসে ‘মিডিয়া ট্রায়ালে’র কথা। উদাহরণ হিসেবে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে বৃদ্ধার গায়ে প্রস্রাবের ঘটনার কথা বলা হয়। এপ্রসঙ্গে বিচারপতিদের বেঞ্চ জানিয়েছে, এখনও এই ঘটনায় অভিযুক্তের বিচার চলছে। এই অবস্থাতেই তাঁর নাম প্রকাশ করে দেওয়া হচ্ছে। তাঁকে অপমান করা হচ্ছে। সকলেরই যে আত্মসম্মান রয়েছে, সেকথা সংবাদমাধ্যম যেন মনে রাখে, তা মনে করিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের মতে, টিভি চ্যানেলগুলি সব কিছুকেই উত্তেজনাপূর্ণ করে তোলে। আর এর ফলে সামাজিক বিভেদ তৈরি হয়। বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ”সংবাদপত্রের চেয়েও দৃশ্যশ্রাব্য মাধ্যম আরও বেশি প্রভাবিত করতে পারে মানুষকে।” আর এই ধরনের এজেন্ডা তাঁরাই তৈরি করেন যাঁদের টাকা লগ্নি রয়েছে ওই চ্যানেলগুলিতে, জানাচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট।
এর থেকে সমাধানের উপায় কী, তা জানাতে গিয়ে বিচারপতিরা জানিয়েছেন, সঞ্চালকদের এই আপত্তিকর ভূমিকা আটকাতে জরিমানার পাশাপাশি তাঁদের সচেতন থাকতে হবে যা সম্প্রচারিত হচ্ছে তার দায়ও তাঁদেরই। শীর্ষ আদালতের মতে, বাকস্বাধীনতা কিংবা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার দাবির পাশাপাশি কর্তব্য সম্পর্কেও সচেতন থাকতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.