সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পতঞ্জলির (Patanjali) বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপনের মামলায় মঙ্গলবার বিস্তারিত হলফনামা দিয়ে যোগগুরু রামদেব (Remdev) জানান, ‘এই ভুলের পুনরাবৃত্তি হবে না।’ এর পর বুধবার কেন্দ্রের তরফে হলফনামায় বলা হয়, কোনও ব্যক্তি কী ধরনের চিকিৎসা গ্রহণ করবেন, অ্যালোপ্যাথি নাকি আয়ুষ তথা আয়ুর্বেদ সেটা তাঁর সিদ্ধান্ত। যদিও কেন্দ্রের এই বক্তব্যেও অসন্তুষ্টি প্রকাশ করল শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি রামদেব ও বালকৃষ্ণের হলফনামা খারিজ করে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) ভর্ৎসনা, ‘আমরা অন্ধ নই।
সুপ্রিম কোর্ট গত সপ্তাহেই কেন্দ্রীয় সরকারকে কড়া ভর্ৎসনা করেছিল। জানিয়েছিল, “আমরা বুঝতে পারছি না কেন সরকার তাদের চোখ বন্ধ রেখেছে।” এদিন কেন্দ্র তার জবাবে জানায, রাজ্যগুলিরও ক্ষমতা রয়েছে কোনও ‘দৈব ওষুধে’র বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার। তবে সেই সঙ্গেই কেন্দ্র জানিয়েছে, আইন মেনেই সময়মতো এই নিয়ে পদক্ষেপ করেছে তারা। পতঞ্জলি কোভিডের যে ওষুধ করোনিল তৈরি করেছিল, সে সম্পর্কে ওই সংস্থাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল আয়ুষ মন্ত্রক ওষুধটি যাচাই না করা পর্যন্ত তারা যেন সেটির বিজ্ঞাপন না করে। পরে একটি আন্তর্বিভাগীয় তদন্তশেষে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, করোনিল কেবল কোভিড-১৯-এর সহায়ক ওষুধ হিসেবেই বিবেচিত হতে পারে। সেই সঙ্গে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে কোভিড চিকিৎসার জন্য আয়ুষ-সম্পর্কিত দাবির বিজ্ঞাপনগুলি বন্ধ করতে বলা হয়েছিল। সেই সঙ্গেই কেন্দ্রের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোনও ব্যক্তি আয়ুষ না অ্যালোপ্যাথি, কী ধরনের চিকিৎসা গ্রহণ করবেন সেটা তাঁর নিজের সিদ্ধান্ত। সরকার চায় দুই ধরনের চিকিৎসা ব্যবস্থার সমন্বয়ে সামগ্রিক ভাবে নাগরিকদের স্বাস্থ্য পরিষেবা।
বুধবার বিচারপতি হেমা কোহলি এবং এ আমানুল্লাহর সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, কেন্দ্রের বক্তব্যে সন্তুষ্ট নয়। বিচারপতিরা বলেন, ‘এই ক্ষমাপ্রার্থনা কাগজে কলমে। আমরা গ্রহণ করছি না। বিষয়টিকে (বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন) ইচ্ছাকৃত ভাবে নিয়মের উলঙ্ঘন হিসেবে দেখছি।’ বিচারপতি কোহলি আরও জানান, রামদেব-বালাকৃষ্ণর হলফনামা প্রথমে মিডিয়াকে জাানানো হয় পরে শীর্ষ আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর থেকেই পরিষ্কার পতঞ্জলির প্রচার সর্বস্বতা। পাশাপাশি বুধবার উত্তরাখণ্ড সরকারকেও ধমক দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এদিন আদালত প্রশ্ন তোলে, যাবতীয় অভিযোগ পাওয়ার পরেও কেন উত্তরাখণ্ডের সংশ্লিষ্ট বিভাগ কেবল সতর্ক করে ছেড়ে দিল পতঞ্জলিকে?
বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন নিয়ে একাধিকবার সুপ্রিম কোর্টের তোপের মুখে পড়েছে পতঞ্জলি। গত নভেম্বর মাসে শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, ভুয়ো তথ্য দেওয়া বিজ্ঞাপন তৈরি করলে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানার মুখে পড়তে হবে। গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) হাজিরা দিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চান যোগগুরু রামদেব (Ramdev)। পরে বিস্তারিত হলফনামা দিয়ে জানান, এই ভুলের পুনরাবৃত্তি হবে না। যোগগুরু একা নন, পতঞ্জলির ম্যানেজিং ডিরেক্টর তথা রামদেবের সহযোগী আচার্য বালকৃষ্ণও শীর্ষ আদালতে হলফনামা দাখিল করে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.