সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাটনা হাইকোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েও বিশেষ লাভ হল না। বিহারে ৬৫ শতাংশ সংরক্ষণ আইন বাতিল করার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে গিয়েছিল নীতীশ সরকার। সোমবার সেই মামলার শুনানিতে হাই কোর্টের সিদ্ধান্তের উপর কোনও স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট। ফলে সংরক্ষণ আইন বাতিলের নির্দেশ কার্যকর থাকায় বিপাকে পড়লেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার।
জাতিগত জনগণনার (Caste Census) রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই বিহারে সংরক্ষণ পদ্ধতি আমূল বদলে ফেলেন নীতীশ কুমার (Nitish Kumar)। তফসিলি জাতি এবং উপজাতি, অনগ্রসর জাতি এবং অতি অনগ্রসর জাতির জন্য ৬৫ শতাংশ সংরক্ষণের প্রস্তাব করেন তিনি। সেই প্রস্তাব বিধানসভায় পাশও হয়ে যায়। যা ১৯৯২ সালে সুপ্রিম কোর্টের বেঁধে দেওয়া ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের সীমা লঙ্ঘন করে। নীতীশ সরকারের দাবি ছিল, আর্থ-সামাজিক বৈষম্য থেকে রক্ষা করতে সরকারি চাকরি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষণের পরিমাণ ১৫ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পাটনা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছিল জনস্বার্থ মামলা। এই সংরক্ষণকে বেআইনি বলে মন্তব্য করে গত ২০ জুন পাটনা হাইকোর্ট ওই আইন বাতিলের নির্দেশ দেয়।
গত মাসে এই মামলার রায়ে পাটনা হাই কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, এই সংরক্ষণ শীর্ষ আদালতের বেঁধে দেওয়া সীমা লঙ্ঘন করেছে। ফলে এটি শুধু সংবিধান বিরুদ্ধ নয়, সকলের জন্য সমানাধিকারের পরিপন্থী। এ প্রসঙ্গে ইন্দ্র সাহানি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের বেঁধে দেওয়া ৫০ শতাংশের নির্দেশিকার কথাও উল্লেখ করেছিল হাই কোর্ট। জানানো হয়, কোনও অবস্থাতেই ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের সীমা লঙ্ঘন করতে পারে না রাজ্য। হাই কোর্টের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে এর পর সুপ্রিম কোর্টে যায় বিহার সরকার। তবে উচ্চ আদালতের নির্দেশের উপর এখনই কোনও স্থগিতাদেশ দিল না শীর্ষ আদালত।
বলার অপেক্ষা রাখে না আদালতের এই সিদ্ধান্তে যথেষ্ট বিপাকে পড়তে চলেছেন নীতীশ কুমার। সংরক্ষণের ওই নীতি কার্যকরের সময় নীতীশ ছিলেন আরজেডি-র নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিক। সংরক্ষণ বৃদ্ধির সিদ্ধান্তে লালুপ্রসাদের দলেরও সমান যোগদান ছিল। নয়া সংরক্ষণ কার্যকরের পর শিবির বদলে ফের বিজেপির হাত ধরেন জেডিইউ নেতা। বিশ্লেষকদের বক্তব্য, ‘পাল্টুরাম’ নীতীশের সংরক্ষণ নীতি লোকসভায় দলের ভালো ফলের অন্যতম কারণ। তবে আগামী বছর বিহারে বিধানসভা নির্বাচন তার আগে সংরক্ষণের উপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা জেডিইউর ভোট ব্যাঙ্কে প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.