ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বরখাস্ত হওয়া শিক্ষানবিশ আমলা পূজা খেদকারকে ইউপিএসসি জালিয়াতি মামলায় স্বস্তি দিল শীর্ষ আদালত। বুধবার এই সংক্রান্ত মামলায় আদালতের তরফে জানানো হয়েছে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা যাবে না পূজাকে। পাশাপাশি তাঁর জামিনের আবেদনের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার ও ইউপিএসসি কমিটিকে নোটিস পাঠানো হয়েছে।
২০২৩ সালের ব্যাচের শিক্ষানবিশ আমলা পূজা মহারাষ্ট্রের পুণেতে অ্যাসিসট্যান্ট কালেক্টর হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে ইউপিএসসি পরীক্ষায় পাশ করতেও বহু নিয়ম বহির্ভূত কাজ করেছেন তিনি। নির্ধারিত সীমার বেশিবার পরীক্ষা দিতে নাম, পরিচয় ও বয়স ভাঁড়ানোর অভিযোগ উঠেছিল পূজার বিরুদ্ধে। নিয়ম অনুযায়ী ইউপিএসসিতে জেনারেল ক্যাটাগরির প্রার্থী ৩২ বছর বয়সের মধ্যে ৬ বার পরীক্ষা দিতে পারেন। আবার ওবিসি প্রার্থীরা ৩৫ বছরের মধ্যে ৯ বার পরীক্ষায় বসতে পারেন। সূত্রের দাবি, পূজা মোট ১১ বার ইউপিএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, নিজেকে প্রতিবন্ধী কোটার সুবিধা নিয়ে ভুয়ো সার্টিফিকেট দাখিল করেছিলেন বলেও অভিযোগ ওঠে। একের পর এক অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক তদন্তের পর তাঁকে চাকরি থেকে বহিষ্কার করে ইউপিএসসি কমিটি। অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে দিল্লি পুলিশ।
তবে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ শুরু থেকেই অস্বীকার করে এসেছেন পূজা। এবং গ্রেপ্তারি থেকে বাঁচতে দিল্লি হাই কোর্টে আগাম জামিনের আবেদন জানান। গত বছরের ১২ আগস্ট হাই কোর্ট তাঁকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিলেও, ২৩ ডিসেম্বর সেই জামিন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। গ্রেপ্তারির আশঙ্কার এরপর শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন বহিষ্কৃত শিক্ষানবিশ আমলা। বুধবার এই মামলার শুনানিতে পূজা জানান, সে সব অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে সেই সংক্রান্ত যাবতীয় নথি ইউপিএসসি কর্তৃপক্ষের কাছে জমা রয়েছে। ফলে তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের কোনও প্রয়োজন নেই। এবং পূর্বে যেহেতু তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অপরাধের রেকর্ড নেই তাই অবিবাহিত, বিশেষভাবে সক্ষম মহিলাকে রেহাই দেওয়া হোক। পূজার এই আবেদন মঞ্জুর করে পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত তাঁর গ্রেপ্তারিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে আদালত। পাশাপাশি জামিন সংক্রান্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে কেন্দ্র ও ইউপিএসসির মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ব্যাচের শিক্ষানবিশ আমলা পূজা মহারাষ্ট্রের পুণেতে অ্যাসিসট্যান্ট কালেক্টর হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। তবে চাকরিতে যোগের পরই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, প্রবেশনারি আইএএস (IAS) অফিসারদের যে সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা নয়, তাও নিচ্ছিলেন তিনি। নিজের অডি গাড়িতে লালবাতি এবং মহারাষ্ট্র সরকারের বোর্ড লাগিয়ে ঘুরতেন। যদিও সেই অনুমতি নেই প্রবেশনারি আইএএস অফিসারদের। চাকরিতে যোগ দিয়েই ক্ষমতার অপব্যবহারের পাশাপাশি পূজার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে অ্যাডিশনাল কালেক্টর অজয় মোরের অনুমোদন ছাড়াই তাঁর অফিসের আসবাবপত্র সরিয়ে ফেলে অফিসের একাংশ দখলের। পাশাপাশি রেভিনিউ অ্যাসিসট্যান্টকে পূজা নির্দেশ দেন, লেটারহেড দিতে হবে তাঁকে। ঘরের বাইরে রাখতে হবে নেমপ্লেট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.